আপডেট-সৈয়দপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের পরিচয় নিশ্চিত ॥

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

সৈয়দপুরে এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৯ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।সৈয়দপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা হলেন নীলফামারী সদরের চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের আরাজি দলুয়া তল্লিবাড়ির মো. আব্দুল হান্নানের ছেলে ময়নুল (২০), নতিবাড়ী কাঞ্চনপাড়ার মো. আনারুলের ছেলে রাব্বি (১৪), একই এলাকার হাফেজুল ইসলামের ছেলে মাজেদুল ইসলাম (১৫), একই এলাকার মো. মকবুলের ছেলে রুবেল (২৫), একই এলাকার আবিয়ার আলী ছেলে খায়রুল ইসলাম (২৫) এবং কিসামত দোগাছী গ্রামের মাহাবুবুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান (২০), আরাজি দলুয়ার  মো. কবেদ আলীর ছেলে শামীম (১৬), একই এলাকার আব্দুল রশিদের ছেলে ডালিম (১৮), ধোপাডাঙ্গা জোড়াপাখুরীর সুবাস চন্দ্র রায়ের ছেলে বিধান চন্দ্র রায় (১৮)। গুরুতর আহত ৬ জনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া সম্ভব হয়নি। আর আহতদের মধ্যে ৪ জন সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হচ্ছে নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে শিপন (২২), চওড়া বড়গাছা নতিবাড়ী কাঞ্চনপাড়ার আজিজার রহমানের ছেলে দেবীগঞ্জ দেবিডুবা ডাঙ্গাপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ছাত্র আবু মুসা (১৭), একই এলাকার মো. আবু সায়েদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২০) ও একই এলাকার এরশাদুল (২০)। আহতদের সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ও রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। গতকাল রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে ১০ টায় সৈয়দপুর- নীলফামারী বাইপাস সড়কে ধলাগাছ মোড়ের কাছে আহ্মেদ প্লাইউড কারখানার ইউনিট- ২ এর সামনে এ দূর্ঘটনাটি ঘটেছে।
 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের পরদিন গত রবিবার (১৭ জুন) নীলফামারী সদরের চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের নতিবাড়ী কাঞ্চনপাড়া ও আশপাশের এলাকার ২৭/২৮ জনের একদল যুবক একটি পিকআপ ভ্যান ভাড়া করেন। তারা ঈদের আনন্দ  উপভোগ করতে ওই পিকআপ ভ্যানে (নম্বর: নীলফামারী-ন-১১-০০০৭) দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার স্বপ্নপুরীতে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে তারা ওই পিকআপ ভ্যানেই চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের নতিবাড়ী কাঞ্চনপাড়ার বাড়িতে ফিরছিল। ওই যুবকদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি রাত আনুমানিক পৌণে ১০ টার দিকে রংপুর-দিনাজপুর বাইপাস সড়কের নাড়িয়ার খাম্মা এলাকায় আহ্মেদ প্লাইউড কারখানার সামনে পৌঁছে। এ সময় পিছন থেকে একটি দ্রুতগামী নৈশ কোচ পিকআপটিকে পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা দিলে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এতে নৈশকোচের ধাক্কায় পিকআপটির বডি পেছনের ডানদিকের অংশ দুমড়ে মুচড়ে একটি ডালা (অংশ) খুলে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে ৮ জন যুবক নিহত হয়। এছাড়াও সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সরাসরি নীলফামারী থানায় নেয়া হয়েছে। দূর্ঘটনার পর পরই সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাজাহান পাশা’র নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার বাসিন্দা ডা. সুরত আলী বাবু জানান,এ সময় তিনি বাড়ির সামনে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। আর ওই সময় বেপরোয়া গতির পিকআপ ভ্যানে থাকা সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজছিল এবং যুবকরা নেচে গেয়ে হাসি উল্লাস করছিলেন। ওই পিকআপ ভ্যানের পিছনের গাড়িগুলো সাইডের জন্য বার বার হর্ণ দিলে তা পাচ্ছিল না। আর সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো কারণে পিকআপ ভ্যানের চালক পিছনের কিছুই শুনতে পারছিলেন না। মূলতঃ এতে করে দূর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এদিকে, দূর্ঘটানর খবর পেয়েই স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. শওকত চৌধুরী, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার, নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বজলুর রশীদ, সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল দূর্ঘটনাস্থল ছুঁটে আসেন। সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
দূর্ঘটনার খবর শুনে সৈয়দপুর শহর ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলো থেকে শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ও সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এসে ভীড় করেন।
প্রসঙ্গত, এর কয়েক বছর আগেও মিনিবাস ও ট্রাকের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে একই স্থানে সড়ক দূর্ঘটনায় ৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছিল।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3619745413463764911

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item