কুড়িগ্রামে দেড় বছর ধরে স্কুলের পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বেতন তুলে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক

হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : 

অসুস্থ্য পরিচ্ছন্নতা কর্মীর হাতের টিপ সই নিয়ে পুরো চেকের পাতা নিজের কাছে রেখে দিয়ে মাসের পর মাস তার বেতন তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে। এমনকি উৎসব ভাতার টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী প্রতাপের কন্যা রেখা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের উত্তর পশ্চিম কোনে একটি জায়গায় ঘর করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করেন দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কর্মী শ্রী প্রতাপ।
প্রায় দুই বছর ধরে অসুস্থ্য জীবন যাপন করছেন তিনি। প্যারালাইজড হওয়ার কারণে তিনি স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না। অসুস্থ্য হওয়ার পর থেকে তাকে নিয়মিত বেতন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন প্রতাপের কন্যা রেখা। এমনকি গত দেড় বছর ধরে প্রতাপের বেতনের চেক বই টিপ সই নিয়ে নিজের কাছে রেখে প্রধান শিক্ষক নিজে বেতন তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ঐ পরিবারটির।

প্রতাপ স্পষ্ট করে কথা বলতে না পারায় প্রতাপের কন্যা রেখা জানান,  প্রতাপ নিয়মিত কাজ করতে না পারায় তার ছোট খালা বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। সাথে প্রতাপের ছেলে ও ছেলের বৌ মাঝে মাঝে প্রতাপের পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু মাস শেষে প্রতাপের বেতন তুলে নেন প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার। বিনিময়ে প্রতাপের বোনকে মাসে দুই হাজার টাকা দেওয়া হলেও প্রতাপ কিংবা ছেলে ও ছেলের বৌকে কোনও টাকা দেওয়া হয়না। প্রায় দেড় বছর ধরে এমনটাই করছেন ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
রেখা আরো জানান, দেড় বছর থেকে আমাদেরকে কোনও বেতন দেয়না। এর মধ্যে একবার বেতন ৪৫ হাজার টাকা তুলে আমাদেরকে মাত্র ১৫ হাজার টাকা হাতে দিয়েছে। গত ঈদে সবার সাথে আমাদের বেতন বোনাস হলেও হেড স্যার কোনও টাকা দেন নাই।
প্রতাপের টিপ সইকৃত চেক বই বারবার ফেরত চেয়েও না পেয়ে শেষে লিখিত আবেদন করলে গত সপ্তাহে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকার চেকবই ফেরত দেন বলে জানান প্রতাপের মেয়ে রেখা।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের সাথে ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ে দেখা করতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে বাইরে আছি। আমার সাথে দেখা হবে না। নিউজ করেন আমি পরে বিষয়টি দেখবো। এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি খোরশেদ আলম চাঁদ বলেন, ‘আমি সদ্য দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রতাপের পরিবার আমাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষককে বলে প্রতাপের চেকবই ফেরতের ব্যবস্থা করেছি। বাকি অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।