সৈয়দপুরের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের লাশ বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদী থেকে উদ্ধার-গ্রেপ্তার - ২

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

নীলফামারীর সৈয়দপুরের এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের লাশ বদরগঞ্জের যমুনেশ্বরী নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) দুপুর দেড়টায় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার ১২ নম্বর কুতুবপুর ইউনিয়নের যমুনেশ্বরী নদীর নাগেরহাট ব্রীজের কাছ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তাঁর নাম সুমন হোসেন (২২)। তাকে শনিবার রাতে তাঁর দুই বন্ধু টাইগার এনার্জি ড্রিংক্স’র সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে অবচেতন করে। পরে তাকে সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে সিপাইগঞ্জ কুঠিরঘাট ব্রীজের কাছে চওড়া নদীতে ফেলে দিয়ে তার ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত তাঁর দুই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে সৈয়দপুর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
 পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী সমলাপাড়ার মো. বকুলের ছেলে সুমন ইসলাম। সে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবন নির্বাহ করে আসছিল। আর তাঁর দুই বন্ধু একই ইউনিয়নের বুড়িরবাজার মাল্লির পাড়ের মৃত. জয়বার উদ্দিনের ছেলে রবিউল (২৫) এবং একই উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম বেলপুকুর ঠকপাড়া আব্দুল হামিদের ছেলে আনারুল (২০)। ঘটনার দিন গত শনিবার (৩০ জুন)  সন্ধ্যায় রবিউল ও আনারুল দুইজন মিলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাটি চালক সুমনের অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে কৌশলে তাকে টাইগার এনার্জি ড্রিংক্স’র সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ায়। এতে করে সে অবচেতন হয়ে পড়লে তাকে ওই অটোরিকশা করে নিয়ে গিয়ে সিপাইগঞ্জ বাজারের কাছে চওড়ার নদীর কুঠিরঘাট ব্রীজ এলাকায় নিয়ে যায়। তারা সেখানে অবচেতন সুমনকে চওড়া নদীতে ফেলে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে সটকে পড়ে। পরে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি নিয়ে রবিউল ও আনারুল ঠাকুরগাঁও যাওয়ার পথে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।  পরে সেখানে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা অটোরিকশার চালক সুমনকে মেরে নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সুমনের পরিবারের লোকজনসহ গ্রামবাসী চওড়া নদী কঠিরঘাট ব্রীজের এলাকায় এসে সুমনের লাশের খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পরও লাশটির কোন খোঁজ মেলেনি। এরপর গতকাল (সোমবার) সকালে রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল এসে চওড়া নদীতে নেমে সুমনের লাশের খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু পরে তারাও সুমনের হদিস করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন।
পরবর্তীতে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট ব্রীজের কাছে যমুনেশ্বরী নদীতে একটি লাশ ভেসে যাওয়া দেখেন লোকজন। পরে খবর পেয়ে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্যের স্বামী মো. রফিকুল ইসলাম সেখানে গিয়ে এক জেলের মাধ্যমে লাশটি নদীর কিনারে নিয়ে আটক করেন। এরপর সংবাদ পেয়ে বদরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রবিউল ইসলাম সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
 যমুনেশ্বরী নদীর নাগের হাট ব্রীজের কাছ থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করেন বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেন লাশের ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, ব্যাটারি অটোরিকশা চালক সুমন হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত রবিউল ও আনারুল তাদের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে। 
এদিকে, গতকাল সোমবার দুুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক সুমনের বাড়িতে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন। তার পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে গোটা শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত সুমনের স্ত্রী ও তিন মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এ সময় তাঁর স্ত্রী মিষ্টি  কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন এখন আমার কি হবে ? আমার সংসার কে চালাবে ? এ সময় তাঁর আর্তনাতে সেখানে উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন নি। 

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 1071218601536277575

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item