ডোমারে বিদ্যুৎ অফিসের গাড়ী চালক স্বাধীন ইসলামের হত্যা রহস্য উদঘাটন

 টাকা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে বন্ধুকে খুন



আনিছুর রহমান মানিক,ডোমার প্রতিনিধি॥
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার বিদ্যুৎ অফিসের গাড়ী চালক স্বাধীন ইসলামকে গলা কেটে হত্যা করার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় হত্যা মামলায় স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারই বন্ধু অর্পন ইসলাম(২৪)। সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে নীলফামারী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক মো: সামিউল ইসলামের আদালতে অর্পন জবানবন্দি দেন যে, টাকা চুরির অপবাদ সইতে না পেরে ক্ষোভে ঘুমের মধ্যে সবজি কাটার কাটারি দিয়ে গলা কেটে বন্ধু স্বাধীনকে হত্যা করে অর্পন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: গোলাম মোস্তফা জানান, অর্পন তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায়, নেসকো বিদ্যুৎ ও বিতরন ডোমার কেন্দ্রে আবু সাঈদ স্বাধীন নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়ি চালক ও অর্পন ইসলাম মিটার রিডার হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে এক সাথে কাজ করতো। কিন্তু তাদের মধ্যে গড়ে উঠে বন্ধুত্বের সম্পক্য। এ সুবাদে তারা দুইজনে কাজের অন্যান্য সময়ে এক সাথে আড্ডা, খাওয়া-দাওয়াসহ বিভিন্ন ভাবে সময় কাটাতো। ঘটনার কয়েক দিন আগে স্বাধীনের চার হাজার টাকা হারিয়ে গেলে সে অর্পনকে ফোনে টাকা হারানো কথা বলে। অর্পন টাকা নেয় নাই বলে স্বাধীনকে জানায়। কিন্তু স্বাধীন তা বিশ্বাস না করে কর্মস্থালের সবাইকে বিষয়টি জানায়। এতে অর্পন ক্ষিপ্ত হয়ে যায় স্বাধীনের উপর। কিন্তু স্বাধীনকে তা বুঝতে দেয় নাই সে। তার প্রতি ক্রমেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে অর্পনের।
ঘটনার দিন গত ১৭ সেপ্টম্বর রাত ১১ টার দিকে উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন একটি দ্বিতল ভবনের উপর তলায় স্বাধীনের ভাড়া নেয়া ঘরে যায় অর্পন। ওই ঘরে তারা দেড় ঘন্টা এক সাথে থাকার পর অর্পন চয়ে যায় উপজেলা মোড়ে। সেখান হতে আবার রাত ২.৩০ মিনিটে অর্পন আসে স্বাধীনের কাছে। স্বাধীন ঘুমিয়ে গেলে দরজায় ধাক্কা দিয়ে তার ঘুম ভাঙায় অর্পন। স্বাধীন দরজা খুলে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ে বিছানায়। অর্পনও তার সাথে আধাঘন্টা ঘুমানোর ভান করে। স্বাধীন গোভির ঘুমে আচ্ছন্ন হলে, অর্পন স্বাধীনের একটি শার্ট পড়ে। এরপর স্বাধীনের ঘরে রাখা সবজ্বি কাটার কাটারী নিয়ে স্বাধীনকে জবাই করে অর্পন। স্বাধীন গভির ঘুমে আচ্ছন্ন থাকায় কাজটি তার একার পক্ষে করাটা অনেকটা সহজ হয়। এসময় স্বাধীন কিছুটা ধ্বস্তাধ্বস্তি করার আগেই তার গলার গভিরে চলে যায় কাটারীর আঘাত। স্বাধীনের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অর্পন স্বাধীনের সেই শার্টটি খুলে ও একটি গামছা দিয়ে তার গলা ঢেকে দেয় এবং ঘরের বাইরে একটি তালা দিয়ে ও বাথরুমে গিয়ে পরিস্কার হয়ে অর্পন চলে যায় পাশ্ববর্তী ডাঙ্গাপাড়া এলাকার তার বাড়ি। নিজের শরীরে যাতে রক্ত না লাগে সেই জন্য সে স্বাধীনের শার্টটি পড়েছিল বলে স্বীকারোক্তিতে জানায়। অর্পন আরো স্বীকার করে, বাড়ি গিয়ে তার কোন ভাবেই ঘুম আসছিল না। সে সকালের অপেক্ষায় ছিল। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টায় অর্পন অফিসে আসে। স্বাধীনকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না বিষয়টি অফিসসহ এলাকায় ছড়িয়ে পরলে একপর্যায়ে অর্পনই অফিসের কয়েকজনকে নিয়ে স্বাধীনের রুমে যায় এবং জানালা দিয়ে তার লাশ দেখাতে পায়।
এ ব্যপারে আবু সাঈদ স্বাধীন ইসলামের মা সুলতানা রাজিয়া বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১২, তারিখ-১৮.০৯.২০১৮ইং।
ডোমার থানার ওসিমো: মোকছেদ আলী জানায়, জেলা পুলিশ সুপার আমাদের এ মামলা তদন্তের জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। ডোমার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে হত্যার প্রকৃত ঘটনা সামনে এনেছি। এজন্য সন্দেহভাজন প্রায় আট জনকে জিজ্ঞাসা ও অর্পনকে চার দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অবলোকনে এ প্রকাশিত নিউজ লিঙ্কটি নিচে দেয়া হলো #ডোমারে বিদ্যুৎ অফিসের ড্রাইভারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার,জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ৪

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4198027008949724944

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item