চারমাস ধরে গোডাউনে পঁচে যাওয়ার উপক্রম দুই কোটি টাকা মুল্যের কোরবানীর চামড়া

টাকার আশায় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের মানবেতর জীবন

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৩০ জন খুচরা চামড়া ব্যাবসায়ীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই শতাধিক  ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর  দুই কোটি টাকার ১৭ হাজার চামড়া পঁচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। 
ঢাকার সিলভার ট্যানারী শিল্পের মালিক ইদুল আজহার কোরবানীর চামড়া ক্রয় করার  করার পর ৪ মাস ধরে এসব চামড়া আড়ৎে ফেলে রেখেছে। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের স্বল্প পুঁিজ হারিয়ে বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
 চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাশ্ববর্তী রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলা প্রসিদ্ধ একটি চামড়ার হাট। এ হাটে  ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া ব্যবসায়ী আসেন চামড়া কিনতে। গত উদুল আজহার সময়  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা সহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই শতাধিক খুচড়া চামড়া ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা পাওয়ার আশায় ধার দেনা করে ও অধিক সুদে লোন নিয়ে কোরবানীর পশুর চামড়া ক্রয় করে। ক্রয়কৃত পশুর চামড়াগুলো ঢাকার  সিলভার ট্যানারী শিল্পের মালিকের প্রতিনিধি মাসুদ রানা ক্রয় করে তারাগঞ্জ হাটের মেজাজুল ইসলামের আড়ৎে স্তুপ করে রাখে। কিন্তু চামড়াগুলো ক্রয় করার দীর্ঘ ৪ মাস পেড়িয়ে গেলেও চামড়াগুলো নিয়ে না যাওয়ায় সেগুলো পঁচে যাওয়ায় উপক্রম হয়েছে। এদিকে চামড়ার টাকার আশায় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা বাড়ি ছেড়ে দিনের পর দিন আড়ৎেই অবস্থান করছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের খুচড়া চামড়া ব্যাবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও এয়াকুব আলী জানান, আমরা পবিত্র ইদুল আজহার কোরবানীর পশুর ৮শ পিচ চামড়া ক্রয় করে তা  রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলায় বিক্রি করতে নিয়ে গেলে ঢাকার সিলভার ট্যানারী শিল্পের মালিকের প্রতিনিধি মাসুদ রানা আমাদের কাছ থেকে চামড়াগুলো কিনে নিয়ে স্থানীয় মেজাজুলের আড়ৎে স্তপ করে রাখে। চামড়াগুলোর মুল্য ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু দীর্ঘ ৪ মাস পেড়িয়ে গেলেও কোম্পানীর লোকজন  চামড়া নিতে না আসায় আমরা দিনের পর দিন টাকার জন্য আড়ৎেই অবস্থান করছি।
চামড়ার আড়তে অবস্থানরত নীলফামারী সদরের কচুকাঁটা গ্রামের আব্দুর রহিম জানান, আমি জমি বন্ধক রেখে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় ইদুল আজহার কোরবানীর ৯২ পিচ চামড়া ক্রয় করে তা তারাগঞ্জে নিয়ে আসি ।আমার চামড়াগুলোও সিলভার ট্যানারীর প্রতিনিধি মাসুদ ক্রয় করে কিন্তু আজ পর্যন্ত চামড়ার টাকা না পাওয়ায় আমি আড়তেই অবস্থান করছি।
দিনাজপুর জেলার রামনগর গ্রামের চামড়া ব্যবসায়ী তোবারক আলী বলেন, আমি গ্রামের অন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ টাকা দিয়ে ২৯৬ পিচ চামড়া কিনে এখানে বিক্রি করি। বর্তমানে আমিও টাকা না পেয়ে দিনের পর দিন টাকার জন্য প্রহর গুনছি।
তারাগঞ্জ হাটের আড়ৎদার মেজাজুল ইসলাম বলেন, ভাই আমি নিজেও ১৪৬২ পিচ চামড়া সিলভার ট্যানারীর প্রতিনিধি মাসুদের মাধ্যমে কোম্পানীতে বিক্রি করেছি। আমার চামড়া গুলোর দাম প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। তবে কোম্পানীর লোকের সাথে আমার কথা হয়েছে তারা কয়েকদিনের মধ্যে টাকা নিয়ে আসতে চেয়েছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজারুল হক সরকারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তারাগঞ্জ হাটের ইজারাদার সহ আমরা ওই কোম্পানীর প্রতিনিধি মাসুদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছে দু একদিনের মধ্যে টাকা দিয়ে চামড়াগুলো নিয়ে যাবে।
সিলভার ট্যানারীর প্রতিনিধি মাসুদ রানার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, দু একদিনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে আমরা মালগুলো নিয়ে আসব। 

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 1833020298478277660

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item