করোনা নয়- এনজিও’র কিস্তি নিয়ে চিন্তিত নিম্ন আয়ের মানুষ।

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
বর্তমানে নোভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত সারা দেশের মানুষ। সেই সময় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে,খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ, করোনা ভাইরাসের থেকেও, বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে এনজিওর কিস্তি নিয়ে।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা অধিকাংশ মানুষ, শহরের রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। এতেকরে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পৌর শহরের রিক্সা চালক দাদপুর গ্রামের পঞ্চাশ উর্দ্ধ বয়সী খরকুদ্দিন মিয়া বলেন, তাঁর পরিবারে ৮জন সদস্য, প্রতি সপ্তাহে এনজিও’র কিস্তি দিতে হয় ১৪শ টাকা। তিনি বলেন বর্তমানে শহরের মানুষ কমে গেছে এখন আর তেমন আয় হচ্ছেনা, কি করে সংসার চলবে আর এনজিও কিস্তি কি ভাবে পরিশোধ করবে, এই নিয়ে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। একই কথা বলেন একই এলাকার রিক্সা চালক শহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম বলেন  সে এনজিও থেকে ঋন নিয়ে রিক্সা কিনেছেন, বর্তমানে তার আয় না থাকায় এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জয়নগর গ্রামের দিন মজুর শাহিনুর রহমান বলেন কোরোনা আতঙ্কে এখন কেউ তাকে বাড়ীতে কাজে নিচ্ছেনা, এতেকরে তাঁর মজুরী বন্ধ হয়ে গেছে, তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে, তার উপর কঠিন হয়ে পড়েছে এনজিওর কিস্তি, প্রতি সপ্তাহে তাকে ১১শ টাকা কিস্তি দিতে হয়, কিভাকে কিস্তি পরিশোধ করবে তা নিয়ে সে বেশি চিন্তিত। একই অবস্থা ক্ষুদ্র চা-ষ্টল ও পান-সিগারেটের দোকান ও ফলের দোকান গুলোতে। শহরে জনসমাগম কমে যাওয়ায়, এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খাবারে দোকান হোটেলের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতে শ্রমিক ও দিন মজুরদের ন্যায় তারাও বিপাকে পড়েছে। পৌর শহরের বটতলি মোড়ের চা-বিক্রেতা দুলু মিয়া বলেন সারা দিন যেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেচা-কেনা হত, সেখানে ৫০০ টাকাও বেচা-কেনা হচ্ছেনা। একই কথা বলেন নিমতলা মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী সুলতান হোসেন। তিনি বলেন বর্তমানে বেচা-কেনা একেবারে কমে গেছে, এতে হোটেলের ভাড়া কর্মচারীদের বেতন দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, এর উপর রয়েছে ঋনের কিস্তি।
ফুলবাড়ী রক্ষার আন্দোলনের নেতা সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন,করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকের কিস্তি স্থগীত করা হলেও, গরিবের এনজিওর কিস্তি স্থগীত করা হয়নি। তাই তিনি এনজিওর কিস্তি বন্ধ করার আহবন জানান।
কিস্তির বিষয়ে এসকেএফ ফাউন্ডেশনের ফুলবাড়ী শাখার ম্যানেজার গোলজার হোসেন জানান,কিস্তি আদায় বন্ধে আমাদের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাই আমরা যথারীতি মাঠে কাজ করছি।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী এনজিও ফোরামের সভাপতি এমএ কায়ুমের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন এনজিও গুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে,এখন পর্যন্ত কিস্তি বন্ধ রাখার সরকারী সিদ্ধান্তের চিঠি আসেনি তাই নিয়মিত কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। নির্দেশনা এলে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী বলেছেন এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য ফুলবাড়ীতে কর্মরত এনজিও গুলোকে মৌখিক নির্দ্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নিয়মিত কিস্তি নিচ্ছে এনজিও গুলো। এ জন্য কারোনা প্রাদুর্ভাব না কাটা পর্যন্ত এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 6109829105014304934

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item