নীলফামারীতে অভিনব প্রতারণার জাল॥ তিন সদস্য গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অভিনব পন্থায় চাঁদা দাবির ঘটনায় একটি প্রতারণা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নীলফামারী ডিবি পুলিশ।  রবিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে সৈয়দপুর উপজেলা শহর থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে থানায় মামলা দায়ের করে।  সোমবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।
প্রতারক চক্রটির ওই তিন সদস্য হলেন, খুলনা জেলার আড়ংঘাটা উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত কালু খানের ছেলে নাজির খান(৫০), তার ছোট ভাই শহিদ খান(৪৫), জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের প্রামানিক পাড়া গ্রামের মৃত মোক্তার শেখের ছেলে সুলতান শেখ(৫৫)।
পুলিশ জানায়, ওই প্রতারকরা দীর্ঘদিন ধরে অভিনব পন্থায় এলাকার নিরিহ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। তারই অংশ হিসেবে জেলা সদরের দারোয়ানী এলাকার নুর টিম্বার এন্ড স’মিলের মালিক মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে তারা প্রতারণার মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
নুরুল ইসলাম বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ওই প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার জ্বাল পাতে। সে অনুযায়ী রবিবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের ফাঁেদ আটক হন তারা। তবে প্রতারণা চক্রের দুই সদস্য খুলনা জেলার দৌলতপুর উপজেলার মোয়াজ্জেম শেখের ছেলে জনি শেখ (৩৬) ও গ্রেফতার হওয়া সুলতান শেখের ছোটভাই সিদ্দিক শেখ (৪৬) পালিয়ে যায়।

নীলফামারী ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফজালুল ইসলাম বলেন, নাজির খান এবং সিদ্দিক শেখ প্রথমে নুরুল ইসলামের স’মিলে যায়। নাজির নিজেকে একটি জুতা তৈরীর ডাইস রপ্তাণীকারকের ব্যবস্থাপক বলে পরিচয় দেয়। তাদের বেশ কিছু ডাইস ইতালি এবং কানাডায় রপ্তাণী করবেন বলে জানায়। এজন্য তার প্রচুর কাঠের প্রয়োজন। সে অনুযায়ী তারা ছক করে কাঠ সরবরাহের চুক্তির কথা বলে নুরুল ইসলামকে সৈয়দপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়ার একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ডাইস রপ্তাণী কারক হিসেবে জনি শেখের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। সুলতান শেখ শংকর আগারওয়াল সেজে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় হয়। ওই বাসায় সকলের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তারা কৌশলে নুরুল ইসলামেরসাথে সুসম্পর্ক গড়ে তাকে জুয়া খেলার প্রস্তাব দেয়। নুরুল ইসলাম তাস চেনেন না জানালে তারাই তাকে তাস খেলার প্রশিক্ষণ দেন। ওই  জুয়ায় নুরুল ইসলামের সঙ্গে থাকা ৩৬ হাজার টাকা জিতে নেয়ার পর মুখে মুখে জুয়ায় বাজি ধরা শুরু করেন ভারতীয় নাগরিক সেজে থাকা সুলতান শেখ। এক পর্যায়ে নুরুল ইসলাম কোটি টাকা জিতে গেলে, সুলতান শেখ টাকা দেখাতে বলেন। এক কোটি টাকা দেখালে সুলতান শেখ তাদের এক কোটি টাকা দেবেন বলে জানান। পরে প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যরা টাকা দিতে চান। শেষে তারা নুরুল ইসলামকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে বলেন। ওই পাঁচ লাখ টাকার পাশাপাশি ডাইস সরবরাহের জন্য অগ্রিম ছয় লাখ এবং কোটি টাকার লভ্যাংশ দেওয়ার প্রলোভন দেখান। সেটি দিতে বিলম্ব হওয়ায় নুরুল ইসলামকে বার বার চাপ দিতে থাকে প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
এমন চাপসৃষ্টিতে পুলিশের স্বরণাপন্ন হন নুরুল ইসলাম। পরে পুলিশের ছক অনুযায়ী নুরুল ইসলাম টাকার আকারে একটি পাউরুটি কাগজে পেচিয়ে ও দুই পকেটে টিসু পেপার ভর্তি করে তাদের দেয়া স্থানে গেলে ওৎ পেতে থাকা ডিবি পুলিশ প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মো. আতিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রতারক চক্রের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন থানায় তাদের নামে মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অভিনব পন্থায় প্রতারণা করে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে ওই প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 105134957530267457

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item