বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছাড়াচ্ছে ‘‘একতা প্রতিবন্ধী’’ স্কুল
https://www.obolokon24.com/2019/04/thakurgaon_30.html
আব্দুল আওয়াল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ জিল্লুর রহমান, পাঞ্জাব, সুবর্না, সাবিনা, ফাতেমা, পপি রানী, বলরাম, দিপু, ইতি, বানু, সুমাইয়া, পুতুল, কালাম, জাকির হোসেন, রুবিনা তারা কেউ বাক প্রতিবন্ধী, কেউ শারীরিক আবার কেউ কেউ মানষিক কেউ শ্রবণ, কেউ আবার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তারা একটা সময় সমাজে অবহেলায় অনাদরে জীবন যাপন করতো। তারাও যে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও দশের হাল ধরতে পারে এমন চিন্তা সমাজের অনেক মানুষের মাথায় কম আসে। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় বরং তারা একেকজন সমাজের একেকটি সম্পদ। আর প্রতিবন্ধীদের দেশের সম্পদ করে তোলার জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। এমন চিন্তা থেকেই মাত্র ১৫ জন প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে নিজ উদ্যোগে ২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে রায়পুর ইউনিয়নের আরাজী ঝাড়গাঁও নামক স্থানে একতা প্র্রতবন্ধী স্কুল ও পূর্ণবাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন মো: আমিনুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়ে সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্র্রায় ১১ বছর ধরে প্রত্যন্ত জনপদে ‘প্রতিবন্ধীদের বাতিঘর’ হয়ে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। প্র্রতবন্ধী সন্তান নিয়ে হতাশাগ্রস্থ পরিবারগুলো ভরসাস্থল হিসেবে দেখে এ স্কুলকে। ব্যতিক্রমী এ স্কুলে বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা চার শত জনেরও অধিক।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে শিক্ষা দেয়া হয় আচরণ ব্যবস্থাপনা, মনোযোগ উন্নয়ন, দায়িত্ব জ্ঞান বৃদ্ধি করা, সু-অভ্যাস গড়ে তোলা, মেলামেশার মানসিকতা বৃদ্ধি করা, নির্দিষ্ট সময়ে দৈনিক কাজগুলো করা। ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, মেলামেশার দক্ষতা ও মানসিকতা বৃদ্ধিতে দলগত কাজে অংশগ্র্রহণ করা, পারস্পরিক কাজে কার্যক্রমে অংশগ্রগণ করা, সহপাঠীদের সহায়তা করা। ইশারা ভাষা, অঙ্গভঙ্গি, ওষ্ঠ পঠন, মৌখিক অভিব্যক্তি, বাক পঠন শিক্ষা দেয়া হয় যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য। শিশুদের আগ্রহ ও দৈনন্দিন কার্যাবলির ছবিসহ ইশারা শেখানো, প্রতিবন্ধী শিশুর অভিভাবকদের ইশারায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা, কথা বলার সময় দৃষ্টি সংযোগ করা ও একটু উচ্চ স্বরে স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলাসহ ইত্যাদি। এ ছাড়া শিক্ষা দেয়া হয় বর্ণ পরিচয়, মৌলিক শব্দমালার ব্যবহার সহ আরও অনেক শিক্ষা। এছাড়াও দেশ প্রেম জাগিয়ে তোলার জন্য শেখানো হয় জাতীয় সঙ্গীত। প্রতিনিয়ত ধারণা দেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে। এছাড়াও আত্মনির্ভর করার জন্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় কারিগরি শিক্ষা।
তবে এ প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষার প্রসারেই রয়েছে নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা। ক্রমে ক্রমে নানা সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবু থেমে নেই প্রচেষ্টা। লক্ষ্য একটাই সমস্ত বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানো। প্রায় ৩ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের আশপাশের প্রতিবন্ধীরা এখন এ স্কুলের শিক্ষায় আলোকিত। প্রতিষ্ঠানটিতে ২ শিফটে ২৫ জন অটিজম বিষয়ে দক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে এসকল শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করে আসছে কর্তৃপক্ষ অতি যতœ সহকারে। তারা বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদান করে আসছেন। মাঝে মাঝে স্থানীয় ব্যক্তিদের যে দান সহায়তা পাওয়া যায় তা চক, ডাস্টার, পেন্সিলসহ নানা শিক্ষা উপকরণই ঠিক মতো কেনা হয়না।
প্রতিবন্ধী স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ের আশপাশের ৩ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী শিশুরা এই পূনর্বাসন কেন্দ্রে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। বিদ্যালয়ের পরিচালক নিজ উদ্যোগে দুটি পিকআপ গাড়ি কিনে প্রতিবন্ধী শিশুদের বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া আসা করে। তবে অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে পড়লে দূরের অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাসে আসতে পারে না।
স্কুলের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, স্কুলে আসতে তার অনেক ভালো লাগে। সে পড়ালখা করে ডাক্তার হতে চায়।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষক ধনেশ চন্দ্র বলেন, আমরা নিজ উদ্যেগে ও নিজ খরচে স্কুলটি পরিচালনা করছি। সমাজের বিত্তবান দানশীল মানুষ এবং সরকারি বেসরকারি দাতা সংস্থার সহযোগিতা পেলে একতা প্রতিবন্ধী স্কুল ও পূণর্বাসন কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হবে। আলো ছড়াবে প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে, হাসি ফুটবে প্রতিবন্ধী শিশুর বাবা-মার মুখে।
আরেক শিক্ষিকা বিলকিস নেহার বানু জানান, এই স্কুলে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেক শিক্ষার্থীর ভর্তি বাকি রয়েছে। আমরা তাদেরকে ভর্তি নিতে পারছি না স্কুলের শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী চলাফেরা কতে পারে না, কথা বলতে পারে না, কিছু বোঝে না তবু কষ্ট করে হলেও আমরা তাদেরকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কোনো বেতন নেই। নিজ খরচে স্কুলটি পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাই সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুলের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্র্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে আমাকে প্রতিনিয়ত অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমাদের এইখানে পুণর্বাসন কেন্দ্রে বেশি ছাত্র-ছাত্রী রাখার ব্যবস্থা নেই। আর বর্তমানে আমার নিজ বাসভবনে ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অনুযায়ী পর্যাপ্ত টেবিল-চেয়ার, প্রতিবন্ধী বান্ধব শ্রেণিকক্ষ নেই। স্কুলের সীমানা প্রাচীর অর্থের অভাবে এখনো করতে পারছি না। তা অতিব জরুরী। শীতকালে ও গরম কালে এখানে শিক্ষার্থীদের থাকতে অনেক কষ্ট হয়। তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদানের জন্য আমদের প্রতিষ্ঠানে কোনো কম্পিউটার নেই। শিশুদের চিকিৎসার জন্য আমাদের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থাকলেও ডাক্তার ও ঔষুধের অভাবে শিশুদের চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষা দানের জন্য প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত উপকরণ না থাকায় শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিতে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ-হাসিনা প্র্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নীরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাই আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুণর্বাসন কেন্দ্রটিকে সরকারি সুযোগ সুবিধা ও শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান করলে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিবন্ধী শিশুদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন ভাতা পেলে তাদের মানবেতর জীবন যাপন অনেকাংশ লাঘব হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, আমিনুল ইসলাম নিজ উদ্যেগে প্রতিবন্ধীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এটি একটি দৃষ্টান্ত এবং নি:সন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। তার মতো সমাজের সকল মানুষ যদি এই অসহায় প্রতিবন্ধীদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে আলোকিত হয়ে উঠবে আমাদের সমাজ। তিনি আরও বলেন, বিজিবি ও ইতিমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানে সাহায্য করেছে এবং আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যতদূর সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করছি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনবার্সন কেন্দ্র এখন প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবকদের আস্থার অন্যতম একটি ঠিকানা। কিন্তু এখানকার শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে তাদের বেতন ভাতা হোক এ অনুরোধ শিক্ষক অভিভাবক সহ সুশিল সমাজের।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে শিক্ষা দেয়া হয় আচরণ ব্যবস্থাপনা, মনোযোগ উন্নয়ন, দায়িত্ব জ্ঞান বৃদ্ধি করা, সু-অভ্যাস গড়ে তোলা, মেলামেশার মানসিকতা বৃদ্ধি করা, নির্দিষ্ট সময়ে দৈনিক কাজগুলো করা। ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, মেলামেশার দক্ষতা ও মানসিকতা বৃদ্ধিতে দলগত কাজে অংশগ্র্রহণ করা, পারস্পরিক কাজে কার্যক্রমে অংশগ্রগণ করা, সহপাঠীদের সহায়তা করা। ইশারা ভাষা, অঙ্গভঙ্গি, ওষ্ঠ পঠন, মৌখিক অভিব্যক্তি, বাক পঠন শিক্ষা দেয়া হয় যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য। শিশুদের আগ্রহ ও দৈনন্দিন কার্যাবলির ছবিসহ ইশারা শেখানো, প্রতিবন্ধী শিশুর অভিভাবকদের ইশারায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা, কথা বলার সময় দৃষ্টি সংযোগ করা ও একটু উচ্চ স্বরে স্পষ্ট উচ্চারণে কথা বলাসহ ইত্যাদি। এ ছাড়া শিক্ষা দেয়া হয় বর্ণ পরিচয়, মৌলিক শব্দমালার ব্যবহার সহ আরও অনেক শিক্ষা। এছাড়াও দেশ প্রেম জাগিয়ে তোলার জন্য শেখানো হয় জাতীয় সঙ্গীত। প্রতিনিয়ত ধারণা দেওয়া হয় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে। এছাড়াও আত্মনির্ভর করার জন্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় কারিগরি শিক্ষা।
তবে এ প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক শিক্ষার প্রসারেই রয়েছে নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা। ক্রমে ক্রমে নানা সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবু থেমে নেই প্রচেষ্টা। লক্ষ্য একটাই সমস্ত বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানো। প্রায় ৩ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের আশপাশের প্রতিবন্ধীরা এখন এ স্কুলের শিক্ষায় আলোকিত। প্রতিষ্ঠানটিতে ২ শিফটে ২৫ জন অটিজম বিষয়ে দক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে এসকল শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করে আসছে কর্তৃপক্ষ অতি যতœ সহকারে। তারা বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষাদান করে আসছেন। মাঝে মাঝে স্থানীয় ব্যক্তিদের যে দান সহায়তা পাওয়া যায় তা চক, ডাস্টার, পেন্সিলসহ নানা শিক্ষা উপকরণই ঠিক মতো কেনা হয়না।
প্রতিবন্ধী স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ের আশপাশের ৩ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী শিশুরা এই পূনর্বাসন কেন্দ্রে লেখাপড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। বিদ্যালয়ের পরিচালক নিজ উদ্যোগে দুটি পিকআপ গাড়ি কিনে প্রতিবন্ধী শিশুদের বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া আসা করে। তবে অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে পড়লে দূরের অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাসে আসতে পারে না।
স্কুলের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, স্কুলে আসতে তার অনেক ভালো লাগে। সে পড়ালখা করে ডাক্তার হতে চায়।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষক ধনেশ চন্দ্র বলেন, আমরা নিজ উদ্যেগে ও নিজ খরচে স্কুলটি পরিচালনা করছি। সমাজের বিত্তবান দানশীল মানুষ এবং সরকারি বেসরকারি দাতা সংস্থার সহযোগিতা পেলে একতা প্রতিবন্ধী স্কুল ও পূণর্বাসন কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হবে। আলো ছড়াবে প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে, হাসি ফুটবে প্রতিবন্ধী শিশুর বাবা-মার মুখে।
আরেক শিক্ষিকা বিলকিস নেহার বানু জানান, এই স্কুলে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। কিন্তু এখনো অনেক শিক্ষার্থীর ভর্তি বাকি রয়েছে। আমরা তাদেরকে ভর্তি নিতে পারছি না স্কুলের শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী চলাফেরা কতে পারে না, কথা বলতে পারে না, কিছু বোঝে না তবু কষ্ট করে হলেও আমরা তাদেরকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কোনো বেতন নেই। নিজ খরচে স্কুলটি পরিচালনা করতে হচ্ছে। তাই সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
একতা প্রতিবন্ধী স্কুলের পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্র্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে আমাকে প্রতিনিয়ত অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমাদের এইখানে পুণর্বাসন কেন্দ্রে বেশি ছাত্র-ছাত্রী রাখার ব্যবস্থা নেই। আর বর্তমানে আমার নিজ বাসভবনে ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অনুযায়ী পর্যাপ্ত টেবিল-চেয়ার, প্রতিবন্ধী বান্ধব শ্রেণিকক্ষ নেই। স্কুলের সীমানা প্রাচীর অর্থের অভাবে এখনো করতে পারছি না। তা অতিব জরুরী। শীতকালে ও গরম কালে এখানে শিক্ষার্থীদের থাকতে অনেক কষ্ট হয়। তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের পাঠদানের জন্য আমদের প্রতিষ্ঠানে কোনো কম্পিউটার নেই। শিশুদের চিকিৎসার জন্য আমাদের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থাকলেও ডাক্তার ও ঔষুধের অভাবে শিশুদের চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষা দানের জন্য প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত উপকরণ না থাকায় শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিতে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ-হাসিনা প্র্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নীরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাই আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুণর্বাসন কেন্দ্রটিকে সরকারি সুযোগ সুবিধা ও শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান করলে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিবন্ধী শিশুদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেতন ভাতা পেলে তাদের মানবেতর জীবন যাপন অনেকাংশ লাঘব হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, আমিনুল ইসলাম নিজ উদ্যেগে প্রতিবন্ধীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এটি একটি দৃষ্টান্ত এবং নি:সন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। তার মতো সমাজের সকল মানুষ যদি এই অসহায় প্রতিবন্ধীদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে আলোকিত হয়ে উঠবে আমাদের সমাজ। তিনি আরও বলেন, বিজিবি ও ইতিমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানে সাহায্য করেছে এবং আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠনটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যতদূর সম্ভব সাহায্য সহযোগিতা করছি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
একতা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন স্কুল ও পুনবার্সন কেন্দ্র এখন প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবকদের আস্থার অন্যতম একটি ঠিকানা। কিন্তু এখানকার শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে তাদের বেতন ভাতা হোক এ অনুরোধ শিক্ষক অভিভাবক সহ সুশিল সমাজের।