আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম আর নেই


অনলাইন ডেস্ক


 
টানা ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে চির বিদায় নিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ শনিবার (১৩ জুন) বেলা ১১ টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

 আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়ের কাছে এই খবর পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের সিইও আল ইমরান বলেন, সকাল ১১টা ১০ মিনিতে তিনি (নাসিম) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
বিপ্লব বড়ুয়া জানান, শনিবারই বনানী কবরস্থানে নাসিমের দাফনের প্রস্তুতি চলছে বলে তার ছেলে তানভীর জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নাসিম ভাইয়ের মৃত্যুর পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনার ছেলে তানভীর শাকিল জয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। আজকে বনানীর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নাসিমের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও শোক জানিয়েছেন বলে বিপ্লব বড়ুয়া জানান।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা হলে ফলাফল পজিটিভ আসে। তবে সম্প্রতি মোহাম্মদ নাসিমের পরপর তিনটি করোনা টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৫ জুন ভোরে তার স্ট্রোক হয়। সেদিনই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রাজিউল হকের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার হয়। এর আগেও তার একবার স্ট্রোক হয়েছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও অবস্থার অবনতি হওয়ায় এগোয়নি পরিবার। লাইফ সাপোর্টে রেখেই চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।
নাসিমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এম মনসুর আলী ও মা মোসাম্মৎ আমেনা মনসুরের ঘরে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মনসুর আলী স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন।
গত শতকের ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী নাসিম স্বাধীনতার পর ১৯৯৩ সালে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর কারাগারে মনসুর আলীকেও হত্যা করা হলে আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন নাসিম। তখন কারাগারেও যেতে হয়েছিল তাকে। ১৯৮৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসিম। তখন সংসদে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপের দায়িত্বও পান তিনি। তখন তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১, ২০১৪, ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান নাসিম। পরের বছর মার্চে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নাসিম এক সঙ্গে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৯ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। পরে মন্ত্রিসভায় রদবদলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলেও সেবার মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়নি নাসিমের। তবে পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা। রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন নাসিম। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 2658414652371721130

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item