ভালোবাসা ও আস্থার প্রতীক সমাজ সেবক-লোকমান হেকিম
https://www.obolokon24.com/2020/06/blog-post_56.html
মানুষ সামাজিক জীব হয়েও একেক মানুষ হয় একেক রকম। সংঘবদ্ধ হয়ে বসবাস করেও ভুলে যান নিচুতলার মানুষগুলোকে। পাশের বাড়ির একজন অসহায় মানুষ কী খেলো কী খেলো না তার দিকে নজর নেই তেমন কারোরই। সমাজ নিয়ে কাজ করা আর সমাজের মানুষকে মূল্যায়ন করার মতো ভালো মানুষের এখন বড়ই অভাব। এখন শুধু মানুষ তার নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য যেকোনো খারাপ কাজ করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। স্বজনপ্রীতি আর দুর্নীতির বেরাজালে আবদ্ধ অনেকেই। নিজের খেয়ে বনের মেষ তাড়ানোর মানুষ এখন সমাজে তেমন আর চোখে পড়ে না। তবে ভালো মানুষ যে সমাজে নেই, তা বললে নেহায়েত অন্যায় হয়ে যাবে। এখনও অনেক ভালো মানুষ রয়েছে আমাদের আশেপাশে। আর ভালো মানুষের উপ আছে বলেই পৃথিবীটা এখনও এত সুন্দর। এমন ভালো মানুষ দেশের আনাচে কানাচে অনেক রয়েছে। যা আমার অনেকেই জানি না বা চিনি না। আমরা শুধু দেখি কে রাজনীতির বড় বড় পদে আছেন? আমরা চিনি তাদেরকেই। কিন্তু সমাজে রাজনীতির আঁড়ালে থেকেও অনেক লোক আছেন যারা সমাজের জন্য দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নিঃস্বার্থভাবে। এমনই একজন সাদা মনের মানুষ লোকমান হেকিম। সদা হাস্যোজ্জ্বল এই মানুষটি সমাজ ও দেশের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন সর্বত্র। ক্রিড়া, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, শিক্ষা থেকে শুরু করে সকল প্রকার ভালো কাজে তার অংশগ্রহণ ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে নিজ এলাকাসহ সর্বত্রই।
মো. লোকমান হেকিম ১৯৮৪ সালের ১৩ জুলাই কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার তেলিয়ানীর পাড় এলাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম মজিবর রহমান ছিলেন একজন সৎ ও আদর্শবান ব্যাক্তি। তার আদর্শেই ছোট বেলা থেকেই তিনি বেশ দানশীল ও মিশুক প্রকৃতির। গ্রামের ধুলোবালিতে বড় হওয়া এই ব্যাক্তি পড়াশোনার ফাঁকেই ২০০২ সালে পাড়ি জমান ঢাকার উদ্দেশ্যে। সেখানে নারায়ণগঞ্জের তিতুমীর কলেজ থেকে ২০০৫ সালে এসএসসি পাস করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে চাকরি করেন দেশ-বিদেশ কোম্পানি লি. এ। কাজের ফাঁকেই সামাজিক কর্মকান্ডগুলোতে সম্পৃক্ত থাকেন তিনি। ক্লান্তিহীন পথ চলেন সামনে এগিয়ে যেতে। পরে ২০০৪ সালে চাকুরি শুরু করেন টিকে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি লি.এ। ওই কোম্পানিতে এখন ওয়ারহাউজ ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কাজের মাধ্যমে বেশ আনন্দ পান তিনি। সেখানে যে বেতন পান সে বেতনেই সংসার চালান এবং সমাজের অন্যান্য কাজে অংশ নেন। বহু মসজিদ মাদরাসায় দান করেন। অনুদান প্রদান করেন সকল ভালো কাজের সামাজিক সংগঠনগুলোতেও। স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, সংগঠন, ওয়াজ মাহফিল, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিকসহ যেকোনো আচার অনুষ্ঠানে তার অনুদানের হাত সবসময় খোলা থাকে।
বর্তমান বৈশ্বি করোনা মহামারীতেও দেখা গেছে তাঁর সরব উপস্থিতি । লকডাউনে ঘরবন্দি ও কর্মহীন মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার পৌছে দিয়েছেন নিজস্ব অর্থায়নেই। কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী, ভ‚রুঙ্গামারী, কচাকাটা, ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ চরাঞ্চলগুলোতেও পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য সহায়তা। দিয়েছেন চাল, ডাল, তেল, লবণ, আলু, সাবানসহ অন্যান্য খাদ্র ও পণ্যসামগ্রী। এছাড়াও ঢাকায় বিতরণ করেছেন ২০০০মাস্ক। এভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নগদ অর্থ প্রদানসহ প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
এভাবেই একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবেও ইতোমধ্যে নিজ এলাকাসহ সারাদেশে বেশ পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে “বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সোসাইটি” তাকে এনে দিয়েছে এক ধাপ উপরে ওঠার প্রেরণা। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সোসাইটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে সামাজিক সকল প্রকার কাজ করছেন নিঃস্বার্থভাবে। এই সংগঠেনের মাধ্যমেই সামাজিক নানা কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এছাড়াও তিনি স্থানীয় মসজিদ মাদরাসার সভাপতির দায়িত্বও পালনসহ বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ভালো কাজের মাধ্যমে সাংগঠনিক এই পথচলা তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে উচ্চ শিখরে। তাই ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন গরিব দুঃখীর মাঝেও।
মো. লোকমান হেকিম জানান সমাজের জন্য আর দেশের গরিব দুঃখীর জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগে তার। ধ্বনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই তার কাছে। আল্লাহর সৃষ্টি মানুষ পৃথিবীতে সবাই সমান। এটাই তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন এবং ধারণ করেন নিজের মাঝে। মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে আত্মতৃপ্তিবোধ করেন তিনি। সে চিন্তা চেতনা থেকেই সকলের আস্থাভাজন হয়ে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকাই তার ইচ্ছে।