উত্তরা ইপিজেডের কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেছে সন্ত্রাসীরা॥ মালিকপক্ষ
https://www.obolokon24.com/2020/06/Epz.html
বিশেষ প্রতিনিধি॥ নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক বিক্ষোভের আড়ালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল রবিবার(২৮ জুন/২০২০) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন পরচুলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এভারগ্রীণ প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরি বিডি লিমিটেডে চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ফিলিক্স ওয়াই সি চ্যাঙ।
তিনি দাবি করে বলেন, গত শনিবার(২৭ জুন/২০২০) কার্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম শুরুর আগেই সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের আন্দোলনকে পুঁজি করে কারখানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সিসি ক্যামেরা ও ক¤িপউটার ধ্বংস করে ভোল্টে রাখা ৯০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। যারা এ কাজটি করেছেন তারা কেউ শ্রমিক না। ওই সময় শ্রমিকরা হামলা করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর। হামলার শিকার কর্মকর্তা কর্মচারীরা সকল শ্রমিকদের চেনেন। কিন্তু যারা লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগে জড়িত ছিলেন তারা সকলেই অপরিচিত ছিলেন বলে জানিয়েছে হামলার শিকার কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
ক্ষতির পরিমাণ স¤র্পকে এভারগ্রীণ কোম্পানির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ফিলিক্স ওয়াই সি চ্যাঙ বলেন, নগদ ৯০ লাখ টাকা লুট হয়েছে। আগুনে পুড়ে গেছে দুটি কাভার্টভ্যান, ১০টি মোটরসাইকেল ও ৫০ টি বাইসাইকেলসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। নষ্ট করেছে ৫টি ফর্ক লিস্টার, ৪৫০টি সিসি ক্যামেরা, ৩২০টি ক¤িপউটার, ৩২০টি হার্ডডিক্স সহ অসংখ্য আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, উৎপাদিত মালামালসহ কাঁচামাল। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ কোটি টাকা।
শ্রমিকদের বিক্ষোভের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আন্দোলনরত শ্রমিকদের কাছে গিয়ে ২০ মিনিট কথা বলেছি। আমার কথায় তারা শান্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমার ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে শ্রমিকরা আমাকে মানববেষ্টনি তৈরি করে রক্ষা করেছে। এ সময় আমি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ছোরা ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হই।
শ্রমিক অসন্তোষ গোটা পৃথিবীতে হয়ে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ হলে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কর্মসূচি পালন করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার কারখানায় যে ভাঙচুর, লুটপাট করা হয়েছে তা পুরো ব্যতিক্রম। এ ঘটনায় আমিসহ এখানকার অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে হতাশ। আমি নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে ১০ বছর ধরে আছি। এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। এ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন করেছি। এটা এলাকার মানুষের লাভ। এখন জরুরী প্রয়োজন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অন্যথায় বিকল্প ভাবতে হবে আমাদের।
সংবাদ সম্মেলনে চ্যাঙ বলেন, কারখানার ম্যানেজম্যান্ট এবং শ্রমিকদের একুট সমস্যা ছিলো, সেটি উত্তোরণের চেষ্টা করছিলাম। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আমার চেষ্টা আছে।
ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এভারগ্রিনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক কল হ্যা হ্যান মঙ, উপ মহা-ব্যবস্থাপক কাজী ফেরদৌস উল আলম ও হারুন উর রশিদ।
এ বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, ইপিজেডের গত শনিবারের ওই ঘটনায় এভারগ্রীণ কারখানা কর্তৃপক্ষ তিনজন নামীসহ অজ্ঞাত ৩৫০ জনের নামে মামলা করেছেন। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এটি দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। আসামীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। #