পীরগাছায় বিনা টিকেটের স্টেশন এখন গো-চারণ ভূমি
https://www.obolokon24.com/2020/01/Station.html
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দুইটি স্টেশন দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় এখন গো-চারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছে। স্টেশন দুটিতে ট্রেন নিয়মিত থামে। যাত্রীরা ওঠা-নামা করে। কিন্তু স্টেশন মাস্টারের কক্ষে ঝুলছে তালা। নেই স্টেশন মাস্টারসহ কোন জনবল। প্রতিদিন ছয়টি ট্রেন যাত্রা বিরতি করলেও যাত্রীদের টিকেট কাটতে হয় না। এমনি দুইটি স্টেশন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী।
গত রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জরাজীর্ণ স্টেশন দুটির ভবনে ঝুলছে তালা। জনবল না থাকায় স্টেশনের সর্বত্র ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে। স্টেশনের রেল লাইন ঘেঁষে গরু বেঁধে রাখা হয়েছে। টিকেট প্রাপ্তির ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা টিকেট ছাড়াই ট্রেনে উঠছে। শুধু টিকেট নয়, বুকিং ছাড়াই মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনবল সংকটের কারণে প্রায় ১০ বছর আগে স্টেশন দুটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন ওই রেলপথে ১৪টি ট্রেন(আপ ও ডাউন) যাতায়াত করছে। এর মধ্যে ছয়টি ট্রেন নিয়মিত থামে। গড়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক যাত্রী ওঠানামা করে। কিন্তু টিকেট বিক্রির কোন ব্যবস্থা না থাকায় কেউই টিকিট কাটে না।
অন্নদানগর স্টেশন এলাকার বাসিন্দা আব্দুস ছালাম বলেন, ‘স্টেশনটি বন্ধ থাকায় গো-চারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছে। দেখার কেউ না থাকায় স্টেশন এলাকায় যত্রতত্র গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়। এতে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
দেবী চৌধুরাণী স্টেশন এলাকার সুজন মিয়া বলেন, ‘স্টেশনটি দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়।’
পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সামসুজ্জোহা বলেন, ‘অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী স্টেশন বন্ধ থাকায় পীরগাছা স্টেশনে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে একটি ট্রেন দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে অন্য ট্রেন পার(ক্রসিং) করে দিতে হচ্ছে। এতে নিয়মিত ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রী সাধারণ।’
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ের ম্যানেজার শফিকুর রহমান শফিক বলেন, ‘লোকবল না থাকায় স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলে আবার চালু করা হবে স্টেশনগুলো।’