সৈয়দপুরে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা পেলেন ক্ষতিপূরণ

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। উপজেলার  ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণের ওই নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
 সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেন। এ সময় সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা  কৃষিবিদ বাসুদেব দাস, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আসাদুজ্জামান আশা, কৃষক প্রতিনিধি মো. শফিকুল আলম, মো. আলমগীর হোসেন, মো. আফছার আলী ও মো.আজিজুল ইসরামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ এপ্রিল সৈয়দপুর উপজেলার এক নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের কিসামত কামারপুকুর এলাকায় অবস্থিত একই মালিকের মেসার্স এম জেড এইচ ব্রিকস্ নামের দুইটি ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে আশপাশের জমির উঠতি বোরো ধান ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে পুঁড়ে যায়। ঋণ ও ধারকর্জ করে চাষাবাদ করা  ক্ষতিগ্রস্থ উঠতি বোরো ধান ক্ষেত দেখে কৃষকদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় অনেক কৃষক ক্ষেতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন; কেউবা করেন বিলাপ। এ নিয়ে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা  ইটভাটা মালিকের সাথে কথা বললে ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কোন পাত্তায় দিচ্ছিলেন না। উপরন্ত ইটভাটা মালিকদের দাবি প্রচন্ড খরতাপে কৃষকদের ওই সব বোরো ধান ক্ষেত পুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইটভাটার বিষাক্ত  ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রভাবে বিপুল পরিমাণ জমির বোরো ধানের ক্ষেত পুঁড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে গত ১ মে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. হোমায়রা মন্ডল, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্জাহান পাশাসহ কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এ সময় ঘটনাটি তদন্তের জন্য  চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব দাসের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা  কৃষিবিদ মো. আসাদুজ্জামান আশা, কামারপুকুর ইউপি’র  চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা।  এ তদন্ত কমিটি ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও জমির পরিমাণ নিরূপন করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও বরাবরে জমা দেন। এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. গোলাম কিবরিয়া বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে ১ মে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল অবলোকনসহ বিভিন্ন   জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক এবং স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে ইউএনও ইটভাটা মালিক মো. হারুন অর রশিদের সাথে আলোচনা করেন। অনেক দেন দরবারের পর ইটভাটা মালিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন। পরবর্তীতে ইটভাটা মালিক মো. হারুণ-অর-রশিদ তাঁর ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ও ধোঁয়ার প্রভাবে বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। আর কৃষি বিভাগের কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা ও জমির পরিমাণ অনুযায়ী  ১৭৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 9113372417278958034

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item