লাশের পাশে বেহালার করুন সুর, ৪৮ ঘন্টা পর কথিত পীরের লাশ দাফন

কাউনিয়া(রংপুর)থেকে ফিরে ফজলুর রহমানঃ
কথিত পীর মারা গেছেন ৪৮ ঘন্টা আগে। ভক্তরা লাশ দাফন না করে লাশের পাশে সাউন্ডবক্সে উচ্চ শব্দে বেহালার করুন সুর বাজাচ্ছিলেন। এ কার্যক্রম ৭২ ঘন্টা চলার পর লাশ দাফন করা হবে বলে ভক্তদের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কথিত পীরের মৃত্যুর ৪৮ ঘন্টা পর লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের বিশ^নাথ গ্রামে।
নিহত কথিত পীরের নাম শাহ সুফি শাফিউল হোসেন শাফি আল-সুরেশ^রী-আল জাহাঙ্গীরী। তিনি ওই গ্রামের বশির উদ্দিনের ছেলে।
ভক্তদের দাবী, শাফিউল হোসেন এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে পীর হিসেবে পরিচিত ছিল। তার প্রায় সারাদেশে ৫ শতাধিক ভক্ত রয়েছে। পীর মুরিদদের কোরআনের সঠিক ব্যাখা দিয়ে আসতেন বলে ভক্তদের দাবী।
গত সোমবার কথিত পীর শাফিউল হোসেন ৮৩ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত কারণে সকাল ৮টায় নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
তার মৃত্যুর পর থেকে ভক্তরা লাশের পাশে সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে বেহালার করুন সুরে বাজিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি ভক্তরা উন্মদনা প্রকাশ করছিলেন।
পীরের ভক্তরা জানান, পীর শাফিউল হোসেন মৃত্যুর আগে তাদেরকে নছিয়ত করে যান। তার মৃত্যুর পরে লাশের পাশে ৭২ ঘন্টা বেহালার করুন সুর বাজাতে হবে। এজন্যই তার মৃত্যুর পরে ভক্তরা এ আয়োজন করেন।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে কাউনিয়া থানা পুলিশ শাফিউলের বাড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা সকল কার্যক্রম বন্ধ করে ভক্তদের লাশ দাফনের চাপ দেয়। কিন্তু ভক্তরা লাশ দাফনে অস্বীকৃতি জানালে ভক্ত ও প্রশাসনের মাঝে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের চাপে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দুপুর আড়াইটার দিকে লাশ দাফন করতে বাধ্য হয়।
কথিত পীর শাফিউল হোসেন ১৯৬৫ সালে এসএসসি পাস করে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তহশীলদার হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০০৬ সালে অবসরে গিয়ে তিনি নিজেকে পীর দাবী করেন। এছাড়া তিনি বাড়িতে আস্তানা তৈরি করে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ভক্তদের নিয়ে হালকায়ে জিকির করে আসছিলেন।
পীরের ভক্ত আশিকুর রহমান বলেন, তিনি একজন আধ্যতিক গুরু ছিলেন। তার পথ অনুসরণ করে আমরা চলবো। তিনি মৃত্যুর আগে অছিয়ত করে গিয়েছিলেন কিন্ত প্রশাসন জোর করে আমাদের পীরের অছিয়ত পালন করতে দিলো না।
নিহত শাফিউল হোসেনের ছোট ছেলে রাউফুল রহমান বলেন, আমার বাবা শাহ সুফি মতাদর্শের এক সুফি ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার আগে ৭২ ঘন্টা পর লাশ দাফনের কথা বলেছিলেন। এ সময় বেহুলার করুন সুর বাজাতে বলেছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের চাপে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই লাশ দাফন করতে হলো।
কাউনিয়া থানার ওসি আজিজুল ইসলাম বলেন, কথিত পীরের ভক্তরা ৭২ ঘন্টা পর লাশ দাফনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1396399809083833560

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item