মুজিবীয় আদর্শে বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে: শেখ হাসিনা

ডেস্ক



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ মুজিবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। আন্তর্জাতিক চাপে জাতির পিতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। জাতির পিতাকে ফিরে পেয়ে স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, পাকিস্তানীরা যাকে হত্যা করতে পারেনি, বাংলার মাটিতে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে (বর্তমানে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড) মুজিববর্ষের ক্ষণগণনার আনুষ্ঠানিক শুরু ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অন্ধকার সময়ে ছিলাম, এখন আমরা আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছি। জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞা জানাচ্ছি যারা আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ২০ বছরের সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। শেখ মুজিবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হতে পারতো না। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা অর্জন করতে পারতাম না। যে বিজয়ের আলোকবর্তিকা জাতির পিতা তুলে দিয়েছিলেন তা নিয়ে আমরা আগামী দিনের পথে চলতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি হানাদাররা হামলা শুরু করেছিল ঠিক তখনই জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় অর্জন করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরা এ বিজয় মেনে নিতে পারেনি। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে যার যা আছে তাই নিয়ে যুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। নির্দেশ দেন বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। বাংলার জনগণ তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের পর ২৫ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানি শাসন অচল হয়ে পড়েছিল। ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে তিনি যে নির্দেশ দিতেন সেই অনুযায়ী দেশ চলতো। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধে বিজয় যে অবশ্যম্ভাবী, সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাঙালি তার নির্দেশ পালন করে প্রস্তুতি নিয়েছিল।
এসময় জাতিসংঘ-ভারতসহ যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সমর্থন দিয়েছিল তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন: ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদাররা আত্মসমর্পণ করে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তানিরা বাধ্য হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে। আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারত আমাদের সহায়তা করেছিল। আমাদের শরাণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, অস্ত্র দিয়েছিল। এমনকি যারা জাতিসংঘে আমাদের সমর্থন দিয়েছিলেন আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করছি।
এ ময় তিনি পাকিস্তানে বন্দী থাকা স্বাধীনতা সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধুর দেশে না ফেরা পর্যন্ত আনন্দ অধরা ছিল বলে বর্ণনা করেন।
এরপরই মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘোষণা কালে আবেগ আপ্লুত বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন: আজ জাতির পিতা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিন। এই দিনেই তার জন্মশতবাষির্কী উদযাপনের ক্ষণগণনা ঘোষণা করছি। যে দিনে তিনি তার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছিলেন, সে দিনই তার জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান উদযাপনের ক্ষণগণনা ঘোষণা করছি।
প্রধানমন্ত্রী ৪টা বেজে ২৫ মিনিটে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে তার সঙ্গে হেঁটে মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শিক্ষক প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, ছোট বোন শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, কৃষখ শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ঢাকাস্থ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোর রাষ্ট্রদূতেরা।
এর আগে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে তার জন্মশতবার্ষিকীতে প্রতিকী বঙ্গবন্ধুকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক দৃশ্য দৃশ্যায়িত হয়। যা উপস্থিত সকলকে এবং টেলিভিশনের সামনে বসা কোটি বাঙালিকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের রোমাঞ্চে শিহরিত করে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 1167804915883155653

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item