দলিত সম্প্রদায়ের প্রান্তিকতা এবং করোনায় নীলফামারীতে সুইপার সম্প্রদায়ের পথচলা

     
মো.শীষ রহমান-


                                       ‘‘ আসবার কালে কি জাত ছিলে 
                                            এসে তুমি কি জাত নিলে
                                            কি জাত হবে যাবার কালে
                                            সে কথা ভেবে বলো না.......” 

কথাগুলো বলেছেন বাউল সাধক  লালন শাহ্। লালনের এ কথাগুলোর উপযোগিতা এখনো প্রতীয়মান আমাদের দেশের দলিত সম্প্রদায়ের জীবিকায়নের সামাজিকতায়। আন্তর্জাতিক পরিসরে পন্ডিতদের কাছে মূলত দলিত সম্প্রদায় জন্ম ও পেশাগত কারণে বৈষম্য এবং বঞ্চনার শিকার মানুষেরা ‘দলিত’ নামে পরিচিত। 
        মানবিক সভ্যতার ধারাপাতে যখন মানুষকে সর্বচ্চো গুরুত্ব দিয়ে আমরা ভূপেন হাজারিকা’র মতো বলছি ‘‘মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য........” সেখানে বাংলাদেশের অনেক জায়গার মতো নীলফামারীতেও  দলিতরা সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, তাদের মধ্যে সুইপার/মেথর সহ অনেককেরই বিভিন্ন খাবার হোটেল, ধর্মীয় উপাসনালয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রবেশাধিকার নেই।
         নীলফামারী জেলাতে প্রায় ১৫ হাজার সুইপার/মেথর সহ বিভিন্ন সমম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। রবিঠাকুর মেথর শব্দটিকে শুদ্ধাচার করে লিখেছিলেন ‘‘ওরা মেথর নয় ওরা হরিজন’’। হরি মানে ‘ভগবান’ আর জন মানে ‘মানুষ’। মহাত্না গান্ধীও সুইপার, মেথর না বলে ‘হরিজন’ বলার আমোঘ বাণী দিয়ে গিয়েছিলেন । এসব বাণীর ফলাফলে মেথর পল্লীর নামকরণ হয়েছে হরিজন পল্লী। নীলফা মারী জেলার হরিজন পল্লী গুলোতে দলিত হরিজনরা যেন অস্পৃশ্য, আমরা সেখানে যাইনা!যখন আমাদের মল-মুত্র পরিস্কারের প্রয়োজন হয় তখন তাঁদের খোঁজ করি! বেশিরভাগ হরিজন পল্লী গুলো খাস জমিতে, রেল কলোনীতে গড়ে ওঠেছে। হরিজন পল্লীর অনেকেই নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ফলে তারা সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে মিশতে পারেনি। 
        আমাদের দেশে বাঙালি ও অবাঙালি নামে দুই ধরণের দলিত জনগোষ্ঠি রয়েছে। বাঙালি দলিত বলতে সামাজে যারা অস্পৃশ্য তাদের বুঝায়, যেমন- চর্মকার, মালাকার, কামার, কুমার, জেলে, পাটনী, কায়পুত্র,কৈবর্ত, কলু,কোল, কাহার, ক্ষৌর কার, নিকারী, পাত্র, বাউলিয়া, ভগবানীয়া, মানতা,মালো, মৌয়াল, মাহাতো, রজদাস, রাজবংশী, রানা কর্মকার, রায়, শব্দকর, শবর, সন্নাসী, কর্তাভজা, হাজরা প্রভৃতি সম্প্রদায় সমাজে অস্পৃশ্যতার শিকার। এসব সম্প্রদায় আবার বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত হয়েছে।
        অবাঙালি দলিত বলতে মূলত ব্রিটিশ শাসনামলের মাঝামাঝি (১৮৩৮-১৮৫০) বিভিন্ন সময়ে পূর্ববঙ্গে পরিস্কার-পরিছন্নতা কর্র্র্র্মী, চা-বাগানের শ্রমিক (১৮৫৩-১৮ ৫৪), জঙ্গল কাটা, পয়ঃনিস্কাশন প্রভৃতি কাজের জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশ, অন্ধপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, উরিষ্যা, কুচবিহার, রাচি, মাদ্রাজ, ও আসাম থেকে হিন্দি, উরিষ্যা, দেশওয়ালী ও তেলেগু ভাষাভাষী মানুষের পূর্ব-পুরুষদের নিয়ে এসেছিল আমাদের দেশে। অভাবি এই অভিবাসীরা দেশের সর্বত্র পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং সিলেটে চা-শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো- হেলা, মুচি, ডোম, বাল্মিকী, রবিদাস, ডোমার, ডালু, মালা, মাগিদা, চাকালি, সাচ্চারি, কাপুল, নায়েক, নুনিয়া, পরাধন, পাহান, বাউরি , বীন, বোনাজ, বাঁশফোর, ভুঁইয়া, ভূমিজ, লালবেগী, জনগোষ্ঠী। এসব জনগোষ্ঠী তেলেগু, ভোজপুরী, জোবালপুরী, হিন্দি, সাচ্চারী ও দেশওয়ালী ভাষায় কথা বলে। এই সম্প্রদায় গুলিই মূলত অবাঙ্গালি দলিত শ্রেণী। বাঙালি ও অবাঙালি দলিত’রা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করলেও যশোর,সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, জয়পুরহাট, মানিকগঞ্জ, খুলনা, গোপাল গঞ্জ, গাজীপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী,রংপুর,লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া, ঝিনাই দহ, সিলেট ও মৌলভীবাজার  প্রভৃতি এলাকায় এদের বসতি চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশে বসবাসরত দলিতদের সংখ্যা ৩.৫ মিলিয়ন। আইন কমিশন প্রস্তাবিত বৈষম্য বিলোপ আইনের খসড়ায় এসংখ্যা ৭০লাখ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ ব্যাপক জন গোষ্ঠীর অনেকেই সমাজে নানাভাবে নিগৃহীত হচ্ছে এবং তারা শিক্ষা,স্বাস্থ্য, বাসস্থান প্রভৃতি মৌলিক চাহিদা গুলো থেকেও বঞ্চিত। যদিও আমাদের দেশের সংবিধানে বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘বৈষম্য বিলোপ আইন-২০১৫’ (খসড়া)তে এই আইনকে ‘বৈষম্য বিলোপ আইন,২০১৬ নামে অভিহিত করা হয়েছে। ‘বৈষম্য বিলোপ আইন-২০১৫’ (খসড়া) এর মধ্যে বৈষম্যকে সংজ্ঞায়িতকরণ করা হয়েছে এবং বৈষম্যকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  প্রস্তাবিত এই আইন মোতাবেক ‘‘ ‘বৈষম্য’ অর্থ কোন ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীকে ধর্ম, বিশ^াস, গোষ্ঠী, বর্ণ, গোত্র, সম্প্রদায়, প্রথা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনুষ্ঠানিকতা , বংশানুক্রমিক বা বর্তমান পেশা, জাতি বা নৃতাত্বিক উৎস, লিঙ্গ (নারী, পুরুষ ও তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া), যৌন প্রবৃত্তি, বয়স, প্রতিবন্ধীতা, গর্ভাবাস্থা,মাতৃত্ব,বৈবাহিক অবস্থা,জন্মস্থান বা অন্যকোন কারণে- যে কোন পার্থক্য, বঞ্চনা, বিধি নিষেধ আরোপ করা হয় যার ফলে সমতার ভিত্তিতে মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা নাগরিক জীবনের অন্য যে কোন মৌলিক স্বাধীনতার স্বীকৃতি ভোগ অথবা চর্চার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা ক্ষতির উদ্ভব হয়। আবার যখন কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যের কারণে একই রকম পরিস্থিতিতে অন্য কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি থেকে ভিন্নতর আচরণের শিকার হয় তখন তাকে প্রত্যক্ষ বৈষম্য বলে চিহ্নিত হবে। যখন কারও কাজ, আচরণ, চাহিদা বা আরোপিত শর্ত আপত দৃষ্টিতে নিরপেক্ষ মনে হলেও কোন গোষ্টির প্রতি ভিন্ন আচরণ প্রকাশ করে তখন তাকে পরোক্ষ বলে চিহ্নিত হবে।” তবে এ উভয় প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বৈষম্য এর শিকার আমাদের দেশের প্রান্তিক জনগণ বিশেষ করে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ গুলো। বৈষম্যমূলক আচরণ ও বৈষম্যমূলক কথা বার্তা সামাজে অসাম্যের জন্ম দেয়, সুতরাং জাত-পাত ও পেশাভিত্তিক বৈষম্য প্রতি রোধ এবং সকল প্রকার বৈষম্যে শাস্তির বিধান রেখে এবং শিক্ষা, সামাজিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়  নীতি নির্ধারনী মহলের উচিৎ প্রস্তাবিত ‘বৈষম্য বিলোপ আইন’ কে পাশ করে প্রয়োগ যোগ্য  করা । 
        সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারীতে দলিত সম্প্রদায়ের অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সুইপার সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষ সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে। এদের নিজস্ব কোন জমি না থাকায় এরা একই ঘরে পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে। অনেকে আবার একই ঘরে পর্যায়ক্রমে ঘুমায় কেউ দিনে কেউ রাতে।দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে কোভিড -১৯ ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট যে ভয়াবহ স্বাস্থ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ফলে করোনা ভাইরাসের মোকাবেলায় যে সামাজিক দুরত্ব বা শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে তা তাদের পক্ষে মানা সম্ভব হচ্ছে না।বিভিন্ন তথ্য সূত্র থেকে জানা যায় নীলফামারী সদর সহ বিভিন্ন উপজেলায় শুধুমাত্র সুইপার সম্প্রদায়ের সদস্য সংখ্যা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ৮০০টি পরিবারের দুই হাজার জন আর সকল সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার এর অধিক।নীলফামারী সদরের সরকার পাড়ার মুন্না বাসফোর(৫০) জানায় আমরা সমাজের অনেক নিঁচু কাজ করি বলে অনেকে আমাদের পছন্দ করে না। আমার পূর্বপুরুষরাও এই পেশায় ছিল তাই আমিও এটি দিয়ে আমার পরিবারের সদস্যের নিয়ে জীবন জীবিকা চালাই। কিন্ত বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে হাতে কাজ নেই,মানুষ বাসাবাড়িতে প্রবেশ করতে দেয় না।ফলে আয় রোজগারের পথ বন্ধ হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি। থানা পাড়া এলাকার নয়না রাণী(৪০) জানায় আমাদের খুব খারাপ দিনকাল যাচ্ছে।আমরা দিন এনে দিন খাই। কিছু মানুষ ত্রাণ দিয়েছিল তা শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন পরিবার নিয়ে কিভাবে চলব বুঝে উঠতে পারছিনা।বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ,নীলফামারী শাখার সভাপতি মেঘুরাম বাসফোর বলেন আমরা এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছি। সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে সামান্য কিছু সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছিলাম কিন্তু তা দিয়ে কতদিন চলা সম্ভব।দলিতদের নিয়ে কাজ করে নীলফামারী জেলা অ্যাড ভোকেসি প্লাটফর্ম সভাপতি এ্যাড রমেন্দ্র নাথ বর্দ্ধণ বাপি বলেন আমরা আমাদের সংগঠন থেকে তাদের কিছু ত্রাণ দিয়েছি। তাদের সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষ এবং সামাজিক সংগঠন গুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানাই।  
       আমরা জানি দলিতদের অধিকার সুরক্ষায় বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর ; সরকারের এ উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে আমাদের সকলকে সমবেত ভাবে এগিতে আসতে হবে । নেটওয়ার্ক অফ নন-মেইস্ট্রিমড্ মারজিনালাইজড্ কমিউনিটিজ (এনএনএমসি) ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ,বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সহ অনেক প্রতিষ্ঠান/সমমনা সংগঠন দলিতদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় নীলফামারীতে অধিপরামর্শ মূলক কাজ করছে। এসব অধিপরামর্শ দলিতদের অধিকার সচেতন করলেও দলিত সম্প্রদায়ের জন্য জাতীয় দলিত কমিশন গঠন, দলিত ও হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য খাসজমি বন্দোবস্ত করা, দলিত জনগোষ্ঠীকে বিকল্প পেশায় তথা কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো, সকল দলিত জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা, সরকারি চাকরি ও দেশের সকল পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ে দলিতদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করা, দলিতদের জন্য স্কীলফুল প্রকল্প চালু করা, হরিজন পল্লীর অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ প্রদান করা, দলিত শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম রোধ করে তাদের বিদ্যালয় মুখী করা এবং বৈষম্য বিলোপ সেল গঠন  প্রভৃতি নানাবিধ সরকারি সুযোগ-সুবিধা  দলিতদের প্রদান করা দরকার।
            বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সদনসমূহ অনুসমর্থন ও স্বাক্ষর করেছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করা। আগামীতে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চলেছি! দেশ ইতিমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেতে শুরু করেছে।  আমাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় এখন ১৬১০ মার্কিন ডলার এবং মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ । সুতরাং কাউকে পেছনে ফেলে নয়- সকলকে সাথে নিয়ে আমাদের গাইতে হবে ‘‘ আমরা করবো জয়! আমরা করবো জয়! আমরা করবো জয়! একদিন........."। তাই আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও তরান্বিত করতে  হলে সকল মতভেদ ভুলে দলিত সম্প্রদায়ের নাগরিক সম্পৃক্ততাকে  বাড়াতে হবে এবং সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ কল্পে আমাদের দলিত জনগোষ্টী’র সামাজিক ক্ষমতায়ন করতে হবে। আমাদের সাম্য-মৈত্রী’র সারকাথা হোক ‘‘ চলো হাত বাড়াই, মানুষের পাশে দাঁড়াই”।


মো.শীষ রহমান,
সম্পাদক ও প্রকাশক 
দৈনিক নীলফামারী বার্তা

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7214891206917020756

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item