মন্ত্রণালয়ের আদেশ উপেক্ষা॥ জেলা পরিষদের মামলায় থমকে আছে নীলফামারী পৌরসভার উন্নয়ন কাজ

বিশেষ প্রতিনিধি ৮ এপ্রিল॥ নীলফামারী পৌরসভার কাছে হস্তান্তর হওয়া জায়গা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ অভিযোগ তুলেছেন।
আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) তিনি জানান, দীর্ঘ দিন থেকে জেলা পরিষদের হস্তান্তর হওয়া জায়গা পৌরসভার নিজস্ব স¤পত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও হঠাৎ করে জেলা পরিষদের মালিকানা দাবি করে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাধা সৃষ্টি করেছে। এতে শেখ রাসেল শিশু পার্ক ও বহুতল ভবনের মার্কেট নির্মানের কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থমকে গেছে। এমন জটিলতায় পৌর নাগরিকগণ মনে করছে উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি করে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঠিক হবে না, যাতে অগ্রসর জেলার দিকে ধাবিত হওয়া নীলফামারী যেন পিছিয়ে না পড়ে।

নীলফামারী পৌরসভা সুত্র জানায়, ১৯৬২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯৬৮ সালের ১৫ জুন তৎ সময়ে রংপুর জেলা পরিষদের সাধারণ অধিবেশনের ১২ নম্বর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৭৪ সালে নীলফামারী পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রয়াত আহসান আহমেদ হাচানের কাছে ২.৮১ একর জায়গা হস্তান্তর করা হয়। ওই জমির মধ্যে ১.১৪ একরের ওপর নীলফামারীর প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী খয়রাত হোসেনের নামে খয়রাত হোসেন মার্কেট নির্মাণ করা হয়।
পরবর্তীতে ৮২ শতাংশ জমির ওপরে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নিতকরণ (সেক্টর) প্রকল্প-২র আওতায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ তলা ভিত বিশিষ্ট পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ এবং ৫৮ শতাংশের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ১৯ পৌরসভা প্রকল্পের আওতায় ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল শিশু পার্ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আনজুমান আরা স্বাক্ষরিত পত্রে শিশু পার্ক নির্মাণ, রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন এবং নগর উন্নয়নের স্বার্থে নীলফামারী জেলা পরিষদের মালিকানাধীন দাগ নং ১০০০-এ .২৭ একর, দাগ নং ৮২৭-এ ১.১৪ একর, ৫৯৫১-এ .৮২ একর, দাগ নং ৮২২, ৮২৩, ৮২৪ ও ৮২৫-এ .৫৮ একরসহ মোট ২.৮১ একর জায়গা নীলফামারী পৌরসভার কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়। ২০১৮ সালের মে মাসে মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ উপেক্ষা করে উল্লেখিত জায়গা জেলা পরিষদের দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ওইসব জায়গার ওপর স্থিতিবস্থা জারি করেন উচ্চ আদালত।

এ ব্যাপারে দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, যথাযথভাবে জেলা পরিষদের ২.৮১ একর জায়গার মালিক হয়েছে নীলফামারী পৌরসভা। নীলফামারী পৌরসভা এগিয়ে যাচ্ছে সব দিক থেকে। যার সুফল ভোগ করছেন পৌরসভার সম্মানিত বাসিন্দারা।
পৌরসভার মেয়র অভিযোগ করেন, ওইসব জায়গার ওপর উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু বাধা দেয়া হচ্ছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। মূলত নীলফামারীকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাখতেই এমনটি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে খয়রাত হোসেন মার্কেটটি আন্ডার গ্রাউন্ড পার্কিংসহ আধুনিক মানের মার্কেটে রূপান্তরের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছিল, সেটি স্থগিত হয়ে আছে। পরিত্যক্ত
একটি ডোবা ভরাট করে সেখানে শেখ রাসেল শিশু শিশু পার্ক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু জেলা পরিষদ মামলা করলো- যার কারণে পৌর সুপার মার্কেটের সম্প্রসারণ, খয়রাত হোসেন মার্কেট এবং শিশু পার্কের কাজ বন্ধ রয়েছে। মেয়র মনে করেন আদালত নিশ্চয় সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন।

নীলফামারী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল কবির বলেন, নীলফামারী পৌরসভার অফিস ভবন ছাড়া আর কিছু নেই। পৌরসভার নিজস্ব কোনো স¤পত্তি নেই। সকল জায়গার মালিক জেলা পরিষদ।এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।
 নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সবার আগে দেখতে হবে সবার আগে উন্নয়ন। এক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা করা যেত।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি, শিশু পার্কের জায়গাটি পৌরসভাকে দেয়া হয়েছে। অথচ সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে মামলা করা সঠিক কাজ হয়নি জেলা পরিষদের।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন জেলা পরিষদের যে সকল জায়গা রয়েছে তা চেয়ারম্যান হিসাবে আমার রক্ষনা বেক্ষনের দায়িত্ব। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6129620450943515665

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item