কিশোরগঞ্জে ধর্ষনের চেষ্টার কথিত অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যা॥ উল্টো নিহত যুবকের বিরুদ্ধে মামলা॥

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ ॥
নীলফামারীর  কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়ডুমুরিয়া মালিপাড়া গ্রামে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত হওয়া তপন চন্দ্র বর্মন (২৮) নামের এক বিবাহিত কৃষক  চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সে মারা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃস্টি হলে পালিয়ে গেছে ওই যুবকের উপর হামলাকারী সহ কথিত ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগকারী গৃহবধু শঙ্করী রানী রায়।
অভিযোগ উঠেছে কথিত ঘটনা সাজিয়ে তপনকে একটি চক্র পিটিয়ে হত্যা করলেও কিশোরগঞ্জ থানা এ ঘটনায় মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। অপর দিকে ধর্ষনের চেষ্টার  অভিযোগে নিহত তপনের বিরুদ্ধে শঙ্করী রানী রায়ের মামলাটি গ্রহন করে পুলিশ।
শনিবার সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়,ওই গ্রামের মৃত সারদা বর্মনের ছেলে আর্দশ কৃষক তপন চন্দ্র রায় বর্মন। তার বেশ কিছু জায়গা জমি ও অর্থ রয়েছে। সে বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক। এলাকায় একটি চক্র রয়েছে তারা কথিত ঘটনা সাজিয়ে টাকাওয়ালা লোকদের ফাসিয়ে দিয়ে ফায়দা লুটে থাকে। এমন ঘটনার শিকার হয় তপন চন্দ্র বর্মন। ঘটনার দিন ১৪ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে একই এলাকার কেশব চন্দ্র রায়ের স্ত্রী শঙ্করী রানী রায়  জরুরী কথা আছে বলে তপন রায়কে মোবাইলে  তার বাড়িতে ডেকে নেয়। সরল মনে তপন  তার বাড়িতে গেলে কেশবচন্দ্র রায় তার স্ত্রী শঙ্করী রানী রায় কে ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগ তোলে তপনের বিরুদ্ধে। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা  মাফিক তারা তপনকে আটক করে  টাকা দাবি করে। তপন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধরক মারপিট করা হয়। এসময় কেশব ও  স্ত্রী  তপনের  গলায় গামছা পেচিয়ে টানা হেচরা শুরু করলে এক পর্যায় তপন জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হামলাকারীরা তপনকে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তপনের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তারত করে। হামলাকারীরাই তপনকে অজ্ঞান অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। অবস্থা বেগতিক দেখে ঘটনার পরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর  কেশবচন্দ্র রায় তার স্ত্রী শঙ্করী রানী রায়কে দিয়ে ধর্ষনের চেস্টা অভিযোগ এনে অজ্ঞান থাকা তপনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে (মামলা নম্বর ১১)।
 অপর দিকে  আহত তপনের জ্ঞান ফিরে না আসায় ঘটনার ৬ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে তপন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। রংপুর কোতয়ারী থানা পুলিশ পরদিন শুক্রবার তপনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। তপন মারা যাওয়ার খবরে ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগকারী শঙ্করী রানী তার স্বামী কেশব চন্দ্র তাদের পরিবারের কৃষ্ণচন্দ্র,  ঘনি চন্দ্র, অন্নদাস রায়, পুলিন চন্দ্র সুনিল চন্দ্র, দুলাল চন্দ্র , রতন রায় ও বড়ভিটা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহেষ চন্দ্র সহ আরো অনেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এ দিকে ঘটানাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে স্বামী তপনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ নিয়ে শনিবার তপনের স্ত্রী মালতী রানী রায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ তার মামলা গ্রহন করেনি।বিষয়টি মালতিরানী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানায়।
 এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার ওসি হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে রংপুরে একটি অপমৃত্যুর মামলা ও মরদেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন নিহত তপনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগে মামলা করেছে শঙ্করী রানী নামের এক গৃহবধু। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।  

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 8512395947056590282

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item