পঞ্চগড়-১ আসনে ভোটের হাওয়া

মোঃ তোতা মিয়া, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
মহাজোটের অর্ধডজন প্রার্থী নির্বাচনী এলাকা চোষে বেরালেও নিরবে বিএনপি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ১নং আসন পঞ্চগড়-১ পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটি। তফসিল ঘোষনা না হলেও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে জোট মহাজোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব হয়ে উঠেছে। দুই জোটের মধ্যে একাধিক প্রার্থী প্রচারণা শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা এখনি বোঝা যাচ্ছে না। ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে একাধিক প্রার্থীসহ শরীক দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ গরম করছেন। নির্বাচনী মাঠে এখন পর্যন্ত সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি না ২০ দলীয় জোট থেকে এই আসনে এখন পর্যন্ত নজরে আসার মত কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তবে বাবা-ছেলের মধ্যে যে কেউ একজন এবং পৌর নিবএনপি সভাপতি ও পৌর মেয়রসহ জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপা থেকেও একজন প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর লবিং শুরু করেছেন। আবার জামাত থেকেও স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান আমির। ১৯৯১, ১৯৯৫ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনটি বিএনপি’র দখলে থাকলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারকে পরাজিত করে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজাহারুল হক প্রধান। ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির আবু সালেক কে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তৎকালীন জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। ওই নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী ছিল না। এই আসন থেকে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আবারও মনোনয়ন চাইবেন বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সদস্য মজহারুল হক প্রধান। সম্প্রতি তিনি বিশাল মটরসাইকেল শোডাউন করে তার অবস্থান জানান দিয়েছেন। মজহারুল হক প্রধান বলেন ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেয়ার পর পঞ্চগড়-১ আসনটি আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পেরেছি। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনেও আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে শেষ মুহুর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে আমাকে ফোন করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেন। দলের একজন নিবেদিত প্রাণ হয়ে আমি সেই নির্দেশ পালন করি। আমি আশা করি এবার তিনি আমাকেই মনোনয়ন দিবেন। আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি আবারও এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব ইনশাল্লাহ। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত স¤্রাট মনোনয়ন যুদ্ধে অবর্তীণ। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার এই আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করার কথা শোনা গেলেও তিনি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হচ্ছে না বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তেঁতুলিয়া ভজনপুর বিএনপি’র কর্মীসভায় তিনি তার ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরকে প্রার্থী করার ঘোষণা দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার আহবান জানান। আবার সব দল মিলে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচন হলে ব্যারিস্টার জমিরই বিএনপি’র প্রার্থী হবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বিএনপি’র নেতারা। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের অনুসারী জেলা বিএনপি’র সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এম.এ মজিদ বলেন পঞ্চগড়-১ আসনে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার অথবা তার ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের মধ্যে যে কোন একজন নিশ্চিত ভাবে মনোনয়ন পাবেন। তবে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করুন সেটাই পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা চায়। কোন কারণে তিনি যদি নির্বাচন না করেন তাহলে তার ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির মনোনয়ন নিয়ে আসবেন। ইতিমধ্যে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছেন। এদিকে পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র তৌহিদুল ইসলামও এই আসন থেকে প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন। এখনও তিনি সরাসরি নির্বাচনের মাঠে না নামলেও দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী ছক কষছেন। তিনি বলেন, ব্যারিস্টার জমির ও তার ছেলের কারণে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির এখন নাজুক অবস্থা। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে কোন জেলা কমিটি নেই। তারা ঢাকায় বসে জেলা কমিটি ঘোষণা করতে চাইছে। আমি পঞ্চগড় পৌরসভার তিন বার চেয়ারম্যান ও দুই বারের মেয়র। দীর্ঘদিন বিএনপি’র সাথে জড়িত। বিএনপি’র অধিকাংশ নেতাকর্মী আমার সাথে রয়েছে। আমিতো জেলা বিএনপি’র সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ চাইতেই পারি। ব্যারিস্টার সাহেবের সাথে আমার এখানেই বিরোধ। এজন্য বিএনপি’র নেতাকর্মীরা নেতৃত্বের পরিবর্তন চাইছে। আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে আমি পঞ্চগড়-১ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো। আমার বিশ্বাস সদল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি দেশনেত্রীকে আসনটি উপহার দিতে পারব। এছাড়াও এই আসনে ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় গণতান্ত্রীক পার্টি জাগপা’র প্রতিষ্ঠাতা মরহুম সফিউল আলম প্রধানের মেয়ে কেন্দ্রীয় জাগপা’র সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। জেলা জামাতের আমির মাওলানা আব্দুল খালেক স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তাছাড়া আশাবাদী নাইমুজ্জামান মুক্তা ও আনোয়ার সাদাত স¤্রাট তো আছেনই। উনারাও নৌকার প্রতীক নিয়ে আগামী নির্বাচন করবেন বলে আশাবাদী। এখন শুধু দেখার বিষয় কে পাছেন পঞ্চগড়-১ আসনের মনোনয়ন।

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 278699962618596201

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item