ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাছ তলায় সন্তান প্রসবের ঘটনায় ১০ মাসেও আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন

মেহেদী হাসান উজ্জল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা না পেয়ে খোলা আকাশের নীচে গাছতলায় প্রসুতির সন্তান প্রসব করার সেই আলোচিত ঘটনাটি, গত ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও, এখনো আলোর মুখ দেখেনী তদন্ত প্রতিবেদন। বহাল তবিয়ত্বে চাকুরী করছে সেই দিনে দায়িত্বে থাকা অভিযুক্ত নার্স ও মীড ওয়াইফগণ। চিহ্ন মুছে ফেলতে কেটে ফেলা হয়েছে সেই গাছ।
উল্লেখ্য গত ২০১৮ সালের ১২ আগষ্ট ফুলবাড়ী উপজেলার পার্শবতী পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বাঁশপুকুর গ্রামের ভ্যান চালক আবু তাহেরের স্ত্রী রীনা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে, তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা নার্স রোজিনা বেগম ও মীড ওয়াইফ আফরোজা বেগম ওই প্রসুতিকে সেবা না দিয়ে একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বের করে দেয়।
এসময় প্রসুতির প্রসব বেদনা আরো বৃদ্ধি পেলে, স্থানীয় কয়েকজন মহিলার সহযোগীতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে খোলা আকাশের নীচে একটি কামরাঙ্গা গাছের তলায় সন্তান প্রসব করে। এই ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশ হওয়ায়, সেই সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্য্যলয় থেকে তৎকালিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এনামুল হকের নেতৃত্বে ও দিনাজপুর সিভিল সার্জনের কার্য্যলয় থেকে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্য্যলয় থেকে সেই সময়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (রংপুর) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা: মোস্তাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে আরো একটিসহ মোট তিনটি পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি গঠন করার দির্ঘ ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন প্রর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্তের প্রতিবেদন, পক্ষান্তরে বহাল তবিয়ত্বে চাকুরী করছে অভিযুক্ত নার্স রেজিনা বেগম ও মীড ওয়াইফ আফরোজা বেগম।
শুধু তাই নয়, ঘটনাস্থানের চিহ্ন মুছে ফেলতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্তর থেকে কেটে ফেলা হয়েছে সেই কামরাঙ্গার গাছটিও।
এদিকে অভিযুক্ত নার্স ও মীড ওয়াইফ আস্থাভাজন কর্মকর্তা-কর্মচারী  হওয়ায়, তাদের রক্ষা করতে নানা প্রকার ততদ্বীর চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার সত্বে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নুরল ইসলামের স্বজনপ্রিতির কারনে অনেক অপরাধী পারপেয়ে যাচ্ছে, আর তার আস্থাভাজন না হতে পারলে অনেকে তার রোষানলে পড়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বজনপ্রিতির উদাহরণ দিয়ে বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নুরুন্নাহার বেগম নামে এক দাই নার্স তার সরকারী আবাসীকে নিয়ম অমান্য করে শিতাতাপ নিয়ন্ত্রনযন্ত্র (এসি) স্থাপন করে দেধারছে ব্যবহার করছে। অথচ অনেক কর্মকর্তা তাদের বাড়ীতে এসি ব্যবহার করতে পারছেনা।
এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুরল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে এখানে স্বজনপ্রিতির কোন ঘটনা নাই। ঘটনাস্থলের কামরাঙ্গার গাছটি কোথায়, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পরিছন্ন কর্মিরা ভুল করে কেটে নিয়ে গেছে।
এই বিষয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুছ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিভাগয়ি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষেন সিকট জমা দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে শুনানী চলছে, শুনানী শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে ভুক্তভুগী প্রসুতি রীনা বেগমেন স্বামী আবু তাহের ঘটনার কোন বিচার না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন গরিবের কোন বিচার নাই। এতোদিন হয়ে গেলো তবুও কোনো বিচার হলো না। শুধু আবু তাহের নয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সেই দিনে ওই প্রসুতিকে সাহায্য করা স্থানীয় বাসীন্দারাও।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 581820205849005622

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item