কিশোরগঞ্জে করোনার প্রভাবে সবজী চাষীরা দিশেহারা


মোঃ শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)সংবাদদাতাঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে স্থানীয় হাটবাজাগুলো বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। সরকারীভাবে প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়াম মাঠে বাজার বসিয়ে কেনাবেচার সময় নির্ধারন করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এমন অবস্থা চলবে। ফলে স্থানীয় ২ থেকে আড়াই হাজার কৃষক তাদের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ শাক সবজি ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে । 
 সবজী চাষীদের (কৃষক)সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকরা খরিপ মৌসুমে অতিরিক্ত লাভের আশায় বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন নিয়ে আবার অনেকেউ চড়া সুদে মহাজনদের কাছে টাকা ধার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজী চাষ করেছেন। এবারে আবহাওয়া অনকুলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভাল। কিন্তু বর্তমানে প্রানঘাতি করোনা ভাইরাসের কারনে হাটবাজার বন্ধ থাকায় সবজী বিক্রি করতে না পেরে সবজী চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেক কৃষক যারা ঋন নিয়ে কিংবা চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে সবজী চাষ করেছেন তারা কিভাবে ঋন পরিশোধ করবেন এমন দুশ্চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম। ফলে করোনা আতঙ্কের চেয়ে তাদের কাছে ঋনের আতংক বেশি দুশ্চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে। 
সোমবার সকালে স্টেডিয়াম বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার মণ সবজী নিয়ে বাজারে এসেছে। এসময় বাজার ঘুরে জানা গেছে, বেগুন পাইকারী প্রতিকেজি ৩ টাকা, টমেটো প্রতিকেজি ৩ টাকা, কড়লা প্রতিকেজি ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি ৫ টাকা,লাউ প্রতিপিচ আকার ভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা, খিরা প্রতিকেজি ৫ টাকা, লালকুমড়া প্রতিকেজি ৬ থেকে ৮ টাকা। বাঁধাকপি ৫ থেকে ১০ টাকা। আলু প্রতিকেজি ১৫ থেকে ১৮ টাকা, পেয়াজ ৪০ টাকা টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 
কিশোরগঞ্জ বাজারে আসা এক সবজী চাষী বলেন, আমি প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের সবজী চাষ করে সংসার চালাই। আমি এবারে এনজিও থেকে ঋন নিয়ে এক বিঘা জমিতে টমেটো এবং দুই বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছি। প্রতিবছরের থেকে এবার ফলনও হয়েছে ভাল । কিন্তু বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারনে বাজারে কোন পাইকার না আসায় প্রতিকেজি টমেটো ৩ টাকা এবং প্রতিকেজি বেগুন ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আমি পরিবার করোনার চিন্তায় নয় নের চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারেনা। 
বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আতাব্বর আলী বলেন, আমি এবার এক বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। জমিতে কুমড়া পেঁকে হলুদ হয়ে গেছে। গতবার যেখানে প্রতিপিচ কুমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিচ বিক্রি করেছিলাম। এবারে সেই কমড়া প্রতিপিচ ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই চালসহ অন্যন্য জিনিস কেনার জন্য বাধ্য হয়ে কিছু কুমড়া বিক্রি করেছি আর বাকি কুমড়া বাড়িতে এনে রোদে শুকিয়ে ঘরের মধ্যে রাখছি। এরকম আরো অনেক শত শত কড়লা, কাচাঁ মরিচ, বেগুন, টমেটোসহ অন্যন্য সবজী চাষ করে দাম না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, এবার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় রবি মৌসুমে ৭২০ হেক্টর এবং বর্তমান খরিপ মৌসুমে ১৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজী চাষ করেছে কৃষকরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের(সবজী) ন্যয্য দাম না পাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, করোনায় ভোক্তার আয় কমে যাওয়ার কারনে এবং হাটবাজার বন্ধ থাকায় এমনটা হয়েছে। তাঁরপরও যদি কোন বড় কৃষক পরিবহন করতে চায় সেক্ষেত্রে তাদেরকে সরকারীভাবে সহযোগীতা করা হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4518567368084150881

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item