ব্রাহামার ৩য় প্রজন্মের বাছুর উৎপাদন ও সংরক্ষনে দেশের মধ্যে প্রথম পীরগঞ্জ!

মামুনুর রশিদ মেরাজুল,পীরগঞ্জ থেকে ঃ
দেশের মধ্যে প্রথম ব্রাহামা জাতের ৩য় প্রজন্মের বাছুর উৎপাদন ও সংরক্ষণ করেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর। ইতিপুর্বেও ব্রাহামা জাতের ১ম ও ২য় প্রজন্মের বাছুর উৎপাদনে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর শ্রেষ্ঠ স্থানে ছিল। ব্রাহামা জাতের গরু বিদেশী এবং মাংসল গবাদিপশু হিসেবে পরিচিত।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দেশে টেকসই এবং মাংস জাতের গবাদিপ্রাণির উন্নয়ন, মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি, আমিষের চাহিদা পূরণ, আত্মকর্ম সংস্থানের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান, গরু মোটাতাজাকরণ কার্যক্রমকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আমেরিকা থেকে ব্রাহামা জাতের গরুর বীজ নিয়ে আসে। বিগত ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে মন্ত্রনালয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে পীরগঞ্জসহ দেশের ১১টি উপজেলায় বীফ ব্রীড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ (১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ওই বীজ আনে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের  ১২৫টি উপজেলায় ‘বীফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ নামে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রকল্পটি চালু করা হয়। পীরগঞ্জে প্রকল্পের ১ম ও ২য় পর্যায়ে ষাড় বাছুর ১০৯ টি এবং বকনা বাছুর ২১৭ টি উৎপাদন হয়েছে। ১ম পর্যায়ের ষাড়ের দৈনিক ওজন বৃদ্ধি সাড়ে ৭’শ থেকে ৮’শ গ্রাম, বকনার দৈনিক ওজন বৃদ্ধি সাড়ে ৬’শ গ্রাম। আর ২য় পর্যায়ের ২০ মাস বয়সের একটি ষাড়ের ওজন ৬’শ ৫০ কেজি। যার দৈনিক ওজন বৃদ্ধি ১ হাজার ৪০ গ্রাম।
সুত্র আরও জানায়, দেশীয় জাতের গাভীকে ব্রাহামা’র বীজ দিয়ে বাছুর উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত বকনা বাছুরের মধ্যে আবারো বিদেশী ব্রাহামা বীজ দিয়ে ২য় পর্যায়ের বকনা বা ষাড় বাছুর হয়। এরপর দেশীয় ব্রাহামা ষাড়ের বীজ দেশীয় ব্রাহামা বকনার মাঝে দিয়ে উৎপাদিত হয়েছে ৩য় প্রজন্মের ব্রাহামা বাছুর। আর এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে এই প্রথম রংপুরের পীরগঞ্জে ব্রাহামার ৩য় প্রজন্মের ৩টি বাছুর জন্ম হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুবরাজপুর গ্রামের কলেজ শিক্ষক মেজবাহুর ইসলামের বাড়ীতে গত ৭ মে ব্রাহামা জাতের গরুর ৩য় প্রজন্মের বাছুর উৎপাদন হয়েছে। বিগত ২০১০ সাল থেকে তিনি এ পর্যন্ত একটি গাভী থেকে তিনি ৮টি ব্রাহামা জাতের গরু উৎপাদন করায় দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্রাহামা উৎপাদনকারী ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে মেজবাহুর বলেন, ব্রাহামা জাতের গরু পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছি। সাধারন রোগ ব্যাধি ছাড়া কোন প্রকার সংক্রমক কিংবা জটিল রোগে আক্রান্ত হয় না। উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদার রহমান সরকার বলেন, ব্রাহামা জাতের গরু শুধু মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি, আমিষের চাহিদা পূরণই নয়, স্বল্প সময়ে পূঁজি গঠন করে একজন লোককে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারে। আমরা ব্রাহামা বাছুর উৎপাদনের পাশাপাশি সংরক্ষনও করেছি। বীফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’র প্রকল্প পরিচালক এএসএম সামাদ বলেন, ব্রাহামা জাতের গরু মাংসল জাতের গবাদিপশু। আমেরিকা থেকে ব্রাহামার বীজ এনে দেশীয় জাতের গাভীর মাধ্যমে বাছুর উৎপাদন করা হচ্ছে। এভাবে দেশের মাংসের চাহিদা ও আমিষের ঘাটতি পুরন এবং বিদেশে মাংস রপ্তানির লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। তিনি আরও জানান, ৩য় প্রজন্মের ব্রাহামা উৎপাদনের লক্ষ্যে ১ লাখ ব্রাহামা গাভীকে বীজ দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ২৪ মাস থেকে ৩০ মাস পর্যন্ত প্রতিটি ব্রাহামা গরুর ওজন ১ হাজার কেটি পর্যন্ত হতে পারে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 1271900585296706222

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item