রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি ২ - সৈয়দপুরে এক আবাসিক বিদ্যূৎ গ্রাহকের এক মাসের বিল ২৭ হাজার ২২৬ টাকা

তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
 অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর এক আবাসিক গ্রাহকের এক মাসের বিল দেওয়া হয়েছে ২৭ হাজার ২২৬ টাকা। সমিতির আওতায় তারাগঞ্জ সাব- জোনাল অফিস থেকে বিদ্যূৎ গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলমকে গেল ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ওই বিল প্রদান করা হয়। ভৌতিক ওই বিল পেয়ে গ্রাহক তিন দফায় তা সংশোধনের জন্য রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু অদ্যাবধি তার বিল সংশোধন করা হয়নি। উপরন্ত বার বার তাকে বিল সংশোধন না করে পুরো বিল পরিশোধের জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। দেখানো হচ্ছে বিদ্যূৎ আইনে মামলার হুমকি ধমকি। এতে করে ওই গ্রাহক বিপাকে পড়েছেন। বিল সংশোধনের জন্য তিনি দিনের পর দিন পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি, এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সংবাদকর্মীদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন।
 জানা গেছে, নীলফামারীর জেলার সৈয়দপুর উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের  পূর্ব অসুরখাই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গেল বছরের (২০১৭ সালে) আগস্ট মাসে রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর তারাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের অধীন একটি আবাসিক বিদ্যূৎ সংযোগ নেন। তাঁর হিসাব নম্বর: ৯০১-৯১২৩। ট্যাারিফ আবাসিক (এলটি-এ), ঠিকানা- অসুরখাই (আংশিক), কামারপুকুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী। বিদ্যূৎ সংযোগ দেওয়ার পর ডিসেম্বর মাসে ওই গ্রাহককে প্রথম মাসের বিল প্রদান করা হয় তারাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিস থেকে। ডিসেম্বর - ২০১৭ সালের ওই বিলে পূর্ববতী ইউনিট ১৮৭৫, বর্তমান ইউনিট ৪৫২০ এবং ব্যবহৃত ইউনিট ২৬৪৫ দেখানো  হয়েছে। উক্ত ডিসেম্বর মাসে উল্লিখিত ইউনিটের বিপরীতে তাকে ২৭ হাজার ২২৬ টাকার একটি বিল দেওয়া হয়। আর এ  অস্বাভাবিক বিদ্যূৎ বিল হাতে পেয়ে গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলমের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা। ভৌতিক ওই বিল পেয়ে তিনি (গ্রাহক) সঙ্গে সঙ্গে রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর রংপুরের পাগলাপীর কার্যালয়ে ছুঁটে যান। সেখানে গিয়ে জিএম এর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এ সময় এলাকার জনৈক আহসান-উল-হক নামের এক ব্যক্তিও তাঁর সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সে সময় রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর তৎকালীন জিএম সোহবার আলীকে বিদ্যূৎ গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলম তার বিলের বিষয়ে বিস্তারিত জানান। এ সময় জিএম তাঁর বরাবরে বিল সংশোধনের জন্য একটি লিখিত আবেদন করতে বলেন ওই গ্রাহককে। গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলম ওই দিনই জেনারেল ম্যানেজার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারী করা হয় ওই আবেদন। এর পর থেকে একইভাবে জিএম বরাবরে তিন তিন বার অস্বাভাবিক বিল সংশোধনের আবেদন করেন বিদ্যূৎ গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু তারপরও তার বিল সংশোধন করা হয়নি অদ্যাবধি। ওই  বিদ্যূৎ গ্রাহক শুধু আবেদন করেই ক্ষান্ত থাকেন নি। মাসের পর মাস রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর পাগলাপীর প্রধান কার্যালয় এবং তারাগঞ্জ সাব - জোনাল অফিসের ধর্ণা দিচ্ছেন। কিন্তু তার বিষয়টির কোন সুরাহা করা হচ্ছে না। বরঞ্চ সমিতির লোকজন গ্রাহক জাহাঙ্গীর আলমকে বিল পরিশোধের জন্য  জোর তাগাদা দিচ্ছেন। দেখাচ্ছেন বিদ্যূৎ আইনের মামলার ভয়ভীতি। এতে করে ওই গ্রাহক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি এখন কি করবেন ভেবেচিন্তে কোন কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না। ওই বিপুল পরিমাণ টাকার বিল পরিশোধ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই তার। বর্তমানে ওই বিদ্যূৎ গ্রাহক রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি - ২ এর কার্যালয় আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে দৌঁড়ঝাাঁপ করে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
সম্প্রতি তিনি ছুঁটে আসেন  সৈয়দপুর শহরের স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে। এ সময় জাহাঙ্গীর আলামের সঙ্গে কথা হয় হলে তিনি জানান, পেশায় তিনি অল্প বেতনের একজন ট্রলি চালক। বিদ্যূৎ সংযোগ নিয়ে তিনি বাড়িতে ২/৩ বিদ্যূৎ বাল্ব জ্বালিয়েছেন মাত্র। আর তাতেই তাকে ওই পরিমাণ টাকার  বিল দেয়া হয়েছে। রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি-২ এর কর্মকর্তাদের কাছে অনেক ধর্ণা দিয়েছেন কিন্তু তাদের একটি কথা বিল পরিশোধ করতে হবে। তিনি এখন কি করবেন এই ভেবে খাওয়া দাওয়া অনেটাই ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান।
 এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রংপুর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) ০১৭৬৯-৪০০০৪০ নম্বর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ না করে কেটে দেন। পরক্ষণে তার ওই নম্বর থেকে একটি ক্ষুদে বার্ত পাতানো হয়। তাতে লেখা ছিল ‘প্লিস টেক্সট মি’। এরপর এ প্রতিনিধি নিজের নাম ঠিকানা, পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে একটি বিষয়ে এক মিনিট কথা বলার জন্য খুদে বার্তা পাঠান। কিন্তু তিনি আর কোন প্রতিত্তুর দেননি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7823823685305868538

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item