রোহিঙ্গা সংকট আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় : প্রধানমন্ত্রী

 
অনলাইন ডেস্ক



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট অন্য কোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয়। শান্তি, মানবতা ও উন্নয়নের মাধ্যমে কীভাবে বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটানো যায়, তার জন্য রোহিঙ্গা সংকট উদাহরণস্বরূপ।
আজ বৃহস্পতিবার জাপানে ইম্পেরিয়াল হোটেলে ‘এশিয়ার ভবিষ্যৎ বিষয়ক’ ২৫তম আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী এ বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু মানবিক আবেদনেই সাড়া দিচ্ছি না; এই সংকট যেন বিশৃঙ্খলা ও আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার দিকে না যায় সে বিষয়েও সচেতন রয়েছি। তীব্র উত্তেজনা ও সংকটের মুখেও এ সমস্যা সমাধানের জন্য সংলাপ ও ঐকমত্য চেয়েছি আমরা।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের সদস্য হিসাবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থিতিশীল ও টেকসই বিশ্ব ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সব বন্ধু ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাবে।
তিনি বলেন, ‘মানব সভ্যতাকে যুদ্ধের বিভিষিকার শিকার হতে হয়েছে বহুবার, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমি বিশ্বাস করি, শক্তিশালী, যৌক্তিক ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বে দেশে দেশে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জগুলো যদি আমরা মোকাবিলা করতে পারি, তা ভালো ফলই বয়ে আনবে।’
এশিয়াকে আরও ভালোভাবে গড়ে তোলার জন্য অনুষ্ঠানে একজন মূল বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কিছু অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় তুলে ধরেন।
এশিয়ার উন্নয়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশিয়ার ভবিষ্যৎ টেকসই ও সুষম উন্নয়নের ওপর নির্ভর করে। এশিয়ার দেশগুলোকে উদার মনমানসিকতা, অংশগ্রহণ, সাম্য, সুবিধা বিনিময় ও  যৌথ অবদানের মাধ্যমে একে অপরকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।
যৌথভাবে উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার জন্য আমরা একত্র হতে পারি।
শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার গল্প সম্মেলনে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এশিয়ার দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্য উদারীকরণের নীতি সমর্থন করে এলেরও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতির বাধা ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন দেশের ওই সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতি বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের উসকানি দিচ্ছে। অর্থনীতির সহজ কথা হল, শুল্ক যদি বাড়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার কমবে। আমি আশা করব, বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার মধ্যে সংরক্ষণমূলক বাণিজ্য নীতির প্রবণতা কমিয়ে আনতে কী করা যায় এবং এক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা কীভাবে আরও বাড়ানো যায়- সেই পথনির্দেশ এই ফোরাম থেকে উঠে আসবে।
এ বিষয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্ব নানাভাবে চ্যালেঞ্জ ও সংঘাতের মুখোমুখি। বিশ্বকে আরও উন্মুক্ত করতে, ঐক্যের বন্ধনকে আরও মজবুত করার অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের মোকাবেলা করতে হবে যৌথভাবে; ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে রক্ষা করতে হবে। উদ্ভাবনী ধারণা ও পদক্ষেপ নিয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বাড়াতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বৃহত্তর ঐক্যের স্বার্থে বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোতে আরও উদ্ভাবনী অনুশীলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সবার জন্য লাভজনক হয়, সব মানুষের যাতে মঙ্গল হয়- তেমন একটি কৌশল নির্ধারণ করতে হবে  অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, যা গড়ে উঠবে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান এবং ঐক্যবদ্ধ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির চেতনা নিয়ে।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতা, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও তাত্ত্বিকদের অংশগ্রহণে বৃহস্পতিবার সকালে টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ছাড়াও ‘আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি’ হিসেবে পরিচিত মাহাথির মোহাম্মদ, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে অংশ নিচ্ছেন এ সম্মেলনে।

পুরোনো সংবাদ

প্রধান খবর 2123517842453152899

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item