সৈয়দপুরে মাছ-মাংস ও সবজির বাজার খেলার মাঠে সরিয়ে নেয়া হলেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব
https://www.obolokon24.com/2020/04/Saidpur_39.html
নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের আধুনিক পৌর সবজি বাজার এবং মাছ- মাংসের বাজার অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজারে ক্রেতাবিক্রেতাদের বেচাকেনার জন্য ওই উদ্যোগ নেয়া হয়। অথচ ক্রেতা-বিক্রেতার অসচেতনতা এবং সংশ্লিষ্টদের সঠিক তদারকির অভাবে সেই উদ্যোগ যেন ভেস্তে যেতে বসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতেও বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুর শহরের আধুনিক পৌর সবজি এবং মাছ- মাংস বাজারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হচ্ছিল না। এ অবস্থায় গত বুধবার সৈয়দপুর উপজেলা ও পুলিশ এবং পৌরসভা কর্তৃপক্ষের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় বাজার দুইটি সরিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্রেতাবিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনার জন্য শহরের বাজার দুইটি অন্যত্র সরিয়েও নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়িত হয় গতকাল শুক্রবার থেকে। এর মধ্যে মাছ-মাংসের বাজারটি শহরের বিমানবন্দর সড়কের অফিসার্স কলোনীর ফাইভ স্টার খেলার মাঠে এবং কাঁচা সবজির বাজারটি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের (বাংলা হাই স্কুল) খেলার মাঠে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মূলতঃ শহরের বড় আকারের দুইটি মাঠে বসা বাজারে মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা সারবেন এমন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বাজার দুইটি স্থানান্তর করা হয়। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বাজার দুইটিতে বাজার করতে আসা মানুষজনের ভিড় রয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউই মানছেন না সামাজিক দূরত্ব। লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতা সাধারণ একে অপরের একেবারে গাঁয়ে ঘেঁষে কিংরা গাঁয়ে গা লাগিয়ে দিয়ে অবাধে কেনাকাটা সারছেন। এ নিয়ে বিক্রেতাদেরও নেই বিন্দুমাত্র ভ্রক্ষেপ। এ ব্যাপারে কোন রকম নজরদারি নেই প্রশাসনগতভাবেও। এতে করে মূলতঃ যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা যেন পুরোপুরিই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে, ক্রেতা-বিক্রিরা অভিযোগ করেন সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও রেলওয়ে ফাউভ স্টার খেলার মাঠে স্থানান্তরিত মাছ-মাংস ও সবজি বাজারে কোন রকম ছাউনির ব্যবস্থা নেই। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে ও বসে রোদে পুঁড়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেচাবিক্রির কাজ সারছেন। নেই পানি ও জলের কোন রকম সুব্যবস্থাও। সেখানে না আছে প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়ার মতো ল্যাট্টিন কিংবা শৌচাগার। খুচরা সবজি বিক্রেতা মোস্তফা জানান, এখানে যে অস্থায়ী সবজি বাজার বসনো হয়েছে তাঁর কোন প্রচারপ্রচারণা করা হয়নি। ফলে অনেকেই এ বাজারে বিষয়ে কিছুই জানেন না। আর দোকানের ওপরে ছাউনির ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা তরিতরকারি দ্রæত শুকিয়ে যাচ্ছে। আমরাও বেশি সময় ধরে কাঠ ফাটা রোদে বসে থাকতে পারছিনা। অপর এক সবজি বিক্রেতা অভিযোগ করেন, সবজি বাজারের পাশপাশি মাছ-মাংসের বাজার থাকলে বাল হতো। এছাড়া শহরের নয়াবাজার থেকে পাইকারী সবজি বাজারটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়নি অদ্যাবধি। ফলে সেখানকার পাইকারী বিক্রেতারা সুযোগ নিয়ে খুচরা হিসেবে সবজি বিক্রি করছেন। এতে করে আমাদের সবজি অবিক্রিত থাকছে। বাজারে সবজি কিনতে আসা শরৎ বলেন,বর্তমানে চৈত্র মাসের কাঠ ফাটা রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে বাজার করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। বয়স্কদের অবস্থা আরো কাহিল। আর আামদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, এখানে কাঁচা তরিতরকারি ও সবজি কেনাকাটার সেরে আবার দূরে রেলওয়ে ফাইভ স্টার মাঠে যেতে হচ্ছে মাছ-মাংস কিনতে। এতে আমাদের সময় ও শ্রম ব্যয় হচ্ছে।