তেঁতুলিয়ায় বিতরণকৃত ত্রাণের খাদ্যদ্রব্যাদিতে ইউপি মহিলা সদস্যের ভাগ বাটোয়ারার আভিযোগ
https://www.obolokon24.com/2020/04/panchagar_6.html
মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড় জেলাধীন তেঁতুলিয়া উপজেলার ৫নং বুড়াবুড়ি ইউপির সরকার পাড়া গ্রামে বিতরণকৃত ত্রাণের খাদ্যদ্রব্যাদিতে ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ উঠেছে। গত ৩১মার্চ/২০ মঙ্গলবার উক্ত অভিযোগটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে দাখিল করা হয়। অভিযোগকারী হলেন, মোছা: নুরিমা খাতুন স্বামী-মৃত তছলিম উদ্দীন। অপরদিকে অভিযুক্ত ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হলেন, ঐ একই গ্রামের ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের আখলিমা খাতুন ওরফে আকুল স্বামী-আলতাফ হোসেন।
অভিযোগ ও নুরিমার সাক্ষাৎকার সূত্রে জানা যায়, নুরিমা খাতুন একজন নিত্যান্ত গরীব ও বৃদ্ধা মহিলা। নুরিমার কোনো জায়গা জমি না থাকায় তার ভাই মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের বাড়িতে বসবাস করার মত একটি মাত্র ঘর তুলে সেখানেই তিনি বসবাস করেন। তার সেই গরীবি হালের খবর পেয়ে করোনা ভাইরাসের মহামারীতে জীবিকা নির্বাহের জন্যে ত্রাণ বিতরনী তালিকায় নাম দেয়া হলে গত ৩০এপ্রিল/২০ বুধবার দিবাগত রাত অনুমান ৩টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মো: তারেক হোসেন ও তার গ্রাম পুলিশদেরকে সঙ্গে নিয়ে বুড়াবুড়ি-নিউমার্কেট পাকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ১০কেজি চাউল, ২কেজি আলু, ১কেজি ডাল, ১বোতল সয়াবিন তেল ও ১টি জীবনু নাশক সাবান দেন নুরিমাকে। চেয়ারম্যানের উল্লেখিত ত্রাণ দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই ত্রাণের উপর আশর হয় ভাগ বাটোয়ারার। নুরিমা ত্রাণ পাওয়ার পর তার নিজ ঘরে ঘুমানোর জন্য শোয়ে পড়লে অভিযুক্ত আখলিমা তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন এবং বলেন, তোর নাম আমি দিয়েছি আমার জন্য জিনিসগুলো পেয়েছ। এতে কিছু না বলে নুরিমার ত্রাণের বস্থা থেকে ডালসহ অন্যান্য আরোও কিছু খাদ্যদ্রব্যাদি নিয়ে অভিযুক্ত আখলিমা তার বাড়িতে চলে যায়। অভিযোগ সূত্রে আরোও জানা যায়, অভিযুক্ত ইউপি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আখলিমা সরকারি ১টি সোলার টাকার দাবিতে ওয়াক্তিয়া মসজিদে দেয়ার কথা হলে ওয়াক্তিয়া মসজিদ কর্তৃপক্ষ টাকা না দিতে পারলে অভিযুক্ত আখলিমা উক্ত সোলারটি মসজিদ থেকে খুলে নিয়ে অন্যত্রে বিক্রি করেন।
এছাড়াও ঐ একই গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভিজিডি কার্ডধারী মহিলা জানান, অভিযুক্ত মহিলা সদস্য আখলিমা কার্ড বাবদ তার কাছ থেকে ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা নিয়েছেন। এতে উক্ত মহিলা গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেয়ার ১০মিনিট পর সাক্ষাৎকার নেয়া গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানান আমার স্বামী টাকা দেয়নি আমার নাম দিয়েন না, কেটে দেন। অন্যদিকে আরেকজন ভিজিডি কার্ডধারী মহিলার কাছ থেকেও ৪৫০০(চার হাজার পাঁচশত) টাকা কার্ডবাবদ নিলে তিনিও আখলিমার ভয়ে অস্বীকার করেন। শুধু তাই নই, মোজাহারুল ইসলাম পিতা-মৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের মায়ের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বাবদ ৫০০০(পাঁচ হাজার) টাকা নিলে তার মা মাজেদা বেগমও অভিযুক্ত আখলিমাকে ভয় পেয়ে মুখ খুলেননি।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: তারেক হোসেন জানান, আমি রাতে আমার গ্রাম পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছি। যে ব্যক্তিকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে তার ছবি ও স্বাক্ষর নিয়েছি। তবে আমি শুনেছি, আমার মহিলা সদস্য আখলিমা একজন বৃদ্ধা মহিলার ত্রাণ থেকে কিছু একটা নিয়েছে। এপর্যন্ত আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি অভিযোগ এলেই আমি তার সু-ব্যবস্থা নিবো।
এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো: মাসুদুল হক জানান, আমি অভিযোগটি পেয়েছি তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের জন্যই কোনো বিচারিক কার্যক্রম চলছে না। তাই তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি দেখবো ইনশাআল্লাহ।