মুক্তিযোদ্ধা বুলবুলকে গার্ড অব অনার

 
বিনোদন ডেস্ক

না ফেরার দেশে চলে যাওয়া হাজারও কালজয়ী জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ও কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়েছে।


কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুধবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটের দিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়।


এর পর পরই সর্বস্তরের মানুষ তাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি এ সময় বলেন, ‘আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল শুধু গানের জন্য নয় দেশের প্রতি যে অবিস্মরণীয় ভালোবাসা দেখিয়েছেন তা ভোলার নয়। ২০১২ সালে গঠিত মানবতাবিরোধী অপারাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষ্য দেন তিনি। যার কারণে পরে তার ভাই খুন হন। তার প্রতি আমাদের দেশবাসীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইল। ’

শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মনির খান বলেন, বাংলার মাটি, মানুষ ও পতাকা বুলবুল ভাইকে কখনও ভুলবে না। তার গান ও ত্যাগ কখনও ভুলতে দেবে না।

শয়ে শয়ে কালজয়ী বাংলা জনপ্রিয় গানের এ সুরকার, গীতিকার ও সংগীতশিল্পীর লাশ বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহীদ মিনারে নেয়া হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানান।

গুণী এ শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে আগে থেকেই নানা পেশার অসংখ্য মানুষ জড়ো হন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে একসময় তার সঙ্গে কাজ করা সংগীত, চলচ্চিত্র অঙ্গনেরও অনেকে হাজির হন।

শহীদ মিনারে ১২টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা জানানো শেষে লাশ নেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। মসজিদ প্রাঙ্গণে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাজা।

সেখানে জানাজা শেষে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি)। সেখানে হবে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। এর পর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে।

অসংখ্য বাংলা জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর আফতাব নগরের বাসায় হার্টঅ্যাটাকে মারা যান।

বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে সংগীত ও শিল্পাঙ্গনে। তার অকালে চলে যাওয়া সহকর্মীদের কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শোকে স্তব্ধ সবাই।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৮ সালে 'মেঘ বিজলী বাদল' ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন।

সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, সৈয়দ আবদুল হাদি, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, কনকচাঁপাসহ বাংলাদেশি প্রায় সব জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীর গাওয়া বহু জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে তার নিয়মিত গান করা। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

এ জনপ্রিয় শিল্পীর জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায়। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বুলবুল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাইফেল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রণাঙ্গনে। মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে বহু জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন।

‘এই দেশ আমার সুন্দরী রাজকন্যা’, ‘আয় রে মা আয় রে’, ‘উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম’, ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে, ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’-এমন বহু কালজয়ী গানের স্রষ্টা এ শিল্পী।

তিনি প্রেমের জন্য লিখেছেন- 'আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি', 'ভাড়া কইরা আনবি মানুষ', 'প্রেমের তাজমহল'সহ আরও বহু জনপ্রিয় গান।

ব্যক্তিগত জীবনে এক সন্তানের জনক ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তার ছেলে সামির আহমেদ।

বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন।

পুরোনো সংবাদ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি 4389404940643192275

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item