সৈয়দপুরে অগ্নিকান্ডে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থা

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ২৭টি পরিবার এখনও খোলা আকাশে নিচে বসবাস করছে। ওইসব পরিবার তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে প্রলাপ বকছে। বিয়ের স্বপ্ন আগুনে পুড়েছে এক যুবকের। অগ্নিকান্ডের পর তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ টাকা, কম্বল, শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে শাড়ী, লুঙ্গীও দেয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে। অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে শহরের শহীদ জহুরুল হক সড়কের পাশে অবাঙ্গালীদের ক্যাম্প দুর্গামিলে ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ২৭টি পরিবারের ২৭টি ঘর, নগদ প্রায় ৭ লাখ টাকা, আসবাবপত্রসহ প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ পুড়ে গেছে। ওইদিন দুপুরে ক্যাম্পের জহুরুল হকের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে মুহূর্তেই আশেপাশের বাড়ীঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস দল ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। কিন্তু নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় ইপিজেড ও নীলফামারী ফায়ার সার্ভিসের অপর দুইটি ইউনিট এসে যোগ দেয়। পরে তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় ২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু তার আগেই ওই ক্যাম্পের ২৭টি পরিবারের মধ্যে ব্যবসায়ী নাদিমের নগদ ৪ লাখ টাকাসহ সকলের নগদ প্রায় ৭ লাখ টাকাসহ ফ্রিজ, কম্পিউটার, স্বর্ণালংকার ছাড়াও সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ ছাই হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানায়।
অগ্নিকান্ডে নওশাদ নামে এক যুবকের বিয়ের স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। আগামীকাল শুক্রবার তার বিয়ের দিনক্ষণ ছিল। গত বুধবার ছিল তার গায়ে হলুদ। কিন্তু আগুন সেই স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দেয়। অগ্নিকান্ডের এ ঘটনায় ওইসব পরিবারের প্রায় ২০ জন স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীর সকল শিক্ষা উপকরণ পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা পড়নের কাপড় ছাড়া কোন কিছুই বাঁচাতে পারেনি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য উপকরণের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এসব প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, তেল, লবণ, বিস্কুট, চিড়া ও নুডলস। সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম গোলাম কিবরিয়া ও জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এস এ হায়াৎ ওইসব শুকনো খাবার বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু হাসনাত সরকার, পৌর কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু, আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একরামুল হকসহ অন্যান্যরা।
এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এস. এ হায়াতের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সব ধরণের সহায়তা দেয়া হবে। এজন্য তালিকা করা হয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের জন্য নতুন ঢেউটিন, টাকাসহ অন্যান্য সহযেগিতা করা হবে। এর আগে সৈয়দপুর পৌরসভা মেয়র মো. আমজাদ হোসেন সরকার বিমানযোগে ঢাকা থেকে এসে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেন এবং সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস দেন। এদিকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে বুধবার রাতেই নীলফামারী থেকে ছুটে আসেন জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী। তিনি ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ প্রতি পরিবারকে ৫ হাজার টাকা, কম্বল বিতরণ করেন।
তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার, পিআই আবু হাসনাত সরকার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, পৌর কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু, আব্দুল খালেক সাবুসহ অন্যান্যরা।
এদিন, পৌরসভার পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে শাড়ি, লুঙ্গী, কম্বল, স্যান্ডেল বিতরণ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য শাড়ি, লুঙ্গী বিতরণ করেন ব্যবসায়ী হাজী মো. আলতাফ হোসেন। এছাড়া বুধবার দুপুর থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছেন কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডস অব হিউম্যানিটি, এসকেএস ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক। ওইসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করেছেন।         

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6438856901006564696

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item