বঙ্গবন্ধুর কৃষি দর্শন বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ৪ নভেম্বর॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন বঙ্গবন্ধু বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ ছিলেন। কৃষির প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ দরদ ও আন্তরিকতা। কেননা তিনি জানতেন কৃষি প্রধান এদেশে কৃষি দিয়েই উন্নত সমৃদ্ধ করতে হবে। তাঁরই নীতি অনুসরণ করে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে পথে এগোচ্ছেন এবং কৃষিতে অভাবনীয় সফলতা নিয়ে এসে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
 রবিবার (৪ নভেম্বর) সকাুেল নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে গম,ভুট্টা মুগডাল, বিটিবেগুন ও সরিষার বীজ এবং সার বিতরনের অনুষ্ঠানের উদ্ধোধনে এসব কথা তিনি বলেন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ত্রিশ লাখ জীবনের বিনিময়ে প্রাপ্ত এ বাংলাদেশকে সোনালি ফসলে ভরপুর দেখতে চেয়েছিলেন। সে কারণেই স্বাধীনতার পর তিনি ডাক দিয়েছেন সবুজ বিপ্লবের। স্বাধীনতা উত্তর বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত করছে শেখ হাসিনা। তিনি কৃষি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আজ কৃষকদের কৃষি প্রনোদনা কার্যক্রম চালু করেছেন।  এতে বর্তমান সরকারের আমলে সারের জন্য আর কৃষকদের প্রাণ দিতে হয় না। সরকার সার, বীজ ও কৃষি উপকরণ কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে শেক হাসিনার সরকার। ফলে কৃষকরা সহজে সার, বীজ ও কীটনাশক সংগ্রহ করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে চলেছে।
নুর বলেন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় আজ শেখ হাসিনা কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র বিমোচনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় করছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরে কৃষিতে বিপ্লব এবং বেকারত্ব ঘুচিয়ে উত্তরবঙ্গের মঙ্গাকে বিতারিত করেছে। এখন আর কাউকে না খেয়ে থাকতে হয়না,না খেয়ে থাকতে হয়না। তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে রাস্ট্রের দায়িত্ব প্রদানে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান।
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুজার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি দপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। অন্যাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মুহাঃ আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজহারুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মামন ভুইয়া, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম প্রমুখ।
নীলফামারী কৃষি বিভাগ সুত্র মতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য কৃষি প্রনোদনায় বর্তমান সরকার এ জেলার জন্য ২ কোটি ৪৬ লাখ ১৬ হাজার ৫৭৮ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এ অর্থে জেলার ছয় উপজেলার ১৭ হাজার ৪৪৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে গম,ভুট্টা মুগডাল,বিটিবেগুন ও সরিষার বীজ এবং সার বিতরন শুরু হলো। এর মধ্যে ২০ কেজি করে গম বীজ পাবে ৫ হাজার কৃষক, ২ কেজি করে ভুট্টা বীজ পাবে ৯ হাজার চারশত কৃষক,সরিষা বীজ পাবে ১ কেজি করে দুই হাজার কৃষক, ৫ কেজি করে মুগডাল বীজ পাবে এক হাজার কৃষক ও বিটি বেগুন বীজ ২০ গ্রাম করে পাবে ৪৫ জন। এ সব বীজের সঙ্গে প্রতিজন কৃষক পাবেন ২০ কেজি করে ডিএপি ও ১০ কেজি করে পটাশ সার।
এ ছাড়া সুবিধাভোগী কৃষকদের মধ্যে নীলফামারী সদরে ৪ হাজার ১৫০, সৈয়দপুর উপজেলায় ৮১০,ডোমার উপজোয় ৩ হাজার ৮১৫, ডিমলা উপজেলায় ৩ হাজার ৫৫৫,জলঢাকা উপজেলায় ২ হাজার ৭৬০ ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৩৫৫ জন।

নীলফামারী কলেজের বধ্যভুমিতে স্মৃতিস্তম্ভের নির্মান কাজের উদ্ধোধনঃ- এ দিন  ৎদুপুরে সংস্কৃতিমন্ত্রী নীলফামারী সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর হাতে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার শহীদগনের বধ্যভুমিতে স্মৃতিস্তম্ভে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের আনুষ্ঠানিকভাবে ফলক উম্মোচনে উদ্ধোধন করেন। এ উপলক্ষ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। কলেজ অধ্যক্ষ দেবী প্রসাদে রায় এতে সভাপতিত্ব করেন।
এখানে নুর বলেন ৭১ সালের কথা ভুলবার নয়। যুদ্ধচলাকালিন এই কলেজ ক্যাম্পাসে ধরে এনে এই শহরের অসংখ্য স্বাধীনতা মুক্তিকামী মানুষজনকে পাকসেনারা হত্যা করে কুয়ায় ফেলে দিয়েছিল। শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে বর্তমান সরকারে অর্থে এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান কাজ শুরু করা হলো। এ সময় নুর কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন আজ এই বাংলাদেশকে একটি ফুলের বাগান তৈরী করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ফুলের বাগান বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন, অতিরিক্ত সুপার এবিএম আতিকুর রহমান , পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক, সহ কমান্ডার কান্তিভুষন কুন্ডু, কলেজ শিক্ষক তারিকুল ইসলাম লিখন, জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শাহিদ মাহমুদ,জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ মনিরুল হাসান আপেল প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে উক্ত বধ্যভুমিতে স্মৃতিস্তম্ভে ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপনের ৩২ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এটি মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সমুহ সংরক্ষন ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন করছে  স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

বিজয় ফুল উৎসব উদযাপনঃ- শিশু ও ছাত্র সমাজসহ আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে পরিচিত করতে নীলফামারী সদর উপজেলায় বিজয়ফুল উৎসব করা হয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে তিনটায় এই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাহারুল ইসলাম, পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ,সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মামুন ভুঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফা সুলতানা লাভলী প্রমুখ। উৎসবে সদর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে বিজয় ফুল শাপলা তৈরি করে ও সেগুলো প্রদর্শন করে। প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও বিজয়ফুল উৎসব পালিত হয়েছে।

বর্ধিত সভাঃ- অপর দিকে রবিবার বিকালে জেলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিতা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি। এতে সভাপতিত্ব করেন এ্যাডঃ আলিমুদ্দিন বসুনিয়া। 

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 2880630847305751935

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item