জলঢাকায় এমপিওভুক্ত হচ্ছেন সেকায়েপভুক্ত ১২০ জন শিক্ষক



মর্তুজা ইসলাম, জলঢাকা প্রতিনিধিঃ
সেকায়েপ ও সেসিপ প্রকল্পে অধীনে নিয়োগকৃত জলঢাকায় কর্মরত ১২০ জনসহ সারাদেশের সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর জন্য সরকারের কত টাকা ব্যয় হবে তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে জানাতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাক্সেস এনহ্যান্সমেন্ট (সেকায়েপ) এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) আওতায় নিয়োগকৃত অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে গত ১১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সেকায়েপ ও সেসিপ প্রকল্পের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিকরণের সম্ভাব্য শর্তাবলি ও আর্থিক সংশ্লেষসহ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে গত ২৮ আগস্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে একটি চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রকল্প দুটির নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সম্ভাব্য শর্তাবলি ও আর্থিক সংশ্লেষসহ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সবুজ আলম জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। জেলা ও উপজেলাভিত্তিক নিয়োগকৃত সেকায়েপের অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক এবং সেসিপ প্রকল্পের রিসোর্স টিচারদের তালিকার হার্ড কপি এবং সফট কপি আগামি তিন কার্যদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে সেকায়েপ প্রকল্পটি চালু করা হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার চারশ ৮০ কোটি টাকা। দুর্গম ৬৪টি উপজেলার দুই হাজার ১১টি স্কুলে গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে ছয় হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘সেকায়েপ’ প্রকল্পে এসিটি কম্পোনেন্টটি যুক্ত হয়। যা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ফিরিয়ে আনা, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে নেওয়া লক্ষ্যে অভিভাবকদের সমন্বয় সভা, অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্য, বাল্য বিবাহ ও শিশু নির্যাতন বন্ধসহ নানা ধরণের ইতিবাচক কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকদের (এসিটি) প্রচেষ্টা যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে। এই কম্পোনেন্টে প্রায় ৫,২০০ এসিটি শিক্ষক দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুই হাজার মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
অপরদিকে, সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) প্রকল্পে রিসোর্স টিচার (আরটি) পদে ১ হাজার ৪৪৩ জন রয়েছে। গত বছর অস্থায়ী ভিত্তিতে এসব শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সেকায়েপ প্রকল্পটির মেয়াদ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষে গত ৮ মাস প্রায় ৫২০০ এসিটি পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমপিওভুক্তির দাবিতে এবছরের শুরু থেকে কয়েক দফা বাংলাদেশ এসিটি শিক্ষক অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ প্রকল্পের শিক্ষকরা ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন।
এদিকে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাক্সেস এনহ্যান্সমেন্ট (সেকায়েপ) প্রকল্পের শিক্ষকরা।
এ প্রকল্পের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ অতিরিক্ত শ্রেণিশিক্ষক অ্যাসোসিয়েশনের জলঢাকা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোকসেদুর রহমান সাগর বলেন, দেরিতে হলেও এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট।এ জন্য আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সংগঠনটির জলঢাকা উপজেলা প্রচার সম্পাদক মিসবাহ-উল হক বলেন, "যদিও গত আট মাস জিও এর কথা বলে আমাদেরকে বিনা বেতনে স্কুলে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অথচ সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে আগামী সাত কার্যদিবস অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার অনুরোধ করছি।
এদিকে জলঢাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, "আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শেষ করে সরকার এসব শিক্ষকের মানবেতর জীবনযাপনের অবসান ঘটাবেন।"

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 7774485844118027315

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item