নীলফামারীতে বাস চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি ১৬ সেপ্টেম্বর॥ সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮ এর কিছু ধারা বাতিলের দাবিতে উত্তরাঞ্চলের  নীলফামারী  জেলা সহ তার পাশ্ববর্তী এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বেশ কিছু পরিবহন শ্রমিকরা। আজ রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নীলফামারী ১৯টি অভ্যন্তরীন রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা হতে ঢাকা,খুলনা চট্রগ্রাম,কুমিল্লা সহ দুরপাল্লার কোচগুলোও চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে, শ্রমিকদের বাস ধর্মঘটের বিষয়টি স্বীকার করলেও সরাসরি এর দ্বায় নিচ্ছেন না কোন শ্রমিক নেতারা।
নীলফামারী জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও রংপুর বিভাগের সভাপতি আখতার হোসেন বাদল বলেন, মোটর শ্রমিকের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজন জড়িত। সড়ক পরিবহন বিলের বিষয়টাকে পুঁজি  করে সরকার দলের বিপক্ষের শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকে নীলফামারী জেলার ১৯টি রুটের বাস চলাচল বন্ধ হলেও এর কোন ঘটনাই জানেনা মালিক কিংবা শ্রমিক নেতারা। তবে অভ্যন্তরীন রুটে বাস বন্ধ থাকলেও  বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিকে কোন ঘোষনা ছাড়াই আকষ্মিক বাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের।সাধারণ যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে অটোরিকশা বা স্বল্পপাল্লার যানবাহনে চলাচল করে দেখা যায়। এ রির্পোট লিখা পর্যন্ত বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জেলায় কোন বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু পরিবহন শ্রমিক নেতারা বলেন এই ধর্মঘট কতদিন বা কতক্ষন সময় ধরে অব্যাহত থাকবে তা এ মূহুর্তে বলা যাচ্ছেনা।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন বিল উত্থপান করা হয়। ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দিতে বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি গণপরিবহনে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। শ্রম আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান চুক্তি ছাড়া কাউকে কন্ডাক্টর নিয়োগও করতে পারবে না। গণপরিবহন পরিচালনায় সরকারি গেজেট দ্বারা প্রতিটি মহানগর, বিভাগ এবং জেলায় একটি করে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি গঠিত হবে। কমিটিতে পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক প্রতিনিধি থাকবেন। এ কমিটি রুট পারমিট দেবে।
বিলে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। চাঁদার অর্থ মোটরযান দুঘর্টনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ বা চিকিৎসা খরচ বাবদ দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এ জন্য সরকার কর্তৃক আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনায় একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হবে। সরকার ট্রাস্টির চেয়ারম্যান নিয়োগ করবে। এটি একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হবে। বিলে পরিবহন খাতের বীমাসহ সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।
বিলে অপরাধ, বিচার ও দন্ড অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্যানাল কোডের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৮৯-এ ভিন্ন কিছু না থাকলে, সাব ইন্সপেক্টর বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা আদলতে অবহিত করলে এ আইনের অধীনে সব অপরাধ আমলযোগ্য হবে। তবে আইনের ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধসমূহ ছাড়া অপর সব অপরাধ জামিনযোগ্য হবে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে এ আইনের ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৭, ৮৯ এবং ৯২ ধারায় বর্ণিত অপরাধসমূহ আপোষ মিমাংসা করতে পারবেন।
এ ছাড়া অপরাধসমূহ নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ব্যতীত পাবলিক প্লেসে মোটরযান চলাচলের জন্য অবৈধভাবে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না। করলে প্যানাল কোডের অধীন চাঁদাবাজির অপরাধ বলে গণ্য হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে আদালতের নির্দেশে মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স ১৮৮৩ বাতিল হয়ে গেলে আবশ্যকতা বিবেচনায় ২০১৩ সালের ৭নং আইন দ্বারা এটি কার্যকর রাখা হয়। পরে চাহিদা ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিতে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণীত হয়। আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে আইনে ১৪টি অধ্যায়ে ১২৬টি ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হন। পরের দিন থেকে রাজধানীর সড়কে অবস্থান করে বেপরোয়া বাস চালকের ফাঁসি, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালনা বন্ধসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। এরপর আইনটি চূড়ান্ত করে সাজা ও জরিমানা বাড়ানো হয়। এর আগেও আইনটি করার উদ্যোগ নেয়া হলেও রহস্যজনক কারণে তা সম্ভব হয়নি।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6461769122899254760

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item