সৈয়দপুরে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ॥ শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন করে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান

তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

 নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পূর্নবহালের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ প্রদর্শন, সড়ক অবরোধ ও ইউএনও বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার শহরের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীনতম সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ওইসব কর্মসূচি পালন করেছে। এছাড়াও একই দাবিতে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা ইউএনও বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক এস, এম শফিউল আজম। তাঁর বিরুদ্ধে অল্প সময়ে ক্লাস শেষ, শ্রেণী কক্ষে পড়া পারলেও শিক্ষার্থীদের মারপিট, ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়াসহ যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়। বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ‘ক’ শাখার ২৫জন ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে প্রথমে তাকে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগে গত ২১ মার্চ একটি কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে বলা হয়। ওই শিক্ষক গত ২৮ মার্চ যথারীতি কারণ দর্শানো নোটিশের  জবাব দেন। এ অবস্থায় গত  ৬ মে থেকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব সন্তোষজনক নয় মর্মে বিদ্যালয়ের ওই সহকারি শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর চাকুরীর বিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করেন। গত ৫ মে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত সাময়িক বরখাস্তাদেশ দেয়া হয়।
এদিকে, ছাত্রছাত্রীরা গত রবিবার (৬ মে) বিদ্যালয়ে এসে তাদের  সিনিয়র সহকারি শিক্ষক শফিউল আজমের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানতে পেয়ে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। পরদিন গেল সোমবার বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ করে তাদের শিক্ষককে পুর্নবহালের দাবি জানান। এ সময় তারা তাদের প্রিয় শিক্ষক শফিউল আজমের সাময়িক বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহারে দাবিতে বিভিন্ন ম্লোগান দেয়।
এ অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবারও ছাত্রছাত্রীরা আবারও বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস বর্জন করে। পরে তারা বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় ওই সড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। পরবর্তীতে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সৈয়দপুর শহর প্রদক্ষিণ করে এবং সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের তাদের শিক্ষক শফিউল আজমের সাময়িক রবখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে তাকে পুর্নবহালের দাবিতে ইউএনও বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপিটি গ্রহন করে তাদের কথাবার্তা শোনেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন।
এদিকে, সহকারি শিক্ষক শফিউল আজমের সাময়িক বরখাস্ত  আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরাও গতকালই ই্উএনও বরাবরে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এ নিয়ে কথা হলে সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ওই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে  বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে অল্প সময়ে ক্লাস শেষ করা, পড়া পারলেও শিক্ষার্থীদের মারপিট, ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয়াসহ নানা রকম যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে ৭ম শ্রেণীর ক শাখার ছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ করে। তাই তাকে পেশাগত অসদাচরণের কারণে যথাযথ নিয়মকানুন মেনে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 4628439260101452233

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item