হরিপুরে কালাইয়ের রুটি বিক্রির ধুম

জে.ইতি হরিপুর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
শীতে হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষকে কালাইয়ের রুটি খেতে দেখা যাচ্ছে।
মুখরোচক ও পুষ্টিকর কালাইয়ের রুটি বিক্রি করে শীতকালটা অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করেন।
সুস্বাদু তাই ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় খুবই জনপ্রিয় কালাইয়ের রুটি। শীত মৌসুমে এই উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার, কাঁঠালডাঙ্গীবাজার, যাদুরাণীবাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন হাট-বাজারে রাজশাহী অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কালাইয়ের রুটি বিক্রির ধুম পড়েছে গত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। উপজেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে, বিভিন্ন হাটবাজারে চলছে এ রুটি বিক্রির ধুম।
এই অঞ্চলে কলাই রুটি বিক্রি করে অনেক নারীর জীবন-জীবিকার জন্য নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। তারা সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রুটি বিক্রি করেন। রুটি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, কলাই রুটি খেতে সবজি লাগে না। চিনি, গুড়, কিংবা মিষ্টিও লাগে না। প্রয়োজন হয় না গোশতেরও। শুধু তেল, লবণ ও মরিচ, রসুন, ধনেপাতা আর পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি এ রুটি ঝালবাটা দিয়ে খেতে হয়। ক্রেতারা রুটি হাতের ওপর নিয়ে খেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রতিদিন রাতে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বিক্রি হয়। লাভও হয় ছয়-সাতশ টাকা। রাস্তার পাশে ফুটপাতে সামান্য বেঞ্চ আর  টুলের ওপর কিংবা কাঠের পিঁড়িতে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা। কেউ কেউ খোলা আকাশের নিচে বসে রুটি বিক্রি করে চলছেন।
 কালাইয়ের রুটি বিক্রেতা আলম জানান, ভদ্রলোকদেরও কম পছন্দ নয় কলাইয়ের রুটি। তবে তারা তো ফুটপাতে  এসে বসতে পারে না। কাজের লোকের মাধ্যমে কিনে নেন।
কালাইয়ের রুটি বানানোর কৌশল হিসাবে দেখা যায়, চাল ও গমের আটা মেশানো আটা, পরিমাণমতো লবণ পানি দিয়ে আটা মাখিয়ে তৈরি করা হয় কলাইয়ের রুটি তৈরির আটা। মাখানো কাজটি যত ভালো হবে, রুটি হবে তত ভালো ও সুস্বাদু।
রুবেদা খাতুনের ভাষায়, শুধু কলাইয়ের রুটি খেতে ভালো লাগে না। তিতকুটে ও কস্টা লাগে। চাল, গম ও ভুট্রার আটার মিশ্রণ দেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালাইয়ের রুটি আয়তনে বড় বড় এবং বেশ পুরো। পানি মাখানো আটা গোল করে একটি পলিথিনের ওপর রেখে আরেকটি পলিথিন দিয়ে হাতের চাপে বৃত্তকার করে চুলার তাওয়াতে সেঁকে সেঁকে রুটি তৈরি করা হচ্ছে। রুটি সেঁকার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন বিকালে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রুটি জমজমাট বিক্রি হয়। একেকটি রুটি ১৫ টাকা। মন চাইলে ১০ টাকা দিয়েও পাইতে পারেন। স্পেশালভাবে সেঁকে নিলে ২০ টাকা করে প্রতিটি।
স্থানীয় বহরমপুর বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রাজাবুল হক বলেন, প্রায় কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে কলাই রুটি বিক্রি করে অনেক নারীর জীবন-জীবিকার জন্য নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে।
কাঁঠালডাঙ্গীবাজার এলাকার আবির সরকার জানান, জমিতে সবজিসহ বিভিন্ন লাবজনক ফসলের চাষের কারণে এই কলাই হারিয়ে যাচ্ছে।
হরিপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার আব্দুল করিম বলেন, কালাইয়ের রুটি পুষ্টিমানসম্পন্ন সুস্বাদ্ধু একটি খাবার। সব শ্রেণির মানুষের কাছেই কালাইয়ের রুটি প্রিয় খাবার হিসাবে বেছে নেয়।

পুরোনো সংবাদ

ঠাকুরগাঁও 6585204902934042007

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item