কিশোরগঞ্জে অসহায় দরিদ্রদের নামে ঋন উত্তোলন করে আত্নসাৎ

মোঃ শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)সংবাদদাতাঃ কাগজে কলমে শতভাগ ফিট কিন্তু বাস্তবে ঋন গ্রহিতা জানেইনা তাঁর নামে কত টাকা ঋন হয়েছে।ওই ঋন গ্রহিতা সমিতির সদস্য হয়েছে কিনা তাও জানেনা। এমনকি তাঁর হাতে নেই কোন পাশ বই।  কিন্তু একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের তালিকায় তাঁর নামে ঋণ দেখানো হয়েছে ১৮ হাজার টাকা।
কথাগুলো বললে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ভিটা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য চম্পরানী। তিনি আরো বলেন সমিতির ম্যানেজার পরেশ চন্দ্র দুই দফায় আমাকে শুধু তিন হাজার টাকা দিয়েছে। ওই টাকা হাওলাদ নাকি সুদে দিয়েছেন তিনি তাও অবগত নন।
এরকম শত শত অভিযোগ  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় একটি বাড়ি একটি খামার (আমার বাড়ি আমার খামার) প্রকল্পে। ঋণ বিতরণের নাম করে  প্রকল্পের ইউনিয়ন সুপারভাইজারগণ  অসহায় দরিদ্র এবং হতদরিদ্র সদস্যদের নামে লাখ লাখ টাকা ঋণ  উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেছেন।
এ ঘঁটনায় সমিতির সদস্যরা আত্নসাৎকৃত টাকা উদ্ধারের দাবিতে প্রকল্পের শাখা ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের শাখা ব্যবস্থাপক আবু হানিফ সরকার সদস্যদের কাছ থেকে লিখিত  অভিযোগ পাওয়ার  কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগের আংশিক তদন্ত শেষে সত্যতা পেয়ে নিতাই ইউনিয়নের সুপারভাইজার আবু মুসাকে হেড অফিসে বদলী(সংযুক্ত) করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি হেড অফিসে অবহিত করা হয়েছে।
 একটি বাড়ি একটি খামার( আমার বাড়ি আমার খামার) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার দারিদ্র দূরিকরণের জন্য নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে ২৭১ টি সমিতির মাধ্যমে  অসহায় দরিদ্র ও হতদরিদ্র ১২ হাজার ৭শ জন সদস্যদের মাঝে প্রায় ৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বিতরণ করে। প্রত্যেক সদস্যদের মাঝে প্রথম পর্যায়ে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার এবং পরবর্তীতে  ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা হয়
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ডুমরিয়া সার্বিক  গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য শ্রীমতি শাপলা রানী ,স্বামী পলাশ চন্দ্র রায়  সদস্য কোড নম্বর ২৫০৬  বলেন, আমি সমিতির সদস্য হয়ে  প্রথমে ৫ হাজার ঋণ গ্রহণ করি।    পরে ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে দ্বিতীয় দফায় ১১ হাজার টাকা ঋণ করে হাতে মাত্র এক হাজার পাই। কিন্তু পাশ বই হাতে পেয়ে দেখি  ৩য় দফায় আমার নামে ১৬ হাজার টাকা ঋণ দেখিয়ে অফিসের মাঠকর্মি ও সমিতির ম্যানেজার পরেশ চন্দ্র  উত্তোলন করে তা আত্নসাৎ করেছে।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাজেডুমরিয়া ধাইজানপাড়া গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য পেয়ারী বেগম সদস্য কোড নম্বর ০০৪ সমিতির কোড নম্বর ১১৩১ বলেন, আমি গত ৪/৪/১৯ ইং তারিখে ৬ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করি । কিন্তু পরবর্তীতে সমিতির ম্যানেজার আবু বক্কর এবং মাঠকর্মী অনিল চন্দ্র অফিসের কথা বলে আমার কাছ থেকে ২৮শ টাকা নিয়ে নেয়। একই সমিতির সদস্য নয়নতারা , সাবিনা বেগম, সহিতোন বেগমও সবাই একই অভিযোগ করেন।
নিতাই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য ময়না বেগম বলেন, আমি সমিতির সদস্য হওয়ার পর নিতাই ডাঙ্গপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাঠকর্মী আবু মুসা আমাকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু বই হাতে পেয়ে দেখি আমার নামে ১২ হাজার টাকা ঋন দেখানো হয়েছে। ওই সমিতির ৬০ জন সদস্য সকলেই একই অভিযোগ করেন।
বড়ভিটা ইউনিয়নের  সুপারভাইজার হিমাংশু শেখর রায় বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি ঋণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
নিতাই ইউনিয়নের সুপারভাইজার আবু মুসা বলেন, আমার সমিতিতে ভুল করে কয়েকজন সদস্যর নামে টাকা উত্তোলন করেছিলাম তবে আমি সব টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। একই অবস্থা উপজেলার মাগুড়া, গাড়াগ্রাম, পুটিমারী চাঁদখানা, বাহাগিলি ও রণচন্ডি ইউনিয়নের।
একটি বাড়ি একটি খামার ( আমার বাড়ি আমার খামার) কিশোরগঞ্জ অফিসের শাখা ব্যাবস্থাপক আবু হানিফ সরকার সদস্যদের নামে ঋণ উত্তোলন করে টাকা আত্নসাৎ করার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন। আমি আংশিক সমিতি পরদির্শন করে দেখেছি তাতে  সমিতি গুলোতে বিভিন্ন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। বিষয়টি হেড অফিসে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন আমি বিষয়টি শুনেছি। ঋন বিতরনে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6288307181530439618

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item