দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের স্বপ্ন জগৎ পার্ক

আব্দুল আওয়াল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে রুহিয়া হাইওয়ের পার্শে¦ ৩ নং আক্চা ইউনিয়নের পুরাতন ঠাকুরগাঁও নামক স্থানে অবস্থিত স্বপ্ন জগৎ পার্কটি  নজর কেড়েছে বিনোদন পিপাশু দর্শনার্থীদের । নজর কারার কারন হিসেব এই পার্কে রয়েছে একটি  দৃষ্টি নন্দিত পুকুর। পুকুর ঘিরে সুপারি গাছ আর শিক্ষা মূলক ভাস্কর্য সহ নানা রকম বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর ভাস্কর্য যেন স্বাগত জানাতে মরিয়া হয়ে আছে একেকটা দর্শনার্থীকে । পাখির কিচির মিচির শব্দের সাথে যেন মন মিশে একাকার দর্শনার্থীদের। সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাজে যেন সেজেছে এ পার্কটি।
এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের কথা ভেবে নিজ উদ্যোগে নিজ অর্থায়নে পার্কটি ২০১৭ সালে ৮ একর জামির উপর প্রতিষ্ঠা করেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: গোলাম সারোয়ার চৌধুরী। শুক্রবার ছুটির দিনে পার্কটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দর্শনার্থীদের  উপচে  পরা ভীর। কেউ প্রাইভেট কারে, কেউ রিক্সায়, কেউ বা মোটর সাইকেলযোগে জেলার অনেক সম্মানীয় ব্যক্তি স্ব-পরিবারে স্বপ্ন জগৎ পার্কে আসছেন সময় কাটাতে। তাদের মধ্যে কেউ, শিক্ষক, কেউ আইনজীবি, কেউ আবার সরকারি চাকুরিজীবি। শুধু বিনোদন নয় পার্কটিতে ঘুরলে দেখা যায় এবং শেখা যায় শিক্ষনীয় অনেক কিছু এমনটি জানালে একাধিক দর্শনার্থী।
পার্কে ঘুরার পর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন দর্শনার্থী বিকাশ চন্দ্র সেন। তিনি জানান, ছুটির দিনে বা অবসর সময় কাটানোর জন্য  পরিবেশ বান্ধব জায়গা হলো স্বপ্ন জগৎ  পার্ক। এখানে সব বয়সী মানুষ বেড়াতে এসে একদিকে যেমন বিনোদিত হবে অন্যদিকে জানতে পারবে বাংলার সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। সামাজিক কুলশতার বিরুদ্ধে এবং অনেক নৈতিকতার পক্ষে এ পার্কটি ব্যপক অর্থ বহন করে। বিশেষ করে এ পার্কটি একটি শিশুর মেধা বিকাশে ব্যপক ভূমিকা পালন করে। এখানে শিশুদের জন্য যেমন রয়েছে খেলাধুলার ব্যবস্থা তেমনি রয়েছে তাদের জানানোর জন্য নানা অজানা তথ্য।
আরেক দর্শনার্থী মাসুম আলী জানান, আমি নানকার আন্দোলন ও তেভাগা আন্দোলন সম্পর্কে জানতাম না, কিন্তু স্বপ্ন জগৎ পার্কে বেড়াতে এসে আমি এ আন্দোলনগুলোর সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমি এখানকার মনোমুদ্ধকর পরিবেশ দেখে যেমন বিনোদিত হয়েছি তেমনি আমি জানতে পেরেছি অজানা আরও অনেক কিছু। এখানে এমন কিছু ভাস্কর্য রয়েছে যেগুলো সত্যি অসাধারন। আমি বলতে চাই স্বপ্ন জগৎ পার্কটি শুধু একটি বিনোদন কেন্দ্র নয় এটি সব বয়সী মানুষের জন্য একটি শিক্ষা কেন্দ্রও বটে।
পার্কটির ব্যপারে জানতে চাইলে পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার চৌধুরী বলেন, বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে নয় বরং শিক্ষা ও বিনোদনের কথা মাথায় রেখে আমি এ পার্কটি প্রতিষ্ঠা করি এবং মানুষের স্বপ্নের কোন শেষ থাকেনা এই ভেবে আমি পার্কটির নামকরণ করি ‘স্বপ্ন জগৎ’। নানা প্রতিকূলতা ও  প্রতিবন্ধকতার সাথে সংগ্রাম করে আমি নিজ প্রচেষ্টায় এ পার্কটি এখনো বাঁচিয়ে রেখেছি। একটি সুস্থ ও পরিবেশ বান্ধব সামাজিক বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হিসেবে এ পার্কটির মাধ্যমে মানুষের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই অনন্তকাল। তিনি বলেন এই পার্কে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারন এখানে সব সময় দর্শনার্থীদের ভালোমন্দ দেখাশোনা করার জন্য প্রতিনিয়ত একাধিক স্টাফ তদারকি করে থাকেন। শিশুদের বিনোদনের ক্ষেত্রে পার্কের জনপ্রিয়তার ব্যপারে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বিশেষ করে শিশুদের বিনোদনের কথা চিন্তা করে আমি পার্কটি সাজানোর চেষ্টা করে চলেছি। শিশুদের জন্য রয়েছে  খেলাধূলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা এবং রয়েছে একটি চিরিয়াখানা। পার্কে যেসব ভাস্কর্য ও বিভিন্ন সাইনবোর্ডে শিক্ষামূলক কথা রয়েছে তা একটি শিশুর মেধা বিকাশে ও তাদের দেশ ও দশের  প্রতি দায়িত্ব করে তুলতে ব্যপক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়াও স্বপ্ন জগৎ পার্কে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে রয়েছে ধুমপানমুক্ত স্বপ্ন জগৎ ফুড কর্ণার। এখানে বিড়ি, সিগারেট ব্যতিত প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। এই পার্কে বনভোজন, জন্মদিন, বিবাহ সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানও করা যায় এমনটিও জানালেন পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা। এ সময় তিনি সবাইকে একবার হলেও স্বপ্নজগৎ পার্কটি ঘুরে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 8333616487817393730

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item