কাল বৈশাখী ঝড়ে নিজের বোরো ধানক্ষেত বিনস্ট দেখে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো কৃষক জ্যোতিন্দ্রনাথ

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১১মে॥
কাল বৈশাখী ঝড়ে জমির উঠতি বোরো ধান সর্ম্পুণ বিনস্ট হবার দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে কৃষক জ্যোতিন্দ্রনাথ রায় (৬৫)।
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে আজ শুক্রবার সকালে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের সাতজান গ্রামে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই কৃষকের বাড়িতে শতশত মানুষজন ভীড় করে শোকে কাঁতর হয়ে পড়ে। এ ছাড়া ব্যাপকভাবে উঠতি বোরো ধানের ক্ষতি হওয়ায় অন্যান্য কৃষকদের মাঝে চলছে আহাজারী। জ্যোতিন্দ্রনাথ ওই গ্রামের মৃত দোমাসুনাথের ছেলে ছিলেন।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় কৃষক জ্যোতিন্দ্রনাথ রায়ের দুই ছেলে কাশিরাম নাথ(৪৭) ও মধুরাম নাথ (৪০) জানায়, তারা এবার বোরো মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে ব্রী-২৮ জাতের বোরো ধান আবাদ করেছিল। আবাদও হয় সুন্দর। আগামী দুই দিনের মধ্যে ওই ধান কেটে ঘরে তোলার কথা ছিল।
কিন্তু তার আগেই সব লন্ডভন্ড হয়ে গেলে।
ছোট ছেলে মধুরাম নাথ কান্না বিজরিত কন্ঠে বলেন, বৃহস্পতিবার (১০ মে) বিকালে বাবা সহ আমি গ্রামের লক্ষ্মীরবাজারে খরচ করতে যাই। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসি বাবা সহ। রাত ৯টার দিকে শুরু হয় প্রচন্ডবেগে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃস্টি। কারেন্ট (বিদ্যুৎ) চলে গেলে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে পড়ে। ঝড়ে গাছপালা ভেঙ্গে পড়তে থাকে। রাতে আর আমরা ঘর হতে বাহিরে কেউ বের হইনি। শুক্রবার ভোরে আমরা বাড়ি হতে বের হয়ে ধান ক্ষেতে যাই। ধান ক্ষেত দেখে আমরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি। সব ধান মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে ঝরে গেছে। জমিতে ধানের গাছগুলো পানির নিজে তলিয়ে যায়। বাবা এই দৃশ্য দেখে সহ্য করতে না পেরে প্রথমে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান। তাকে সেখান হতে বাড়িতে এনে ঘরের বারান্দায় পাটি বিছিয়ে শুয়ে দিয়ে মাথায় জল (পানি) ঢালি।
কৃষক জ্যোতিন্দ্রনাথ রায়ের বড় ছেলে কাশিরাম নাথের স্ত্রী মেঘরানী নাথ বলেন, আমার শ্বশুড় একবার চোখ খুলে একটু জল খেতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি জল খেতে পারেননি। জল খাওয়ার আগেই সকাল ৭টার দিকে শ্বশুড় মারা যায়।
নাউতারা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, জ্যোতিন্দ্রনাথ রায়ের পরিবারটি আর্দশ কৃষক। তারা খুব পরিশ্রমি। ধান ক্ষেত নস্ট দেখে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে আমরা ধারনা করছি। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে নিজেই ছুটে যাই। দুপুরে তার মরদেহ স্থানীয় শ্বশ্মনে দাহ করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও জানান আর্দশ কৃষক জ্যোতিন্দ্রনাথের স্ত্রী কুমদিনী নাথ ১০ বছর আগে রোগে আক্রান্ত হয়ে ও   তার এক মাত্র মেয়ে বাচ্চাই রানী নাথ গত ৫ বছর আগে সন্তান জন্ম দেয়ার সময় মারা
যায়। এখন তার দুই ছেলে নাতী নাতনী রয়েছে। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4338909325114148323

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item