সৈয়দপুরে দারিদ্র্যকে হারিয়ে জিতেছে সাজ্জাদ


তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 দারিদ্র্য যে মেধাকে দমিয়ে রাখতে পারে না, তা আবার প্রমাণ করেছে মেধাবী শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসাইন। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। সৈয়দপুর উপজেলার লক্ষণপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে সে। কিন্তু এসএসসি ভালো ফলাফল করলেও অর্থের অভাবে সাজ্জাদের কলেজের ভর্তি নিয়ে চরম শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
 সাজ্জাদ হোসাইনের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষণপুর বালাপাড়ার গুড়াতিপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা মো. মোকছেদ আলী এবং মা আয়েশা সিদ্দিকা। চার বোন আর এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট সে। বোনদের সকলেই বিয়ে হয়েছে। তাদের যে যৎসামান্য জায়গা জমি ছিল, বোনদের বিয়ে দিতে গিয়ে তার সবটুকু শেষ হয়ে গেছে। এখন রয়েছে শুধুমাত্র এক টুকরা ভিটেমাটি। সেখানেই কোন রকমে ঝুঁপড়িঘর করে বসবাস করছে বাবা-মাসহ সাজ্জাদরা। তাঁর বাবা বাড়ির অদ‚রে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়েনর চৌমুহনীবাজারে একটি মাংস বিক্রেতার দোকানে সহযোগি হিসেবে কাজ করেন। সেখানও কাজ হয় না প্রতিদিন। তার ওপর আবার তাঁর বাবা মোকছেদ আলী প্রেসারের রোগী। মাঝে মধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে প্রতিদিন যেতে পারেন না কাজে। তাই কাজ হলে মজুরী হিসেবে দৈনিক যা পান তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারটি। ফলে প্রায় দিনই দুই বেলা খাবার জোটে না তাদের। পরিবারের শত অভাব-অনটনের মধ্যে মেধাবী সাজ্জাদ হোসাইল লেখাপড়া করছে। বাড়ির পাশের বাড়াইশালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সমাপণীতে উত্তীর্ণ হয় অদম্য মেধাবী সাজ্জাদ। সে পঞ্চম শ্রেণীতে সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিও পেয়েছিল। পরিবারের শত শত বাধা পেরিয়ে এবারে লক্ষণপুর সকুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তবে তাঁর আরো ভালো ফলাফলের আশা ছিল। কিন্তু ইংরেজি বিষয়ে এ প্লাস না পাওয়ায় তাঁর গোল্ডেন জিপিএ-৫ আসেনি। ভবিষ্যতে একজন আদর্শবান শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে সাজ্জাদের। কিন্তু আদৌ কি তাঁর সেই ইচ্ছে প‚রণ হবে ? কারণ এতো দিন অনেক দুঃখ কষ্ট সহ্য করে খেয়ে না খেয়ে লেখাপড়া করেছে সে। এখন কলেজে ভর্তি হতে তাঁর অনেক টাকা পয়সা দরকার। কলেজের জন্য তাকে কিনতে হবে দামি বইপুস্তুক। কিন্তু দরিদ্র বাবা মোকছেদ আলীর সে সামর্থ্য নেই। তাই মেধাবী সাজ্জাদ এসএসসিতে ভালো ফল করেও তাঁর কলেজে ভর্তি নিয়ে চরম শঙ্কায় দিন কাটছে।
লক্ষণপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেজাউল করিম রেজা বলেন, সাজ্জাদ হোসাইন অত্যন্ত মেধাবী। তাঁর প্রতি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-শিক্ষিকার বিশেষ নজর ছিল। প্রতিষ্ঠান থেকে সাধ্যমতো সহায়তা দেওয়ার ছেষ্টা করেছি আমরা। আগামী সমাজের বিত্তশালীদের সহায়তা পেলে সে আরো ভাল করবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 2671980734505572447

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item