কিশোরগঞ্জে চাকুরী দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

মোঃ শামীম হোসেন ,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী দেওয়ার নাম করে ২০ থেকে ৩০ জন  বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে। ঘঁটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা রণচন্ডি ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। ঘঁটনাটি জানাজানি হলে ওই প্রতারক বাড়িতে তালা লাগিয়ে স্বপরিবারে পালিয়ে গেছে।
অভিযোগ ও সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, রণচন্ডি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মোশফেকুর রহমান (৩০) নিজেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের অডিটর হিসেবে পরিচয় দিয়ে গ্রামের সহজ সরল বেকার যুবকদের  কাছ থেকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কম্পিউটার অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে চাকুরী দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার র্দীঘ দুই থেকে তিন বছর পেড়িয়ে গেলেও কোন চাকুরী প্রার্থীর চাকুরী না হওয়ায় চাকুরী প্রার্থীরা ওই প্রতারকের বাড়িতে টাকা ফেরতের দাবিতে চাপ অব্যাহত রাখলে সে স্বপরিবারে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
রণচন্ডি ইউনিয়নের বাফলা হাজিপাড়া গ্রামের কবিনুর ইসলাম বলেন, আমার গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে শফিউল ইসলাম জুয়েল  ওই প্রতারক মোশফেকুর রহমানের বন্ধু। জুয়েল আমাকে জানায়, ওই প্রতারক নাকি স্বাস্থ্য বিভাগের অডিটর সে আমার ছেলে নাহিদ হাসানকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী নিয়ে দেবে। তাই আমি ধানের জমি বন্ধক রেখে ওই প্রতারককে আমার ছেলের চাকুরীর জন্য তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তুু বর্তমানে চাকুরীতো দুরের কথা তাঁর দেখা মেলা ভার।
একই গ্রামের  হাবিবুর রহমানের ছেলে সাজু মিয়া  বলেন, ওই প্রতারকের খপ্পরে পরে আমি আমার শ্যালক সেলিম মিয়ার চাকুরীর জন্য মোশফেকুরকে গত দুই বছর আগে হালের বলদ ও ধান বিক্রি করে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কথা ছিল আমার শ্যালকের চাকুরী বাবদ তাঁকে মোট ৬ লাখ টাকা দিতে হবে। কিন্তু চাকরীতো দুরের কথা এখন টাকা উঠাতে না পারলে আমার বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।
রণচন্ডি ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত শাহ আলমের ছেলে নুরুজ্জামান বলেন, আমার ছেলে নুরু হোসেন নীলফামারী সরকারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অনেক কষ্ট করে আমি আমার ছেলেকে অর্নাসে ভর্তি করিয়েছি। আমি গরীব মানুষ মোশফেকুরের বাড়ি আমার বাড়ি একই জায়গায়। তাই ওকে বিশ্বাস করে আমার বাড়ি ভিটার ১০ শতক জমি বিক্রি করে তাঁকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু বর্তমানে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এরকম ভুক্তভোগী কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গদা গ্রামের বাদশা মিয়া, বড়ভিটা ইউনিয়নের দক্ষিন বড়ভিটা গ্রামের মশিয়ার রহমান, গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের আমজাদ হোসেনসহ অনেক বেকার যুবক চাকুরীর জন্য টাকা দিয়ে চাকুরী ও টাকা না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
রণচন্ডি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বিমান বলেন, মোশফেকুর রহমান গ্রামের অনেক বেকার যুবকের কাছ থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে।   এছাড়া গত পবিত্র ইদুল আযহার আগে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ রাতের বেলা মোশফেকুরকে ধরে নিয়ে গিয়ে আবার ছেড়েও দিয়েছে। কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ তাঁকে কেন নিয়ে গেল আবার ছেড়ে দিল তা আমার বোধগম্য নয়। কিন্তু বর্তমানে সে পলাতক।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মফিজুল হক বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। মোশফেকুরকে কেন আটক করেছিলেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ওসি হারুন অর রশিদ ইদের আগের দিন  সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় আমি দায়িত্বে আছি। 

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item