সৈয়দপুরে ত্রাণের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন
https://www.obolokon24.com/2020/04/Saidpur_11.html
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ত্রাণ সামগ্রী না পেয়ে নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৌরসভা এলাকার কর্মহীন, গরীব, অসহায় ও দুস্থ মানুষ বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। শনিবার এসব বিক্ষুদ্ধ কর্মহীন মানুষ অবিলম্বে তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের দাবিতে সৈয়দপুর পৌরসভার পৃথক পৃথক স্থানে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছেন। এ সময় আইন-শৃংখলাবাহিনীর উপস্থিতি অবরোধ সৃষ্টিকারী বিক্ষুদ্ধ লোকজন এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পরণের পানঞ্জাবী ধরে টানাহেঁচড়া করে ছিঁড়ে দেওয়া হয়। এাছাড়াও এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শাহিন হোসেনের অভিযোগে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে সৈয়দপুর শহরের উপকণ্ঠে ঢেলাপীর উত্তরা আবাসন এলাকায় সৈয়দপুর - নীলফামারী সড়ক প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে রাখা হয়। সৈয়দপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের ঢেলাপীর উত্তরা আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। ঢেলাপীর উত্তরা আবাসনের বিভিন্ন বয়সী সহ¯্রাধিক মানুষের এ অবরোধের কারণে সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় ওই সড়কের উভয় দিয়ে ওষুধ, পণ্যবাহী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ী বিভিন্ন রকম যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় অবরোধকারীরা অবিলম্বে তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের দাবি জানিয়ে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন। অবরোধের খবর পেয়ে প্রথমে আইন-শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ সেখানে গিয়ে অবরোধ সৃষ্টিকারী উত্তরা আবাসনের লোকজনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন একং তাদের কথাবার্তাও ধৈর্য সহকারে শোনেন। এ সময় তিনি ঢেলাপীর উত্তরা আবাসনের বাসিন্দাদের তালিকা করে অবিলম্বে ত্রাণ বিতরণের আশ্বাস দিলে অবরোধকারীরা তাদের অবরোধ তুলে নেয়। পরে ওই সড়কে চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এছাড়াও সকালে ত্রাণের দাবিতে সৈয়দপুর পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বসুলপুর এলাকার গরীব অসহায় কর্মহীন মানুষ শহরের চিনি মসজিদ এলাকায় মানববন্ধন করেন। এ সময় এলাকার বিভিন্ন বয়সী কর্মহীন নারী পুরুষরা চিনি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়। পরে সৈয়দপুর থানা পুলিশের সদস্যরা গিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়া লোকজনদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এর আগের দিন গত শুক্রবার বিকেলেও সৈয়দপুরপৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর এলাকার লোকজন ত্রাণের দাবিতে এলাকার বিক্ষোভ মিছিল করেন।
গতকাল শনিবার মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সৈয়দপুর পৌরসভার রসুলপুর মহল্লার বাসিন্দা সাথী, আরিফ, আলিম,রবিন,আরমান ডলি,সামিনা তামিম, ফয়সাল জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে তারা সকলেই গত প্রায় পনের দিনের বেশি সময় ধরে তারা ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। সরকারি নির্দেশ মেনে ঘরে অবস্থান করায় তারা কর্মহীন হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ত্রাণের জন্য তারা প্রায় প্রতিদিনই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা তাদের কোন রকম ত্রাণ সামগ্রী দিচ্ছেন না। এ সময় তারা অভিযোগ করেন এলাকার গুটি কয়েকটি পরিবারকে সরকারিভাবে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হলেও একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে ওই ত্রাণ সামগ্রী দেয়া হয়। রসুলপুর এলাকার আরিফ জানান, এলাকার কাউন্সিলররা তাদের কোন ত্রাণ সামগ্রী দেননি। এ অবস্থায় তিনিসহ এলাকার দুস্থ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। কর্মহীন থাকায় তারা পরিবার সদস্যদের একবেলা খাবারেরও কোন ব্যবস্থা করতে পারছেন না।
সৈয়দপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শাহিন হোসেন বলেন, সরকারিভাবে তিনি যে যৎসামান্য ত্রাণের চাল পেয়েছেন তা যথাযথভাবে বিতরণ করেছেন। আবারও বরাদ্দ সাপেক্ষে ওয়ার্ডের দুস্থ অসহায় মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।