নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যসামগ্রী কাঁধে করে ‘লকডাউন’ করা বাড়ি বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী
https://www.obolokon24.com/2020/04/saidpur_13.html
তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর(নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্য সামগ্রীর বস্তা নিজ কাঁধে করে তাঁর ইউনিয়নে লকডাউন করা ২০টি বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম হচ্ছে মো. জুয়েল চৌধুরী। তিনি সৈয়দপুর উপজেলার ৫ নম্বর খাতামধুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলার উল্লিখিত ইউনিয়নের খালিশা বকশীপাড়ার যুবক মো. হাফিজুল হক বিটুল (৩৮)। তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি হোটেলে ম্যানেজার হিসেব কর্মরত ছিলেন। করনো ভাইরাস পরিস্থিতিতে তিনি অসুস্থ অবস্থায় গেল ৪ এপ্রিল নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনা ভাইরাসে উপসর্গ ধরা পড়ে। এ অবস্থায় সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন থেকে বকশীপাড়া গ্রামের তার বাড়িসহ আশপাশে ২০টি বাড়ি লকডাউন করা হয়। এতে করে গোটা গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের লোকজন ওই লকডাউন করা বাড়িগুলোর আশপাশেও যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এতে করে বাড়িতে অবস্থানকারীদের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো নিয়ে সংকট দেখা দেয়। তাছাড়া কোন লোক পিপিই পরিধান করে ওই বাড়িতে গিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেবে এমন পিপিইও নেই। এ অবস্থায় ওই বাড়িগুলোর খাদ্য সহায়তা এগিয়ে আসেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরী। তিনি নিয়মিত ওই বাড়িগুলোতে বসবাসকারী মানুষের খোঁজখবর রাখছেন। সেই সঙ্গে নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছেন চেয়ারম্যান।
এ নিয়ে কথা হলে খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরী বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমার ইউনিয়নের বকশীপাড়ার মানুষ চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছেন। লকডাউন করা ২০টি বাড়িথাকা লোকজনের কেউ কোন খোঁজখবরও নিচ্ছেন না। এমন কি ওই সব বাড়ির আশেপাশেও যেতে রাজি হচ্ছে না অনেকেই। যেহেতু আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। তারা আমাকে দুই দফায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। তাদের সুখ দুঃখে পাশে দাঁড়নো আমার দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই আমি নিজের দায়িত্ব কর্তব্য মনে করে নিজ কাঁধে খাদ্য সামগ্রীর বস্তা তুলে নিয়ে তাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি। তাদের দৈনন্দিন চাহিদাগুলোও জানার চেষ্টা করছি। আমি আমার দায়িত্বকর্তব্যটুকু পালন করার চেষ্টা করছি মাত্র।
আর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীর এমন মানবিক কর্মকান্ড গোটা সৈয়দপুর উপজেলায় ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, মো. জুয়েল চৌধুরী সৈয়দপুর উপজেলার ৫ নম্বর খাতামধুপুর ইউনিয়নে দুই মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ওই ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম আজিজুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে।