যারা জামায়াত বিএনপির টাকায় আওয়ামী লীগকে দুর্বল করতে চায় জনগন তাদেরকে প্রত্যাখান করবে ---- সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল

মোঃ আব্দুস সাত্তার,দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥
দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, আগামী নির্বাচন দেশের ও উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দিবেন, আমরা তার হয়েই নৌকাকে বিজয়ী করবো। আজকের আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পরিপূরক শক্তি। আওয়ামী লীগ মানেই মুক্তি, আওয়ামী লীগ মানেই শক্তি, আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন। ৭১ সালে যে ভাবে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল, আবারো সে ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে বিজয়ী করে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশে^ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ^ নেতারা তাকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না হলে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা সম্ভব হতো না।
১৬ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে বীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নের সাফল্যে বীরগঞ্জ-কাহারোলবাসী ধন্য। এ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে বীরগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন পরিষদ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনোরঞ্জন শীল গোপাল এসব কথা বলেন।
জনসভা থেকে জনসমূদ্রে পরিণত হওয়া হাজারো মানুষের সামনে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, বীরগঞ্জের কয়েকজন মানুষ আমার পদ-পদবী উল্লেখ না করেই অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেন। কিন্তু আজকের জনসভায় হাজারো মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি প্রমাণ করে কয়েক জন মানুষ যা বলেছে তা মিথ্যা। বীরগঞ্জের এই অপতৎপরতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুনে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি একজন কেন্দ্রীয় নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি গোপালকে আওয়ামী লীগে এনেছি, আমি তাকে চিনি। যারা অকারণে বিরোধীতা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, কিন্তু মনোনয়ন দৌড়ে কোন নোংরামি মেনে নেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, আমি কয়েকদিন আগে প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং চেয়ারম্যানদের ডেকে বলেছি, আমি যাকেই নৌকা প্রতীক দিব, তার হয়েই আপনারা কাজ করবেন এবং নৌকাকে বিজয় করবেন। তারপরেও যারা এ কাজ করছেন তারা ঠিক করছেন না। যারা এ কাজগুলো করছেন তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে।
গোপাল বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। কাজেই জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকেই মনোনয়ন দিবেন সবাইকে তার হয়ে কাজ করতে হবে। আমার চেয়েও যোগ্য কোন নেতাকে যদি এই আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়, তাহলে আমি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে উপস্থিত সবার সামনে বলছি, নৌকাকে বিজয়ী করতে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, ২০০১ সালের মত আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তারা আবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে জামায়াতের প্রার্থীকে আসনটি উপহার দিতে চান। যারা জামায়াত বিএনপির টাকায় আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মনে রাখবেন কুকুর মানুষকে কামড় দিলেও, মানুষ কুকুরকে কামড় দেয় এমন কোন দৃষ্টান্ত নেই। কিন্তু আপনারা ধমক দেবেন, বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে হামলা করবেন তা মেনে নেয়া হবে না। মানুষের ধর্যের সীমা থাকে। আপনারা আমাকে মারবেন, কাটবেন বলছেন। গতকাল শনিবারও আপনারা বলেছেন, অস্ত্র ধার দিয়েছি। আমাকে হত্যা করতে চান, করেন। কিন্তু আমার ভোটারদের উপর কোন যুলুম অত্যাচার করলে তা সহ্য করা হবেনা। জবাবদিহী জন্য আমাকে ডেকেছেন, আমি এসেছি। আপনারা তাদেরকেও জবাবদিহী করার জন্য ডেকে আনবেন। আমি আজ আপনাদের সামনে বিচার চাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি। আপনারাই বিচার করবেন আমি কি অপরাধ করেছি। তারা বলছেন, আমি দূর্ণীতি করেছি, আমি চ্যালেঞ্জ করলাম আমার দূর্ণীতি বের করুন। আমি কি দূর্ণীতি করেছি তা গোয়েন্দা সংস্থা গুলোকে খুজে বের করতে বলুন। জনসভায় এমপি গোপাল তার সময়ে বীরগঞ্জ-কাহরোলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
বীরগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক (অবঃ) কালীপদ রায়ের সভাপতিত্বে বিশাল জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইমাম চৌধুরী, সাবেক এমপি মোঃ আব্দুল হক সবুজ, জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তরিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আমজাদ আলী, জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট তহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসনে ইমাম নয়ন, কাহারোল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি চেয়ারম্যান এ কে এম ফারুক হোসেন, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরূপ কুমার বকসি বাচ্চু, দিনাজপুর নাট্য সমিতির সভাপতি চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলহাজ্ব ওয়াহেদুল আলম আর্টিস, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী বলেন, ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু’র ভাষণ শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে যেভাবে দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেভাবেই মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করবেন। তিনি বলেন, আমি যখন এই জনসভায় আসছিলাম তখন রাস্তায় জনসভার উদ্দেশ্যে আসা মানুষের মুখে শ্লোগান শুনছিলাম, কে বলেরে গোপাল নাই, গোপাল ছাড়া গতি নাই। তিনি বলেন, যদি কাগজে লেখো না নাম, কাগজ ছিড়ে যাবে’ পাথরে লেখো না নাম, পাথর ক্ষয়ে যাবে’ হৃদয়ে লেখো নাম, সে নাম রয়ে যাবে। বীরগঞ্জ কাহারোলের মানুষের হৃদয়ে গোপালের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা জানেন । তিনি সারা বাংলাদেশের খবর রাখেন। তিনি জানেন, বীরগঞ্জ-কাহারোলের প্রতিটি মানুষের হৃদেয় গোপালের নাম লিখা আছে প্রধানমন্ত্রী তা ভালো ভাবেই জানেন। যারা জামায়াত শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোপালের চামড়া তুলে নিতে চায়, তাদেরকে আপনারা প্রত্যাখান করুন। বিদ্যুৎ আছে আলো আছে, শেখ হাসিনার দরকার আছে। ভাত আছে ডাল আছে, শেখ হাসিনা সরকারের দরকার আছে। শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। কার কতটুকু জনপ্রিয়তা রয়েছে তা সবাই জানেন। কাজেই ষড়যন্ত্র কারীদে প্রত্যাখান করুন।
কাহারোল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি চেয়ারমেন একেএম ফারুক হোসেন হাজার হাজার মানুষের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন জনসভায় না আসার জন্য আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছে। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা বিএনপি, জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলবে। কিন্তুু কিছু টিক্রিম বাজ নেতা কর্মী আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদেরকে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে । যা কোন ভাবেই বরদাস্ত করা যায়না। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দ্যেশে বলেন, উন্নয়ন হয়েছে কি না তা আমরা বলবনা, তা বলবেন আপনারা । যারা বিএনপি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় তাদেরকে বয়কট করুণ ।
বিশাল জনসভাটি সঞ্চালনা করেন বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. নুর ইসলাম নুর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম ফিরোজ আলম।
দুপুর ১ টা থেকে জনসভা স্থলে মানুষের ঢল নামে। জনসভায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। বিকাল ৩ টার মধ্যে জনসভা স্থল কানায়, কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় ।

পুরোনো সংবাদ

দিনাজপুর 3459782365775113243

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item