ঘুষ ছাড়াই ২৮৬ জনের চাকরি প্রশংসিত রংপুরের পুলিশ সুপার

মামুনুর রশিদ মেরাজুল রংপুর ব্যুরোঃ

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধার ভিত্তিতে সর্বাধিক সংখ্যক দিনমজুর ও বর্গাচাষী পরিবারের ছেলে-মেয়রা নিয়োগ পেয়েছে। পরের অবস্থানে রয়েছে পিতৃহীন পরিবারের ছেলে-মেয়েরা। বাদবাকীরা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পরিবারের সন্তান। পুলিশের চাকুরী এতদিন সাধারণ মানুষের কাছে ছিল সোনার হরিণের মত কিন্তু সে ধারণা বদলে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী। দেশের সব জেলার মত রংপুর জেলাও সম্পন্ন হয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। ঘুষ ছাড়াই রংপুর জেলায় চাকুরী পেয়েছেন ২৮৬ জন। এদের প্রত্যেকের খরচ হয়েছে মাত্র ১০৩ টাকা। দালাল চক্র ভিড়তে পারেনি চাকুরী প্রাপ্তদের ধারের কাছে। মেধা ও যোগ্যতার বলে বিনা ঘুষে পুলিশে চাকুরী পেয়েছেন তারা। চাকুরী পাওয়ার সংবাদ শুনে খুশিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকের পিতা-মাতা। আর এম স্বচ্ছ নিয়োগের কারিগর হচ্ছেন রংপুরের জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। এ কারণে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।
পুুলিশ সুপারের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, এবারে রংপুর জেলার ৮ উপজেলার প্রায় ২হাজার চাকরী প্রার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ২৮৬জন নির্বাচিত হয়েছে। এদের মধ্যে বর্গাচাষী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা ভাল করেছে তাদের সংখ্যা ৫১ জন। পরের অবস্থানে রয়েছে দিনমজুর পরিবারের ছেলে-মেয়েরা ৩৫ জন। এ ছাড়া ১০জন রিকসা-অটোবাইক চালক, কাঠমিস্ত্রী ১০জন ও পিতৃহীন পরিবারের ২৬জন ছেলে-মেয়ে চাকরী পেয়েছে। বাদবাকী ১৭৪জন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পরিবারের সন্তান। এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা-উপজাতীসহ বিভিন্ন কোঠায় অনেকেই চাকরী পেয়েছেন।
এব্যাপারে পীরগঞ্জের জাহিদপুর গ্রামের দিনমজুর সাইফুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশে চাকুরী আমার কাছে স্বপ্নের ব্যাপার ভাবিনি চাকরী পাব। তবুও চাকরীর জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলাম দেখি কি হয়। আমি একজন দিনমজুর পরিবারের সন্তান টাকা দিয়ে চাকরী কোন পেতাম না। কারণ আমার বাবার দৈনন্দিন দিনজুরীর ওপর সংসার চলে।
কুমারী লিলিতা কুজুর নামের উপজাতি পরিবারের মেয়ে জানান, বাবা ধানাই কুজুর দিনমজুর। বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার গীরাই গ্রামে। মাত্র ১০৩টাকা খরচ করে তার চাকরী প্রাপ্তির আনন্দে কেঁদে ফেলে সে। তাদের পরিবারের জীবনটা বদলে যাবে।
এ রকম আরও কত নাম রাজমিস্ত্রীর মেয়ে দিলরুবা আকতার দিবা, মোনালিসা আক্তার, দিনমজুর পরিবারের মেয়ে তমা মরমু, কাঠ মিস্ত্রি পরিবারের সন্তান সাজ্জাতুল ইসলাম, দিনমজুরের সন্তান খোকন মিয়াসহ আরও যারা নির্বাচিত হয়েছে তারা নিজেরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, বিনা টাকায় পুলিশে চাকরী এটি তাদের কাছে স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়।
এদিকে রংপুরের সচেতন নাগরিকরা জানান, আগে শোনা যেত পুলিশের চাকুরী মানেই লাখ লাখ টাকা। কিন্তু মানুষের এমন শোনা কথা ও ধারণা বদলে দিয়েছে সরকার ও সংশ্লিষ্টরা। রংপুর জেলায় এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় আমরা পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
রংপুরের পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান  বলেন, এবার দালাল চক্রের প্রতারণা বন্ধে কঠোর নজরদারি করা হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার। চাকুরী পাওয়ার সংবাদ শুনে তাদের মুখে হাসি ও চোখের পানি আমাদের সফলতারই বার্তা দিয়েছে। সবার কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেউ প্রতারণার শিকার হয়েছে কি না? সবাই উত্তর দিয়েছেন আমরা সবাই আনন্দিত ও বিস্মিত। আমরা চাই পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভূল ধারণাগুলো বদলে যাক।###

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 4045460441982449981

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item