সৈয়দপুরে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা ,মিল মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দূষছেন

তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 নীলফামারীর সৈয়দপুরে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত। এতে করে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। চলতি আমনের ভর মৌসুমে গত এক সপ্তাহ জুড়ে কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। চালের মূল্য বৃদ্ধিতে খুচরা ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের ওপর  দোষারোপ করলেও মিল মালিকরা দূষছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের।
সরেজমিনে সৈয়দপুরের চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরণের চালের দাম খুচরা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। ফলে খুচরা বাজারেও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সমানভাবে। বিশেষ সাধারণ মানুষ যে চাল বেশি কেনেন সেই সব চালের দামই বেড়েছে। তবে সরু চালের দাম তেমন বাড়েনি। বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরের গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৩ টাকা, বিআর আটাশ ৪০ টাকার স্থলে ৪৪ টাকা, বিআর ঊনত্রিশ ৩৬ টাকার স্থলে ৩৮ টাকা, মিনিকেট ৫০ টাকার স্থলে ৫২-৫৩ টাকায় ও কাটারী ৭০ টাকার স্থলে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সরু ও কালোজিরা চালের দাম স্থির রয়েছে। এসব চালের দাম বাড়েনি। চালের দর হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। আমনের এই ভর মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়াকে অস্বাভাবিকভাবে দেখছেন ক্রেতারা।
সৈয়দপুর চাল আড়ত বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা চালের দাম বাড়াচ্ছেন। তাদের দাম বৃদ্ধির কারণে খুচরা বাজারে চালের দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তাদের কিছু করার নেই।
তবে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের এমন কথা খন্ডন করে মিল মালিকরা বলছেন চালের মূল্য বৃদ্ধি হয়নি। বরং স্বাভাবিকের চাইতে অনেক কম দরে মিল থেকে চাল বিক্রি করা হচ্ছে।
শহরের খুচরা চাল ব্যবসায়ী  বাবু জানান, মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় তাদের বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। যার জন্য বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে মিল মালিক চালের সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় বাজারে চালের সংকট রয়েছে। পরিণতিতে দাম কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
চালের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মুঠোফোনে সৈয়দপুর আফজাল অটোরাইস মিলের সত্বাধিকারী মো. আফজাল হোসেনের সাথে কথা হলে বর্তমানে চালের সংকট নেই জানিয়ে তিনি বলেন, চালের বাজার বৃদ্ধি হয়নি। সরকারি দর ৩৬ টাকা, কিন্তু আমরা  বিক্রি করছি ২৭ টাকা কেজি হিসেবে ৫০ কেজির গুটি স্বর্ণা চাল ১৩৫০ টাকায়। তিনি বলেন খুচরা ব্যবসায়ীরা মূল্য বৃদ্ধি করে চাল বিক্রি করছে, অথচ দোষ চাপাচ্ছে মিলারদের ওপর। তিনি আরও বলেন, আমন মৌসুমে বিআর-২৮, বিআর-২৯ ও মিনিকেট চালের ধান উৎপাদন হয় না। এ সময় এসব চালে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এসব চালের দাম সহনীয় মাত্রায় রয়েছে। মোটা চালের দাম বাড়েনি। স্বাভাবিকের চাইতে চালের বাজার কম রয়েছে জানিয়ে ওই মিল মালিক বলেন খুচরা ব্যবসায়ীরাই কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম রেজু জানান, চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বাড়লেও এটাকে দাম বৃদ্ধি চলা যাবে না। বরং উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম স্বাভাবিক রয়েছে। আগে যে দামে চাল বিক্রি হয়েছে তাতে মিল মালিকদের লোকসান গুণতে হয়েছে। এছাড়াও বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা কিছুটা হলেও উপকৃত হচ্ছেন। ফলে চালের দামে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। এটি বাজার ব্যবস্থার স্বাভাবিক রীতি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6452003744054966630

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item