পীরগাছায় তিস্তায় তীব্র ভাঙন ,বিলীনের পথে একটি বিদ্যালয়

ফজলুর রহমান, পীরগাছা (রংপুর)॥
রংপুরের পীরগাছায় টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে অস্বাভাবিক হারে পানি বেড়েছে তিস্তা নদীতে। এতে নি¤œাঞ্চল প্লাবিতসহ দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। তিস্তা নদীর ভাঙনে পাঁচটি গ্রাম, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং একটি ক্লিনিক হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এসব এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছে।
সরেজমিনে ওই ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চর দক্ষিণ গাবুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন হুমকির মুখে। নদী ভাঙনের কালো থাবা হাত বাড়িয়েছে বিদ্যালয়টির দিকে। ভাঙন দূরত্ব কমতে কমতে এখন বিদ্যালয়টি নদীর মুখে। আর মাত্র ৪০ ফুট অংশ ভাঙলেই তিস্তায় তলিয়ে যাবে বিদ্যালয়টি। ওই বিদ্যালয়টি কয়েক বছর আগেও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যায়। পরে স্থান পরিবর্তন করে বর্তমান স্থানে নতুন করে ভবন নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে আবারো বিদ্যায়টি নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৩শ শিক্ষার্থী রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখন ভয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, নদী ভাঙন বিদ্যালয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে যেকোন সময় বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
২০১৭ সালে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের পূর্ব শিবদেব চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারপর থেকেই ভাঙনকৃত বিদ্যালয়ের অদূরের বাজারে একটি টিন শেড নির্মাণ করে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় ওই বিদ্যালয়টির অস্থায়ী শেডটিও হুমকীর মুখে পড়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে পাশের শিবদেব কমিউনিটি ক্লিনিকটিও বিলীনের আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ফসলী জমিসহ বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়েছে। বারবার নদী ভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলো এখন আশ্রয় হারিয়ে অন্যের ভিটায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে। স্থানীয়ভাবে কাজকর্ম না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত গাবুড়ার চর, শিবদের চর, কিশামত ছাওলা, পূর্ব হাগুরিয়া হাশিম, ছাওলা ও চর কাশিম গ্রাম তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এ ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে প্রতি বছর নদী পাড়ের লোকজনদের। তারা জানান, ছাওলার ১০নং বোল্ডারের পাড় থেকে আরও ৩ কিলোমিটার বোল্ডার দিয়ে বাধঁ নির্মাণ করে নদী শাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ১নং ও ২নং বেড়ি বাধঁ নির্মাণ করলেও বাঁধের পূর্ব পাড়ের গ্রামগুলো বন্যা ও নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা।
তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার হাসান আলী জানান, প্রতি বছর নদী ভাঙনের ফলে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে ছোট হয়ে আসছে। এ অঞ্চলে গত ৫ বছরে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জানান. বন্যার কারণে সদ্য রোপনকৃত আউশ ধান ও আমন বীজতলাসহ প্রায় ১৫  হেক্টর জমির রবি শস্য পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
 এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সহযোগীতা করা হবে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 473542305214002068

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item