ফুলবাড়ীতে সেচ কমিটির অনুমোদন পেলেও ৩ বছরেও মিলেনি বিদ্যুৎ সংযোগ
https://www.obolokon24.com/2018/10/dinajpurelectrisity.html
তেলের মেশিন দিয়েই চলছে কয়েক’শ বিঘা জমির সেচ কাজ ॥
মেহেদী হাসান উজ্জল,ফুলবাড়ী(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সেচ কমিটির অনুমোদন পেলেও মিলছেনা বিদ্যুৎ সংযোগ।গত তিন বছর থেকে তেলের মেশিন দিয়েই চলছে এক’শর অধিক একর জমির চাষাবাদ এতে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার শতাধিক কৃষক।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের মইচান্দা গ্রামে। জানা গেছে উপজেলার মইচান্দা গ্রামের মৃত শফিউদ্দিন মন্ডলের ছেলে মামুনুর রশিদ মইচান্দা মৌজায় চাষাবাদের জন্য গত ২০১৫ সালের ১৫ই অক্টোবর উপজেলা সেচ কমিটি থেকে একটি গভীর নলকুপের অনুমতি(লাইসেন্স) গ্রহণ করে তার নিজস্ব জমিতে একটি গভীর নলকুপ স্থাপন করেন। যার লাইসেন্স নং-১০/২০১৪-১৫। এর পর থেকে দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নিকট বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করেন কিন্তু আবেদন করার তিন বছর কেটে গেলেও এখনো মেলেনি বিদ্যুৎ সংযোগ।
এদিকে গভীর নলকুপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় তেলের মেশিন দিয়েই চলছে মইচান্দা গ্রামের এক’শ একর এর অধিক জমির চাষাবাদ এতে বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার সাধারণ কৃষকরা।
মামুনুর রশিদ বলেন,গভীর নলকুপটি স্থাপন করার পর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বারবার দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নিকট ঘুরতে ঘুরতে তিনি ক্লান্ত হলেও তবুও মেলেনি সংযোগ। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন,দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহাব্যবস্থাপক(জিএম) সুশান্ত কুমার। তিনি বলেন, মইচান্দা গ্রামের সন্নিকটে দাসিয়াড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে (সেনা সদস্য) নুরুজ্জামান বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে অভিযোগ করায়,মামুনুর রশিদের বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বিলম্ব হয়েছে।
নুরুজ্জামানের দাবী তার গভীর নলকুপটির সন্নিকটে মামুনুর রশিদের গভীর নলকুপ।এই নলকুপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলে,তার গ্রাহক কমে যাবে এজন্য তিনি এই অভিযোগ দায়ের করেন।এদিকে নুরুজ্জামানের গভীর নলকুপটির মালিকানা দাবী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তারই আপন চাচাতো ভাই মৃত. জহির উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলামের দাবী তার নিজস্ব খরিদ করা জায়গার উপর তিনি গভীর নলকুপটি স্থাপন করেছেন,অথচ নুরুজ্জামান তার নলকুপটি দেখিয়ে উপজেলা সেচ কমিটির নিকট মিথ্যা তথ্য প্রদান করে (নুরুজ্জামান) তার নামে গভীর নলকুপটির লাইসেন্স গ্রহণ করেছেন । এজন্য তিনি নুরুজ্জামানের নামে ইস্যুকৃত লাইসেন্সটি বাতিলের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
গ্রামবাসিরা জানায়,নুরুজ্জামানের নিজের নলকুপের মালিকানা নিশ্চিত না হলেও মামুনুর রশিদের গভীর নলকুপে বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে, এতে মামুনুর রশিদের নলকুপে বিদ্যুৎ সংযোগ বিলম্ব হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার সাধারণ কৃষকরা।
মইচান্দা গ্রামের কৃষক শফির উদ্দিনের ছেলে শাহিন মন্ডল বলেন,তেলের মেশিন দিয়ে চাষাবাদ করতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে ধান চাষ করেও তিনি লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেননা। একই গ্রামের আরিফ মন্ডল বলেন,তেলের মেশিন দিয়ে মেশিন চলিয়ে চাহিদামত পানি পাওয়া যায়না সে কারনে সময়মত বোরো রোপন করা যায়না,সময়মত বোরো রোপন করতে না পারায় আবাদ নমলা হয় ফসলের ফলন কমে যায়। এদিকে মইচান্দা গ্রামের সামাদ মন্ডল বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় চাহিদামত পানি সরবরাহ করতে পারছেনা গভীর নলকুপটি এতে অধিকাংশ জমির বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে।
গ্রামবাসিরা আরো জানায়,শফিকুল ও নুরুজ্জামান এর যে গভীর নলকুপটি নিয়ে মামলা চলছে,ওই গভীর নলকুপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেও সেখান থেকে মইচান্দা গ্রামের জমিতে সেচ দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এ জন্য তারা মামুনুর রশিদের গভীর নলকুপটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দাবী জানান। গ্রামবাসিরা বলেন,মামুনুর রশিদের গভীর নলকুপটি মইচান্দা গ্রামের সন্নিকটে ও মধ্যস্থানে যে কারনে এই গভীর নলকুপটি থেকে তাদের সেচ দেয়া সহজ হবে।