ফুলবাড়ী সরকারী কলেজ ২০ বছরেও কাটেনি শিক্ষক ও আবাসিক সংকট

মেহেদী হাসান উজ্জল, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সরকারী কলেজটি জাতীয় করনের ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও, এখনো সমাধান হয়নি শিক্ষক ও আবাসীক সংকটের। ২০ বছর পুর্বে জাতীয় করনের সময় যে ভবন ছিল আজও সেই ভবনেই চলছে ক্লাস । শ্রেনী কক্ষের অভাবে  নিয়মিত ক্লাস করতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
কলেজের প্রতিষ্টালগ্নে নির্মিত পুরাতন ভবনটি ছাত্রদের আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করলেও, ছাত্রীদের নাই কোন হোস্টেল। এছাড়া কলেজের শিক্ষকদের আবাসীক কোয়াটার না থাকায় তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারছেনা, ফলে বাহির থেকে চাকুরী করতে আসা শিক্ষকরা তদবির করে অন্যাত্র বদলি হয়ে চলে যাচ্ছে।
ফুলবাড়ী সরকারী কলেটিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজটির একাডেমিক ভবনের উত্তর দিকে তিন তলা বিশিষ্ট একটি মাত্র ভবনে চলছে একাদশ শেনী থেকে সম্মান শ্রেনী প্রর্যন্ত শিক্ষার্থীর ক্লাস , কলেজটিতে নেই কোন পৃথক ল্যাব ভবন। কলেজটি প্রতিষ্ঠা লগ্নে নির্মিত পুরাতুন ভবনটি এখন ছাত্র হোস্টেল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নজমুল হক বলেন, ফুলবাড়ী কলেজটি গত ১৯৮৯ সালের ৫ নভেম্বর জাতীয় করণ হলেও এখন প্রর্যন্ত কোন নতুন ভবন নির্মান হয়নি। গত ২০১১ সাল থেকে কলেজটিতে ৬টি বিষয়ে অনার্স চালু করার পর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, বাহির থেকে এসে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও তাদের থাকার কোন ব্যবস্থা নাই। এজন্য তারা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছেনা।
অধ্যক্ষ্য নজমুল হক বলেন বর্তমানে এই কলেজটি ১৫টি বিভাগের মধ্যে  বাংলা, ইংরাজি, রসায়ন, গনিত, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে অনার্স চালু রয়েছে, বর্তমানে এই করেজটিতে চার হাজারের অধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তিনি বলেন কলেজটিতে ১৫ বিভাগের ৫৭জন শিক্ষকের পদ থাকলেও  বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র ৩৭জন। ৫জন সহযোগী অধ্যাপক, ৩জন সহকারী অধ্যাপকসহ ২০জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

জানা গেছে, ফুলবাড়ীসহ আশপাশের শিক্ষার্থীরা যাতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে পারে, সেই লক্ষে এই এলাকার তৎকালিন শিক্ষানুরাগী, সমাজ সচেতন ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা ১৯৬৩ সালে ফুলবাড়ী পৌর শহরের পশ্চিম পার্শে শাখা যমুনা নদী ও ফুলবাড়ী দিনাজপুর সড়ক যা বর্তমানে দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়েরে পাশে প্রায় ২১ একর জায়গার উপর ফুলবাড়ী ডিগ্রী কলেজটি প্রতিষ্ঠা করে। কলেজটি প্রতিষ্টার পর থেকে, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ, পার্বতীপুর ও বিরামপুর উপজেলার শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাড়ায় এই কলেজটি। সুধু তাই নয় এই কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষার হার বৃদ্ধি পায়, এই কলেজটি এই অঞ্চলের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়, ১৯৬৯ এর গণআন্দোলন, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এই কলেজ থেকে এই অঞ্চলের নেতৃত্ব দেয়া হয়। পারবর্তিতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম এই কলেজ থেকে সুচনা করা হয়েছিল।
ফুলবাড়ী কলেজের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৮৯ সালের ৫ নভেম্বর এই কলেজটিকে জাতীয় করন করা হয়। কিন্তু কলেজটি জাতীয় করনের পর থেকে আজ প্রর্যন্ত কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। পক্ষান্তরে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা রাজনৈতিক ক্ষমতার ব্যবহার করে সরকারী কলেজের জায়গা দখল করার অপচেষ্ঠা করে যাচ্ছে।

ফুলবাড়ী সরকারী কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন এই কলেটিতে কোন উন্নয়নের ছোয়া পায়নি এতে করে কলেজটি পিছিয়ে পড়েছে, সেই সাথে এই অঞ্চলের শিক্ষাও পিছিয়েছে, সেই কারনে তারা কলেজটিতে শ্রেনী কক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসীক সংকট সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 7055358150903135756

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item