দুটি সন্তানের বেশি নয় একটি হলে ভালো হয় এই শ্লোগান কাজে আসছেনা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ,(নীলফামারী)ঃ
শরিফার কোলের ছেলে ও শরিফা দুজনেই অপুষ্টিতে ভুগছে। কোলের  ছেলে হানিফের বয়স এক বছর। তবে শরিফা জানালেন তাঁর আরো তিনটি সন্তান আছে প্রথম সন্তান হাবিবার বয়স পাঁচ বছর দ্বিতীয় ছেলে সৌরভের তিন  ও তৃতীয় ছেলে হাবিবের  দুই বছর । বিয়ের সাত বছরের মাথায় চার সন্তানের জননী শরিফা। শরিফার বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামে।
গত রবিবার কথা হয় শরিফা বেগমের সাথে বিয়ের সাত বছরের মাথায় এতগুলো সন্তান কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রথমে পদ্ধতি গ্রহন করতাম না। কেন পদ্ধতি গ্রহন করতেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিভাবে পদ্ধতি গ্রহন করতে হয় জানতামনা। পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে আপনার কাছে কেউ আসেনি শরিফার উত্তর না। এখন কিভাবে পদ্ধতি গ্রহন করছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন কিশোরগঞ্জ বাজারে গিয়ে ৫০ টাকা দিয়ে ইনজেকশন নেই।  এরকম একই গ্রামের চার সন্তানের জননী ২২ বছরের গ্রহবধু মমিনা বেগম (২২) ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গদা গ্রামের ৭ সন্তানের জননী জোৎনা বেগমের। যাদের সাথে কথা হয়েছে তাঁেদর অনেকেই বলছে তাঁরা পরিবার পরিকল্পনা সেবা পাননা। আবার কেউ বলছে মাঠ কর্মীরা বছরে দু একবার আসেন তারা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কিনা তা জানেননা। এক কথায় নীলফামারীর ছয় উপজেলার মধ্যে অবহেলিত কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা সেবা বলে কিছু নেই। প্রাকৃতিক নিয়মেই মানুষ বাড়ছে।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী কিশোরগঞ্জ উপজেলার লোকসংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬১ হাজার ৬৯ জন। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের তথ্যমতে বর্তমানে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত লোকসংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৭শ ৪৯ জন। অর্থাৎ সাত বছরে কিশোরগঞ্জে জনসংখ্যা বেড়েছে ৩২ হাজার ৬৮০ জন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে উপজেলা পরিবার  পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ৬ মাসের প্রশিক্ষনে গেছেন। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্বে আসেন জলঢাকা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। জরুরী কাজ ছাড়া তিনি কোন দিন অফিসে আসেননা। বর্তমানে অফিসটিতে পরিবার কল্যান সহকারীর পদ রয়েছে ৪৯ টি কর্মরত আছেন ২৭ জন। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পদ ৯ টি কর্মরত আছে ৮ জন। পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা পদ ১০ টি কর্মরত ৯ জন। এছাড়াও অফিস সহকারী তিনজনের মধ্যে দুইজন,আয়া ৬জন, এমএলএসএস ২জন। ষ্টোর কিপার না থাকায় রাশেদ মিয়া নামে একজন অফিস সহকারী ষ্টোর কিপারের দায়িত্ব পালন করছেন।
এই উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বা জ¤œনিয়ন্ত্রন সেবা বিষয়ে কি কাজ করা হচ্ছে , তা জানার কোন ব্যাবস্থা নেই।  মোট প্রজজন হার(টিএফআর) জ¤œ নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি গ্রহনের হার(সিপিআর),সক্ষম দম্পতির সংখ্যা , স্থায়ী পদ্ধতি (লাইগেশন) এসব বিষয়ে কোন তথ্য উপজেলা কার্যালয় থেকে পাওয়া যায়নি। এসব সরকারী তথ্য পাওয়া না গেলেও দুটির অধিক সন্তান নয় একটি হলে ভাল হয় এ স্লোগান কিশোরগঞ্জে কাজে আসেনি। তাছাড়া প্রয়োজনের সময় গ্রামের নারীরা জ¤œনিয়ন্ত্রন সামগ্রী পাননি। তাই গ্রামে গঞ্জে শিশুর কমতি নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী জানান, সরকার জ¤œ নিয়ন্তনের জন্য স্থায়ী পদ্ধতি (লাইগেশন) করার জন্য দম্পতিদেরকে টাকা দেন। কিন্তু অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ভুয়া তালিকা করে বছরের পর বছর এসব টাকা আতœসাৎ করছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি ওই উপজেলার দায়িত্ব নিয়েছি চার মাস আগে। কাজেই আমি এসব বিষয়ে কোন কিছু বলতে পারবনা।
নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ পরিচালক আফরোজা বেগম বলেন, গত সাত বছরে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৩২ হাজার ৬৮০ জন লোক বেড়েছে তুলনামুলক ভাবে এটা বেশি নয়। লাইগেশনের বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, তালিকায় কোন অনিয়ম হলে অব্যশই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item