রংপুর ২ গণসংযোগে ব্যস্ত মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

রংপুর ব্যুরো ঃ  
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রংপুর-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মাঠে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপা ও জাসদের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেউই বসে নেই। মাঠের পাশাপাশি ফেসবুক, বিলবোর্ড ও পোস্টারে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলে রয়েছে গ্রুপিং। সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মরহুম আনিছুল হক চৌধুরীর ভাতিজা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান এমপি একেএম আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক এবং আনিছুল হকের বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরীর মধ্যে চলছে গ্রুপিং। তাই দু’জনেই সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ ও পোস্টার বিলবোর্ড, ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু এলাকায়  গণসংযোগ চালাচ্ছেন। তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপিও গ্রুপিংয়ে জর্জরিত। উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল বকুল সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টিও তিন ভাগে বিভক্ত হয়েছে। গত নির্বাচনে জাপার মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু, সাবেক এমপি আনিসুল ইসলাম মণ্ডল, অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হক চৌধুরী সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জাসদ নেতা কুমারেশ চন্দ্র রায় ১৪ দলের মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। ভোটাররা বর্তমান এমপির ভালোমন্দ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। বিশেষ করে চৌধুরী পরিবারের মধ্যে দেখা দেয়া দ্বন্দ্ব এখন সবার মুখে মুখে। ওদিকে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার আড়মোড়া ভেঙে ফের জেগে ওঠার চেষ্টা করছেন। সাবেক এমপি অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তীও বসে নেই। তাছাড়া বর্তমান ঝিমিয়ে পড়া দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠে হাজির হয়েছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল বকুল। তাছাড়া এ আসনে জামায়াতের কোনো নেতার নাম শুনা যাচ্ছে না। ওদিকে জাপায় এরশাদ সমর্থিত প্রার্থী বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু এবং রওশন এরশাদ সমর্থিত গ্রুপের নেতা সাবেক এমপি আনিছুল আসলাম মণ্ডল মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জাপার সাবেক নেতা অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হক চৌধুরী ও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নীরব প্রচারণা চালাচ্ছেন। মহাজোটের শরিক দল জাসদ নেতা কুমারেশ চন্দ্র রায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নীরব প্রচারণা চালাচ্ছেন।
আসনটি মূলত আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। তবে ১৯৭৯ সালে এই আসন থেকে একবার বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হন। এরশাদের শাসনামলে আসনটি ছিনিয়ে নেয় এরশাদ সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক কামাল হোসেন। কিন্তু এরশাদের পতনের পর এই আসনটি পুরোপুরি জাপার দুর্গে পরিণত হয়। এ কারণে ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এরশাদ নিজেই প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেও আসনটি ছেড়ে দেয়ায় উপনির্বাচনে তার প্রার্থী অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালেও এরশাদ সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সেবারে তিনি এই আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুল হক চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালে জাপা প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনিছুল হক চৌধুরীকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তৎকালীন আমেরিকা প্রবাসী আনিছুল ইসলাম মণ্ডল জাপায় যোগ দিয়ে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে চারদলীয় জোটের প্রার্থী জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুলকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে জাপা প্রার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু মনোনয়ন দাখিল করলেও এরশাদের নির্দেশে তা প্রত্যাহার করে নেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
তবে এলাকার লোকজনের মাঝে সেই এরশাদ আবেগ নেই। এরশাদের মনোনয়ন-মনোনয়ন খেলায় জাপা ছেড়ে এখন বিএনপিতে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার। জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ এলাকায় একাধিকবার এসে অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলুকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এ কারণে তার গণসংযোগ অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য আনিছুল ইসলাম মণ্ডল বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় অবস্থান করছেন। তার সমর্থকরা আশা করছেন তিনিই জাপার মনোনয়ন পাবেন। সেজন্য তিনি দলীয়ভাবে জোর লবিং শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক টুটুল চৌধুরী।
এছাড়া সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ব্রত নিয়ে মাঠে নেমেছেন জাসদ নেতা ও তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কুমারেশ রায়। তিনি ১৪ দলের পক্ষে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 7822935390227200687

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item