পঞ্চগড়ে শতবর্ষী মায়ের স্থান হলো ময়লার স্তূপে; প্রশাসনের তৎপরতায় জায়গা হল বাড়ীতে”

সাইদুজ্জামান রেজা, পঞ্চগড়:

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বৃদ্ধা মা বয়সের ভারে চলতে ফিরতে পারছেন না, একই স্থানে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো এবং মলত্যাগ তাই বৌ আতিমার কথায় ময়লার স্তুপে মাকে ফেলে দেয় নিজের একমাত্র গর্ভধারী সন্তান নিজামদ্দীন। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে শুক্রবার (২৬ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ভজনপুর নিজবাড়ি গ্রামে দ্রুত ছুটে যান তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানিউল ফেরদৌস, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম, দেবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন আলীসহ ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এমন অমানবিক ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীকে আইনের আওতায় নেওয়ার আগে এলাকাবাসীর অনুরোধে প্রথমবারের মত তাদের ছেড়ে দেন। এবং বৃদ্ধা নেজামনকে বাড়ির একটি কক্ষে জায়গা করে দেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই বৃদ্ধার জন্য সুকনো খাবার, পরণের বস্ত্র, তেল-চাল-ডালসহ নানা সামগ্রী তুলে দেন। এবং একই সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার পরিবারকে আগামী রবিবারের মধ্যে একটি ঘর নির্মাণের জন্য টিন ও অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রতি দেন। নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের জানান, ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি প্লটে জমি দেওয়া হলে সরকারি বরাদ্দে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এবং দ্রুত অসুস্থ বৃদ্ধা মহিলাটিকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরামর্শ দেন। উল্লেখ্য, বৃদ্ধা মা বয়সের ভারে চলতে ফিরতে পারেন না, এক স্থানে খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো এবং মলত্যাগ তাই তার স্থান হলো ময়লার স্তূপে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় শতবর্ষী এক বৃদ্ধা মাকে একমাত্র গর্ভধারী সন্তান বাড়ি থেকে বের করে পুকুর পাড়ে ময়়লার স্তূপে ফেলে দিয়েছেন। শুক্রবার (২৫ মে) সন্ধায় তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ভজনপুর নিজবাড়ি গ্রামে দেখা মিলে অমানবিক একটি দৃশ্য। দেখা যায় বাড়ি থেকে ১৫ গজ দূরে ছোট ছালার কুটির ভিতরে আকুতি আর আহাজারি করছেন শতবর্ষী বৃদ্ধা নেজামন। স্বামী মৃত সেকেত আলী। তার একমাত্র সন্তান নিজামদ্দীন (নাজিম)। নিজামদ্দীনের পাকা দালান বাড়ির ৫টি রুম। সেখান থেকে ১৫ গজ দূরে ঝড়-বৃষ্টি আর মশার কামড় খেয়ে, না খেয়ে সন্তানের চোখের সামনে দিনের পর দিন মৃত্যুর প্রহর গুণছেন নেজামন। গায়ে জ্বর, চোখেও দেখতে পান না। শুধু মাত্র কয়েকটি কাঠের তক্তার উপর একটি বস্ত্র বিছিয়ে কোন মতে ঠেসদিয়ে শুয়ে রয়েছেন। মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে কান্না আর আহাজারীতে বার বার বলছেন আমার আর এই কষ্ট সজ্য হয় না। প্রতিবেশী মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছলিমদ্দীনের স্ত্রী শাহারা খাতুন সেই বৃদ্ধার কিছুটা দেখভাল করছেন। মায়ের এক ধার দুধের দাম, কাটিয়া গায়ের চাম, পাপস বানাইলেও ঋণ শোধ হবে না। অথচ শতবর্ষী অসুস্থ এক গর্ভধারীণীর ঋণ তার ছেলে ও ছেলে-বৌ শোধ করছে তাকে পুকুর পারে ময়লার স্তুপে ফেলে দিয়ে। আর চিকিৎসা তো দূরের কথা যে মা ১০ মাস সন্তানকে গর্ভে ধরেছেন, স্তন্য পান করিয়ে বড় করেছেন, সন্তানের সুখের জন্য নিজের সব সুখ বিসর্জন দিয়েছেন- তার এমন দুর্দশার চিত্র দেখা গেছে তেঁতুলিয়ায়। বাড়ির পাশে পুকুর পারে ময়লার স্তুপে পড়ে থাকা বৃদ্ধার কান্না-কাটি আর আকুতি। এলাকাবাসী বৃদ্ধার এমন দূর অবস্থা দেখে সন্তানের বাড়ির পাশে সেই পুকুর পারের ময়লার স্তুপে পলিথিন আর ছেড়া বস্তা দিয়ে এক ছোট ছালা তৈরি করে দেয়। এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাষক জহুরুল হক প্রতিবেদক কে জানান, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক ও দুঃখজনক। আমি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউএনওর সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 5481184529624687867

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item