সৈয়দপুরে এক ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে তিনটি চোরাই গরু উদ্ধার ॥

 তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: 

নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের (মেম্বার) বাড়ি থেকে তিনটি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়েছে। আজ(শুক্রবার) সকালে উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ড (মেম্বার) মো. আতাউর রহমানের বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া ওই  গরুগুলো উদ্ধার হয়। চুরির যাওয়া গরু উদ্ধারের খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জব্দ তালিকা করে সে সব গরু মালিকের হেফাজতে দেয়। তবে চোরাই গরু উদ্ধার হওয়া বাড়ির মালিক ইউপি সদস্য অধরাই থেকে গেছেন। এ ঘটনাটি নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব অসুরখাই গ্রামের বাসিন্দা মো. মোজাম্মেল হক মোজার বাড়ি থেকে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে তিন গর্ভবতী গাভী চুরি যায়। চোরের দল গৃহকর্তার  বাড়ির গোয়াল ঘরের দরজা তালা ভেঙ্গে গরুগুলো নিয়ে যায়। চুরি যাওয়া গরু মধ্যে একটি গৃহকর্তা মোজার এবং অপর দুইটি তাঁর ছেলে রুবেল হোসেনের।  চুরি যাওয়া গরুর মূল্য আনুমানিক দুই লক্ষাধিক টাকা । রাতেই গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে গরুর মালিক আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুজি শুরু করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে  মোজামের পুত্রবধূ এ্যামিলি তাঁর হারিয়ে যাওয়া  গরুর খোঁজে পাশের আইসঢাল নিজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমানে বাড়িতে যান। আতাউর রহমান একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। গৃহবধূ এ্যামিলি বলেন, ইউপি সদস্যের বাড়িতে ঢুকতে তিনি প্রথমে একটি কৌশল অবলম্বন করেন। তাঁর গৃহপালিত হাঁস হারিয়ে গেছে এবং তার খোঁজে তিনি ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে  তাঁর  গরুর খামারে ঢুকতে চাইলে প্রথমে তাকে বাঁধা দেওয়া হয়। তারপরও তিনি জোর করে ইউপি সদস্য আতাউর রহমানের গরু খামারে ঢুকে তাঁর চুরি যাওয়া গরু দেখতে পান। এ সময় গরুগুলোও গৃহবধূ এ্যামিলিকে দেখে ডাক-চিৎকার করতে থাকে।  আর এতেই ইউপি সদস্যের স্ত্রী মোছা. কুলসুম ক্ষিপ্ত হয়ে গরুর মালিকের পুত্রবধূ এ্যামিলিকে এলোপাতাড়ি বেদম মারপিট করে সেখান থেকে বের করে। এ্যামিলি আরো জানান, গরুর গলায় আগে লাগানো দঁড়ি (রশি) বদলে গলায় নতুন করে দড়ি লাগানো হয়। এছাড়াও গরুগুলো নতুন জায়গায় থাকার কারণে যাতে চিৎকার চেঁচামেচি করতে না পারে সে জন্য গোমা (দড়ি দিয়ে তৈরি গরু মুখ বেঁধে রাখা হয়)  দিয়ে তাদের মুখ বেঁধে রাখা হয়েছিল।
 এ দিকে গৃহবধূকে মারপিটে  খবর পেয়ে  চুরি যাওয়া গরু মালিকের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সেখানে আরো উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পরে খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জামিল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার হওয়ার গরু জব্দ তালিকা তৈরি করেন। পরে  সেখানে উদ্ধার হওয়া গরু তার মালিকের হেফাজতে দেওয়া হয়।
 এ নিয়ে কথা হলে কামারপুকুর ইউনিয়নের (ইউপি) নয় নম্বর ওয়ার্ড সদস্য  মো. আতাউর রহমান জানান, ভোর রাতে তাঁর বাড়ি পেছনে গরুগুলো দেখতে পেয়ে জনৈক সাত্তার তাকে অবহিত করেন। পরে তিনি সে সব একটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে বেঁধে রাখেন। তাঁর বাড়ি থেকে চোরাই গরু উদ্ধারের কথা অস্বীকার করেন তিনি (ইউপি সদস্য)। তিনি আরো জানান, সকালে মুঠোফোনে আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান এলে পুলিশের উপস্থিতিতে লিখিতভাবে গরুগুলো মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান বলেন ইউপি সদস্য আতাউর রহমান সকালে ফোনে তাকে ঘটনাটি জানান। পরে তিনি ঘটনাস্থলে এলে পুলিশ তাঁর উপিস্থিতিতে উদ্ধার হওয়ার গরুগুলো মালিককে হস্তান্তর করা করেন।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহজাহান পাশা  কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল নিজবাড়ি থেকে তিনটি চোরাই গরু উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গরুর মালিক চুরি যাওয়া গরু পেয়ে কোন অভিযোগ না করায় থানায় কোন মামলা হয়নি।
 এ নিয়ে কথা হলে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চুরি যাওয়া গরুর মালিক এবং যে বাড়ি থেকে গরুগুলো উদ্ধার হয় তাঁর মালিক ইউপি সদস্যকে থানা ডাকা হয়েছে। সন্ধ্যায় এ বিষয়ে তাদের মুখে আমি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানব।                                

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7040374981741030760

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item